শিরোনাম
◈ অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধে বিটিআরসিতে তালিকা পাঠানো হচ্ছে: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ◈ পাবনায় হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ জলাবদ্ধতা নিরসনে ৭ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি ◈ ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল ◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সব সম্পত্তি দিয়ে দেবো (ভিডিও) ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না: সুপ্রিমকোর্ট ◈ তীব্র গরমে স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা আরও ৭ দিন বন্ধ ঘোষণা ◈ সিরিয়ায় আইএসের হামলায় ২৮ সেনা নিহত ◈ সরকার চোরাবালির ওপর দাঁড়িয়ে, পতন অনিবার্য: রিজভী 

প্রকাশিত : ৩১ জানুয়ারী, ২০১৮, ০৫:৩১ সকাল
আপডেট : ৩১ জানুয়ারী, ২০১৮, ০৫:৩১ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিএনপি হলো দুর্নীতিবাজ ও কুখ্যাতদের দল

মিল্টন বিশ্বাস : ২৮ জানুয়ারি(২০১৮) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে হাজির হয়ে বিএনপি নেতৃবর্গ তাদের সংশোধিত গঠনতন্ত্র জমা দিয়েছেন। নতুন এই গঠনতন্ত্রে বাদ পড়েছে ‘৭’ এর সব উপধারা। এর ফলে দুর্নীতিবাজ ও কুখ্যাতদের জন্য বিএনপির দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে বলেই আমরা মনে করছি। ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ তাদের কাউন্সিল সম্পন্ন হলেও এতোদিন পর এটি জমা দেওয়ার উদ্দেশ্য হলো বেগম জিয়ার মামলার রায় আগামী ৮ ফেব্রুয়ারিতে ঘোষিত হবে। অর্থাৎ চেয়ারপারসনকে রক্ষার করার বিষয়টি সকলের কাছে পরিষ্কার বলে মনে হচ্ছে। উল্লেখ্য, বিএনপির গঠনতন্ত্রের ৭ নম্বর ধারায় কমিটির সদস্য পদের অযোগ্যতা শিরোনামে বলা আছে, নিম্নোক্ত ব্যক্তিগণ জাতীয় কাউন্সিল, জাতীয় নির্বাহী কমিটি, জাতীয় স্থায়ী কমিটি বা যেকোনো পর্যায়ের যেকোনো নির্বাহী কমিটির সদস্য পদের কিংবা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের প্রার্থী পদের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। তারা হলেন: (ক) ১৯৭২ সালের রাষ্ট্রপতির আদেশ নম্বর ৮ এর বলে দ-িত ব্যক্তি, (খ) দেউলিয়া, (গ) উন্মাদ বলে প্রমাণিত ব্যক্তি, (ঘ) সমাজে দুর্নীতিপরায়ণ বা কুখ্যাত বলে পরিচিত ব্যক্তি। প্রকৃতপক্ষে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ের দিন ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতেই গঠতন্ত্রের ‘৭’ ধারা বাদ দেয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে, মামলার রায়ে খালেদা জিয়ার সাজা হলে দলের গঠনতন্ত্রের ধারা ৭-এর ‘ঘ’ সামনে আনা হতে পারে। এছাড়া এই ধারা ব্যবহার করে দলের ভাঙন সৃষ্টির পাঁয়তারা হতে পারে। অর্থাৎ গঠনতন্ত্রের পরিবর্তনের কারণে দুর্নীতি প্রমাণ হয়ে দ-িত হলেও দলে বহাল তবিয়তে পদ নিয়ে থাকতে পারবেন বেগম জিয়া। আসলে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া গঠনতন্ত্রে দলের জাতীয় কাউন্সিল ছাড়া সংশোধনী আনার বিষয়টি গোপন রাখা হয়েছে। উপরন্তু গঠনতন্ত্র সংশোধন করতে হলে কাউন্সিলে তা অনুমোদন আনতে হয়- সে রীতিও লঙ্ঘন করা হয়েছে। অবশ্য ২৮ জানুয়ারি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দলের সিনিয়র নেতা নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ছাড়া আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে না বিএনপি। তাদের বাদ দিয়ে বিএনপির নির্বাচনে যাওয়ার ভাবনা মূর্খতা। তিনি আরও বলেন, আগামী নির্বাচন থেকে অন্যায়ভাবে বিএনপিকে বাইরে রাখার জন্য সরকার ষড়যন্ত্র করছে। খালেদা জিয়া বা তারেক রহমানকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বাইরে রাখার চেষ্টা করা হলে বিএনপির কেউ নির্বাচনে অংশ নেবে না।’

২.
পৃথিবীর ইতিহাসে এই প্রথম কুখ্যাত ও দুর্নীতিবাজকে সরাসরি সাংবিধানিকভাবে অনুমোদন দিল বিএনপি। অর্থাৎ, তাদের নিজেদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বিএনপি এখন একটি দুর্নীতিবাজ দল। কারণ শুধু একজন বা একটি পরিবারের জন্য কোনো দলের গঠনতন্ত্রে দুর্নীতি জায়েজ করা এক নজিরবিহীন ঘটনা। এমন সিদ্ধান্তের মাধ্যমে নিজেদের নীতিহীনতার পরিচয়কেই আরেকবার বড় করে তুলে ধরলেন বিএনপির নেতৃবৃন্দ। আর এমন গঠনতন্ত্রের কারণেই ‘প্রমাণিত’ ও কুখ্যাত সব দুর্নীতিবাজদের জন্যই বিএনপির দ্বার উন্মুক্ত হলো। একইসাথে গঠনতন্ত্রের এই পরিবর্তনের মাধ্যমে খালেদা জিয়া এতিমের টাকা মেরে দেওয়ার ব্যাপারটিও স্বীকার করে নিলেন।
২০০৮ সালে ১/১১ আমলে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা ১৮টি মামলা উধাও হয়ে গেল, আর একই আমলে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলোতে তাঁকে বার বার হাজিরা দিতে হচ্ছে- এরকম একটি বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা ছড়ানো হচ্ছে। সত্য হলো- ২০০৮ সালে শেখ হাসিনার নামে যে সব মামলা হয়েছে সেগুলো আদালতের চলমান সুষ্ঠু প্রক্রিয়ায় নিষ্পন্ন হয়েছে এবং যে অভিযোগগুলো জননেত্রীর বিরুদ্ধে এসেছিল সেগুলো আদালতে যুক্তিতর্কের মাধ্যমেই বাতিল হয়েছে। বাতিল হয়েছে এই কারণে নয় যে তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। মামলাগুলো আদালতে যে প্রক্রিয়ায় অভিযুক্তকে সম্মুখীন হতে হয় সেভাবেই আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে মোকাবেলা করা হয় এবং ওই মামলার যে যৌক্তিকতা নেই তা প্রমাণিত হয়েছে। বিএনপি নেতাদের অভিযোগ অনুসারে যদি আওয়ামীলীগ স্বাধীন বিচার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপই করত তাহলে খালেদা জিয়া বিরুদ্ধে ভৈরব সেতুর মামলা কিভাবে একই প্রক্রিয়ায় বাতিল হলো? আসলে ভৈরব সেতুর মামলায় যৌক্তিকতা ও কোনো ধরনের প্রমাণ না থাকার কারণে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ভৈরব সেতু মামলাকে এই আওয়ামীলীগ সরকারের আমলেই আদালত বাতিল করে। পক্ষান্তরে খালেদা জিয়া এতিমের টাকা চুরির মামলাটি মোকাবিলা করছেন আর এই মামলার কোনো মেরিট না থাকলে এ মামলাও বাতিল হয়ে যেত। কিন্তু যেহেতু এই মামলার মেরিট ছিলো তাই ২০০৮ সালে দায়ের করা এ মামলাটিকে প্রতিহত করার জন্য খালেদা জিয়া ও তাঁর আইনজীবীরা সুচতুরভাবে আদালতের স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করার জন্য ভিন্ন ভিন্ন সময়ে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেননি। বরং বার তারিখ নিয়েছেন। এজন্যই খালেদা জিয়াকে এ মামলায় বার বার আদালতে হাজিরা দিতে হয়েছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে পেট্রোল বোমার রাজনীতি করে ক্ষমতায় বসবেন এমন দিবাস্বপ্ন দেখে ভেবেছিলেন ক্ষমতায় আসলে তাঁরা এসব মামলাকে নিশ্চিহ্ন করে দেবেন। অথচ এতিমের টাকা মেরে দেবার পূর্বাপর ঘটনা বাস্তব ও প্রমাণিত।
(লেখক : ড. মিল্টন বিশ্বাস, অধ্যাপক এবং পরিচালক, জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা দপ্তর, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়