শিরোনাম
◈ অবশেষে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করলো-বিসিবি ◈ আজ ঘরে ফিরবেন এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিক ◈ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের কনডেম সেল নিয়ে  রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে রাষ্ট্রপক্ষ ◈ নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন বিএনপি নেতা আলাল ◈ মার্কিন স্যাংশন-ভিসানীতি কেয়ার করি না: কাদের ◈ ঢাকায় মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ◈ মধ্য গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ১৪ ◈ অন্যকে দিয়ে সাজা খাটানো সেই যুবলীগ নেতা নাজমুল কারাগারে ◈ দলীয় বিভাজন ভুলে রাজনৈতিক দলগুলোকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান মির্জা ফখরুলের ◈ শহীদ মিনারে হায়দার আকবর খান রনোকে গার্ড অব অনার, সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন

প্রকাশিত : ২৯ মার্চ, ২০১৮, ০৪:০২ সকাল
আপডেট : ২৯ মার্চ, ২০১৮, ০৪:০২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

একজন ডাক্তার বসন্ত রায় : যার ফি ৪০ টাকা এবং ওষুধ বিনামূল্যে

মোবায়েদুর রহমান : আমাদের দেশে বিত্তবান অনেকেই আছেন। সামিট গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপের সালমান এফ রহমান, স্কয়ার গ্রুপ, ড. ইউনুস সহ অনেক বিত্তবান আছেন যাদের ধন সম্পদের পরিমাণ হাজার কোটি টাকারও অনেক বেশি। কিন্তু এদের কাউকে তাদের ধন সম্পদের অংশ দেশের ভাগ্যহত বঞ্চিত দরিদ্র শ্রেণী বা দুর্গত মানবতার সেবায় উৎসর্গ করতে দেখা যায়নি। বরং মানুষকে শুষে লুটে পুটে তাদের অর্থ ভান্ডার বাড়িয়ে চলেছেন। চিকিৎসা খাতে বড় বড় ডাক্তাররা তাদের ফি এবং অপারেশন ও অন্যান্য সার্ভিসের নামে দিনের পর দিন চার্জ বাড়িয়েই চলেছেন। মেডিসিন, অর্থপেডিকস, চোখ, পরিপাকতন্ত্র প্রভৃতি ব্রাঞ্চের প্রফেসররা দুই দফায় তাদের ফি ১ হাজার টাকা প্রথমে ১২শ’ টাকা এবং তারপর ১৫শ’ টাকা করেছেন। তারপরেও তাদের খাঁই মিটছে না।

তাদের মত নাম করা নন, কিন্তু হাত যশ ভালো, এমন দু’চারজন ডাক্তার আছেন যারা সামান্য ফি’তেই রোগী দেখেন এবং যাদের ফি দেওয়ার ক্ষমতা নাই তাদেরকে বিনা পয়সায় দেখেন।

এমনি একজন ডাক্তারের কাহিনী আজ বলছি। তার নাম ডাক্তার বসন্ত রায়। বাড়ি দিনাজপুর। বয়স ৭৯ বছর। এই বয়সে তার রোগী দেখার কথা নয়। কিন্তু তারপরেও তিনি সকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত দৈনিক অন্তত ১০০ জন রোগী দেখেন। শুনলে বিশ্বাস করবেন না, কিন্তু বাস্তবে এটি হলো সত্য যে তার ভিজিট মাত্র ৪০ টাকা। রোগীকে ব্যবস্থাপত্র দেওয়ার সাথে সাথে তিনি তাদেরকে বিনামূল্যে ঔষধ দেন এবং এই কাজটি তিনি করে আসছেন বিগত ৪৯ বছর ধরে নিরলসভাবে। ১৯৬৫ সালে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ তিনি এমবিবিএস পাশ করেন। যখন তিনি দিনাজপুরের কালীতলা এলাকাতে প্র্যাকটিস শুরু করেন তখন তার ভিজিট ছিল ২ টাকা। ডাক্তার বসন্ত রায় বলছেন, “আমি লক্ষ্য করলাম যে ঐ সময় ২ টাকা ভিজিট দেওয়াও অনেকের জন্য কষ্টকর। তাই আমি ঠিক করলাম যে সাধারণ ঔষধও আমি বিনা পয়সায় দেবো।”

দিনাজপুরের আবুল কালাম আজাদ নামের এক ব্যক্তি বলেন, গত ৫০ বছর ধরে আমি ডাক্তার বসন্ত রায়কে দেখে আসছি। যৌবনে তিনি যে এনার্জি নিয়ে প্র্যাকটিস করতেন আজ এই ৭৯ বছর বয়সেও সেই একই এনার্জি নিয়ে তিনি প্র্যাকটিস করেন। তিনি তার পরিবারের সদস্যদেরকেও এই পরামর্শ দেন যে তোমরা অর্থের পেছনে ছুটবে না। তার ছোট ভাই তরুণ কুমার রায় এবং দুই কন্যা সুদিপ্ত ও সুষ্মিতাও ডাক্তার। তারাও প্র্যাকটিস করেন, তবে অর্থের জন্য লালায়িত নন।

আজ বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার যাচ্ছে, অন্তত ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যাংক সমূহ লুণ্ঠিত হয়েছে, হাজার হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ রয়েছে। এসব অর্থের অংশ কি সুবিধা বঞ্চিত গরিব মানুষদের সেবায় উন্নত মানের হাসপাতাল গড়ে তোলার কাজে ব্যবহৃত হতে পারে না? গরিবদের জন্য কি ক্যান্সার হাসপাতাল বা কিডনি হাসপাতাল গড়ে উঠতে পারে না?

গরিবদের জন্য কি সুলভ খরচে ল্যাব এইড, মেডিনোভা, পপুলার, আনোয়ার খান মডার্ন, স্কয়ার, বিআরবি, ইউনাইটেড হাসপাতাল গড়ে উঠতে পারে না? অন্তত আজও গড়ে ওঠেনি। তাই তো বলা হয়, এসব হাসপাতাল এবং তাদের এক শ্রেণীর ডাক্তার চামার।

পরিচিতি : সহযোগী সম্পাদক, দৈনিক ইনকিলাব/ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়