শিরোনাম

প্রকাশিত : ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৮:৩২ সকাল
আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৮:৩২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শীর্ষ পদ খালি রেখেই চলছে ১২ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়

সাইফ সুজন : বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার দায়িত্ব উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের। রাষ্ট্রপতির আদেশের মাধ্যমে এসব পদে নিয়োগ দেয়ার কথা। যদিও এ তিনটি স্থায়ী পদের সবগুলো খালি রেখেই কার্যক্রম চালাচ্ছে ১২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।

বর্তমানে দেশে সরকার অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৯৬টি। এর মধ্যে পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় এখনো শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেনি। শিক্ষা কার্যক্রমে আছে এমন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের তালিকা সম্প্রতি হালনাগাদ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। ইউজিসির ওই তালিকা অনুযায়ী, ১২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত কোনো উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে আছে গণবিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, জেড.এইচ. সিকদার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেস, জার্মান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, এন.পি.আই ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ ও ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি। অন্যান্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ পর্যায়ে শতাধিক পদ খালি রয়েছে।

গুরুত্বপূর্ণ পদ খালি থাকার বিষয়টি উঠে এসেছে ইউজিসির বার্ষিক প্রতিবেদনেও। এতে বলা হয়েছে, ১৫-২০ বছরের পুরনো অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নেই।

ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান এ প্রসঙ্গে বণিক বার্তাকে বলেন, আইনে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার কথা বলা হয়েছে। অথচ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এ তিনটি পদের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক খালি রয়েছে। আবার অনেকে বছরের পর বছর ভারপ্রাপ্ত দিয়ে চালাচ্ছে। ভারপ্রাপ্ত নিয়োগপ্রাপ্তরা গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয় অনুমোদন দিতে পারেন না। এর ফলে প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ইউজিসির পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বিভিন্ন সময় এ বিষয়ে লিখিতভাবে তাগিদ দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচিত, এসব শূন্য পদে অতি দ্রুত নিয়োগের ব্যবস্থা করা।

নিয়ম অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের ক্ষেত্রে আচার্য (রাষ্ট্রপতি) বরাবর নাম প্রস্তাব করে। এরপর আচার্য এসব পদে নিয়োগ দিয়ে থাকেন। পরবর্তীতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। যদিও অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ নিয়ম মানছে না। বছরের পর বছর নিজেদের মনোনীত ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ দিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে।

গুরুত্বপূর্ণ এসব পদ খালি থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় নিয়মিত সিন্ডিকেট, একাডেমিক কাউন্সিল ও অর্থ কমিটির মতো বাধ্যতামূলক সভা পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। ইউজিসির সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৬ সালে ১৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থ কমিটির কোনো সভা হয়নি। একাডেমিক কাউন্সিলের সভা হয়নি ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে। আর সিন্ডিকেট সভা করেনি ১৩টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হলেন উপাচার্য। অথচ অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই রাষ্ট্রপতি নিয়োগপ্রাপ্ত উপাচার্য নেই। যদিও উচ্চশিক্ষা শেষে শিক্ষার্থীদের সনদে স্বাক্ষর করার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি নিয়োগকৃত উপাচার্যের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু উপাচার্য না থাকায় এসব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উত্তীর্ণরা মূল সনদ নিতে বিপাকে পড়ছেন। আবার আইনগত বৈধতা না থাকা সত্ত্বেও কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রাস্টি বোর্ড নিয়োগকৃত অস্থায়ী উপাচার্য মূল সনদে স্বাক্ষর করছেন।

গত বছরের নভেম্বরে ইউজিসি এক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল। তাতে বলা হয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের অর্জিত ডিগ্রির মূল সনদ উপাচার্য এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক স্বাক্ষরিত হতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়