আশিক রহমান : চীন আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র। তারা আমাদের উন্নয়ন সহযোগী। অনেক বিনিয়োগ তারা এখানে করেছে। আমাদের ধারণা ছিল, রোহিঙ্গা সংকটের গুরুত্ব চীন উপলব্ধি করছে। কিন্তু এই বন্ধু রাষ্ট্রটির এখনকার ভূমিকা বা মুভমেন্ট সন্দেহ তৈরি করছে। রহস্যজনক বলেও মনে হয়। চীনকে মনে রাখতে হবে, শুধু মিয়ানমারের সঙ্গে বন্ধুত্ব রক্ষা করে এ অঞ্চলে ভূ-রাজনৈতিক লক্ষ্য তাদের অর্জিত সম্ভব নয়। আমাদের অর্থনীতিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেছেন নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক মে. জে. এ কে মোহাম্মদ আলী শিকদার (অব.)।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা এখন আর বাংলাদেশ-মিয়ানমারের সমস্যা নয়, এটা এখন আন্তর্জাতিক সমস্যা। এমন একটি জাতিগত নিধন পৃথিবীর কোনো রাষ্ট্র চালাতে পারে না। মিয়ানমার সেখানে গণহত্যা ও জাতিগত নিধনযজ্ঞ চালিয়েছে, এটা সারা দুনিয়াই বলছে। সমস্যাটা আন্তর্জাতিক হলেও মিয়ানমারের পরিকল্পনা, রোহিঙ্গাদের তাদের ভূমি থেকে বিতাড়িত করে সেখানে আর ফিরতে দেবে না। এমনটি মনে হচ্ছে মিয়ানমারের কর্মকা- ও মনোভাবে। এমন চিন্তা-ভাবনা থেকেই মিয়ানমার তার সমস্ত কার্যক্রম চালাচ্ছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার জন্যই তারা সময় ক্ষেপণ ও তালবাহানা করছে। রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে মিয়ানমারের কোনোরকম আন্তরিকতা এখানে নেই। যদিও প্রায় দশ-এগারো লাখ রোহিঙ্গা এখন বাংলাদেশে। তারা এখন বাংলাদেশের উপর প্রবল চাপ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। সেটা অর্থনৈতিক, সামাজিক ও নিরাপত্তাগত চাপ।
তিনি আরও বলেন, চীন এখানে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্ট। সমস্যা সমাধানে চীনকে ভূমিকা রাখতে হবে। কিন্তু চীনের ভূমিকা এখানে রহস্যজনক। চীনকে মনে রাখতে হবে যে কারণে মিয়ানমারের বন্ধুত্ব তাদের দরকার ঠিক একই কারণে বাংলাদেশের সঙ্গেও তাদের সৌহার্দ্যপূর্ণ বন্ধুত্ব প্রয়োজন। বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বের জায়গাটি যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় কোনো কারণে এ দেশের মানুষ যদি মনে করে চীন রোহিঙ্গা সংকটের অন্তরায়, মানুষের মতামত যদি তাদের বিরুদ্ধে চলে যায় তাহলে চীনের লক্ষ্য অর্জিত হবে না। চীনকে তা বুঝতে হবে। এবং সে অনুযায়ী তাদের পদক্ষেপ হওয়া উচিত বলেও মনে করেন এই বিশ্লেষক।