অলক কুমার দাস, টাঙ্গাইল: জন্মের মাত্র ছয় মাসের মাথায় বাবলীকে অ্যাসিড পান করিয়ে হত্যা করতে চেয়েছিল তার জন্মদাতা বাবা। এর ১৭ বছর পরে অবশেষে আত্মহননের পথ বেছে নিল এসএসসি পরীক্ষার্থী মেহিয়া আক্তার বাবলী। আত্মহত্যায় অনুপ্রাণিত করার অভিযোগে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
বাবার অ্যাসিড হামলায় ঐ সময় বেঁচে গেলেও বাবলীর একটি কান নষ্ট হয়ে যায়। এ ছাড়াও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় গলা, জিহ্বা ও মুখ। ঠিকমত কথা বলতেও পারত না বাবলী।কন্যাসন্তান হওয়ার তথ্য জেনে জন্মের আগে থেকেই বাবলীর মা'কে গর্ভপাত করার জন্য চাপ প্রয়োগ করতেন বাবলীর পিতা। তবে তা হয়নি। শেষ পর্যন্ত কন্যা সন্তান হিসেবে জন্ম হওয়ার ছয় মাসের মাথায় অ্যাসিড দিয়ে বাবলীকে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়।
ওই সময় এ নিয়ে মামলা হলে কিছুদিন পলাতক থাকেন বাবলীর পিতা। কিন্তু পরে ঐ মামলার আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। বাবলী এবং তার মা এরপর আর ঐ ব্যক্তির সাথে সম্পর্ক রাখেননি।
বাংলাদেশ অ্যাসিড সারভাইভার্স ফাউন্ডেশনের শিক্ষাবৃত্তির সহায়তায় পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছিল বাবলী। শারীরিক বিকলঙ্গতার জন্য প্রায়ই অন্যান্য ছাত্রীদের বিদ্রুপের শিকার হতে হতো তাকে।
পুলিশ বলছে, তাদের ধারণা বাবলী আত্মহত্যা করেছেন। তবে কেন এই ঘটনা ঘটেছে, ময়নাতদন্তের পরে সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
বাবলীর মা পারুল বেগম জানান, বহিষ্কার হওয়ায় ভারতেশ্বরী হোমসের একজন শিক্ষার্থী ও তার মায়ের সাথে মির্জাপুরে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলেন বাবলী। সেই শিক্ষার্থী ও তার মা বাবলীকে মৌখিকভাবে তিরস্কার করতো বলে জানান পারুল বেগম।
মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম মিজানুল হক জানান, ভারতেশ্বরী হোমসের ছাত্রী নিবাসে থেকে পড়াশোনা করতেন বাবলী। তবে আট-দশ মাস আগে শৃঙ্খলাজনিত কারণে তাকে ছাত্রীনিবাস থেকে বহিষ্কার করা হয়। তিনি আরো জানান, আত্মহত্যায় প্ররোচনা করার জন্য দন্ডবিধির ৩০৬ ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং প্ররোচনার অভিযোগে ফাতেমা আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়েছে।