শিরোনাম
◈ রাতে বাংলামোটরে জুলাই পদযাত্রার গাড়িতে ককটেল হামলা (ভিডিও) ◈ যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ক মোকাবেলায় বাংলাদেশের চার দফা কৌশল ◈ বিআরটিএর মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন নিয়ে কঠোর নির্দেশনা ◈ সাবেক এমপি নাঈমুর রহমান দুর্জয় গ্রেপ্তার ◈ শ্রীলঙ্কার বিরু‌দ্ধে অবিশ্বাস্য ব্যাটিং ধসে বাংলাদেশ হার‌লো ৭৭ রা‌নে ◈ ২০ বছরেও অধরা এমআই-৬'র ভেতরের রুশ গুপ্তচর! (ভিডিও) ◈ নারী ফুটবলের এই অর্জন গোটা জাতির জন্য গর্বের: প্রধান উপদেষ্টা ◈ প্রবাসীদের জন্য স্বস্তি: নতুন ব্যাগেজ রুলে মোবাইল ও স্বর্ণ আনার সুবিধা বাড়লো ◈ একযোগে ৩৩ ডেপুটি জেলারকে বদলি ◈ 'মধ্যপ্রাচ্যে সিলেট-ব্রাহ্মণবাড়িয়ার লোকেরা ঘোষণা দিয়ে মারামারি করে' (ভিডিও)

প্রকাশিত : ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৮:৩১ সকাল
আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৮:৩১ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আদিবাসীদের নিজস্ব ভাষায় বই প্রণয়নের দাবি

ইউসুফ আলী সুমন, মহাদেবপুর (নওগাঁ): ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল সংগ্রাম। আর এ ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছে লাখো বাঙালি। আর সেই পথ ধরে ১৯৭১। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের বাংলাদেশ। প্রত্যেক জাতি গোষ্ঠীর রয়েছে নিজস্ব ভাষা। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী আদিবাসী হারিয়েছে তাদের ভাষা ও সংস্কৃতি।

আদিবাসীদের নিজস্ব ভাষায় কোন বই না থাকায় সময়ের পরিক্রমায় সাদ্রি ভাষা আজ বিলুপ্তের পথে। তাই ভাষার মাসে বাংলা ভাষার পাশাপাশি আদিবাসীদের দাবি নিজস্ব ভাষা অর্থাৎ সাদ্রি ভাষায় পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন।

প্রধান শিক্ষক হিরালাল পাহান বলেন, তার স্কুলে শিশু থেকে ৫ম পর্যন্ত ১৫১ জন। দুইজন আদিবাসী ও দুই জন হিন্দু শিক্ষক আছেন। স্কুলে পাঠদান করতে গিয়ে কিছু সমস্যায় পড়তে হয়। কারণ সেখানে বাংলা বই পড়ানো হয়। স্কুলে থাকে স্বল্প সময় আর বাড়ি দীর্ঘ সময়। খেলাধুলা, পরিবার ও সমাজে তারা তাদের মাতৃভাষায় অর্থ্যাৎ সাদ্রি ভাষায় কথা বলে। কিন্তু স্কুলে যখন পাঠদানের সময় বইয়ের বাংলা ভাষা বুঝতে পারে না। যার কারণে অনেকের অনীহা দেখা যায়। একসময় তারা আর স্কুলে আসতে চায়না। পড়াশুনা ছেড়ে দেয় এবং ঝরে পড়ে।

সহকারী শিক্ষক সনিতা রানী মন্ডল বলেন, স্কুলের সবাই আদিবাসী শিক্ষার্থী। তারা তাদের মাতৃ ভাষায় কথা বলে। প্রথমে যখন স্কুলে যোগদান করি তখন তাদের ভাষা বুঝতে পারতাম না। কিন্তু সময়ে পরিক্রমায় এখন অনেকটাই বুঝতে পারছি। বইয়ের ভাষার পাশাপাশি যদি আদিবাসীদের মাতৃভাষার বই থাকে তাহলে পড়া অনেক সহজ ও সুবিধা হবে এবং মূল পরিবেশের সাথে তারা তাল মিলিয়ে চলতে পারবে।

মহাদেবপুর উপজেলা আদিবাসী পরিষদের উপদেষ্টা আজাদুল ইসলাম বলেন, আদিবাসী শিশুরা শিক্ষার দিক থেকে অনেক পিছিয়ে আছে। আর পিছিয়ে থাকার অনেকগুলো কারণও আছে। তারমধ্যে অন্যতম একটি হলো ভাষাগত সমস্যা। যেহেতু তাদের মাতৃভাষা বাংলা নয়, যার কারণে তারা সহজে বাংলা ভাষা বুঝতে পারেনা। বেশির ভাগ এ অঞ্চলের আদিবাসীরা সাদ্রি ভাষায় কথা বলে। একারণে তারা স্কুলে যাওয়ার কিছুদিনের মধ্যে ঝরে পড়ে। আর এ ভাষাগত সমস্যা যদি সমাধান করা যায় তাহলে আদিবাসী শিশুদের শিক্ষার ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়া সহজ হবে। আদিবাসীদের স্বতন্ত্র জাতি হিসেবে টিকিয়ে রাখতে হলে এ সংস্কৃতিগুলোর চর্চা এবং বিকাশের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাষ্ট্রীয়ভাবে গ্রহণ করতে হবে।

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের নওগাঁ জেলার সমন্বয়ক জয়নাল আবেদীন মকুল বলেন, বাংলাদেশে অসংখ্য ক্ষুদ্র জাতিস্বত্ত্বার বসবাস। আমরা মনে করি বাংলাদেশে আদিবাসীদের ভাষার যে বিকাশ এজন্য আদিবাসী ভাষার চর্চার প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে প্রাক-প্রাথমিক থেকে আদিবাসীদের ভাষায় বর্ণমালা প্রকাশ করে শিক্ষার ব্যবস্থা করা। পরবর্তিতে সেই শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়ে আসা। প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আদিবাসী শিক্ষক নিয়োগ দেয়া প্রয়োজন। এ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আদিবাসীদের শিক্ষার সংকট থেকে মুক্তি এবং তাদের ভাষার বিকাশ সম্ভব।

নওগাঁ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বদরুজ্জেহা বলেন, জেলায় সাদ্রি ভাষার ক্ষুদ্রনৃগোষ্ঠী আছে। বইয়ের চাহিদা অনুযায়ী সাদ্রি ভাষার ২২২ টি বই জেলার সাপাহার এবং বদলগাছী উপজেলায় দেয়া হয়েছে। বইয়ের প্রতি তারা খুবই আগ্রহী। নিজস্ব ভাষায় যে বইগুলো তারা পেয়েছে এতে তাদের মেধা ও প্রতিভা বিকশিত করতে সহযোগীতা করবে। আদিবাসী শিশুরা যদি নিজেদের ভাষায় বই পড়তে পারে, তাহলে স্কুলে আসার আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে। আগামী বছরের জন্য সাদ্রি ভাষার বইয়ের চাহিদা পাঠানো হয়েছে ২৯৫টি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়