অনুষ্ঠানের নামে জীবন বিনাশী শব্দদূষণ

ডেস্ক রিপোর্ট : আইন অনুয়ায়ী রাত ১০টার পর অনুষ্ঠানের নামে শব্দ দূষণ বন্ধের দাবি জানিয়েছে নাগরিক ও পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। তারা বলেছেন, শব্দ দূষণ চোখে দেখা যায় না। তাই এর ক্ষতিকর বিষয়গুলো আমরা উপেক্ষা করি। অথচ শব্দ দূষণ মাথার চুল থেকে শুরু করে পায়ের নখ পর্যন্ত শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের মারাত্মক ক্ষতি করে।
গতকাল মঙ্গলবার, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠন, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম, বিসিএইচআরডি, পরিবেশ উদ্যোগ, ইএসএসডি, ফেনী স্টুডেন্টস ফোরাম অফ ঢাকা এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত শীর্ষক মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা বলেন, রাজধানী ঢাকায় এখন রাতের বেলা বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নামে উচ্চ শব্দে মাইক বাজানো হয়। মাত্রাতিরিক্ত শব্দ শুধুমাত্র মানব জীবনেই নয়, জীববৈচিত্র্যের জন্যও ক্ষতিকর। শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা ২০০৬ অনুযায়ী অনুষ্ঠানে শব্দের মানমাত্রা অতিক্রমকারী যে কোনো যন্ত্রপাতি দৈনিক পাঁচ ঘণ্টার বেশি ব্যবহারের অনুমতির বিধান নেই এবং অনুমোদিত সময়সীমা রাত ১০টা অতিক্রম করতে পারবে না। অথচ এই আইন প্রতিনিয়ত ঢাকা শহরে ভঙ্গ করা হচ্ছে।
স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার আব্দুল মতিন বলেন, একজন মানুষ সারাদিন কর্মব্যস্ত সময় পার করার পর রাতে বিশ্রামের প্রয়োজন রয়েছে। অথচ শব্দ দূষণ এতটা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে, রাতে শান্তি মত বিশ্রাম নেওয়া যায় না। বিভিন্ন অনুষ্ঠান এবং গাড়ির শব্দে ঘুমানো যায় না। শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ধারাবাহিক কাজ করতে হবে।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর পরিচালক গাউস পিয়ারী বলেন, শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা ২০০৬ সম্পর্কে মানুষকে অবগত করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, শব্দদূষণ সৃষ্টি করে এমন যন্ত্রাংশ আমদানি এবং ব্যবহারের ক্ষেত্রে কঠোরতা অবলম্বন করতে হবে। শব্দ দূষণের কারণে পুলিশ বাহিনীর ১০ থেকে ১২ শতাংশ পুলিশ শ্রবণজনিত সমস্যায় ভুগছেন। কাজেই আইন বাস্তবায়নে পুলিশ বাহিনীকে আরো বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের সিনিয়র প্রকল্প কর্মকর্তা জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের একাডেমিক অ্যাডভাইজার প্রফেসর ড. গুলশান আরা লতিফ, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার মারুফ হোসেন, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের সভাপতি হাফিজুর রহমান ময়না, বিসিএইচআরডি এর নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল হক, কুষ্টিয়া সাফ এর নির্বাহী পরিচালক মীর আব্দুল রাজ্জাক, প্রত্যাশা জনকল্যাণ ফাউন্ডেশন এর সাইফুল আলম। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন মানবাধিকার কর্মী ডা. আনোয়ার হোসেন, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ড. মাহমুদা পারভীন, প্রভাষক হুমায়ন কবির ও সাহাদত হোসেন, দি ইনস্টিটিউট অফ ওয়েলবিং এর বরনি ডালবত প্রমুখ।