অধ্যাপক সাহেদা ওবায়েদ : বর্তমান বাংলাদেশে যুবসমাজের বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। বিশেষ করে বেকারত্ব। তারা পড়াশোনা করে চাকরি পাচ্ছে না। আবার পর্যাপ্ত পরিমাণের ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকার কারণে, ভালো রেজাল্ট করে ভালো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারছে না। যার জন্য যুব সমাজ হতাশাগ্রস্থ। এই হতাশা থেকে তারা নেশাগ্রস্থ হচ্ছে। মাদকটিই আমাদের দেশের যুবসমাজের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা। হতাশা কাটাতে তারা দিন দিন মাদকাসক্ত হচ্ছে। পারিবারিক বন্ধন থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে।
নিয়িমিত পরিবারের লোকদের সাথে কথা বলে না। একা একা থাকতে পছন্দ করে। যুবসমাজ যে বয়সে মাদাকাসক্ত হয়, সেই বয়সটি একটি সেন্সেটিভ বয়স। এই বয়সে তারা কোনো না কোন কাজে নিয়োজিত থাকার কথা। সেটি না হওয়ার কারণে তারা হতাশায় ভোগে। তাই তারা মানসিক শান্তির জন্য মাদকটিকে বেছে নিচ্ছে। আমাদের দেশে মাদক দ্রব্যগুলোও খুব সহজ লভ্য। এত কম দাম, যে কেউ চাইলেই হাতের মুঠোয় পেয়ে যায়। দিনে দিনে তারা মাদকে অভ্যস্থ হয়ে যায়। মাদকে অভ্যস্থ হলে তাদের নিয়মিত টাকা প্রয়োজন হয়। তারা মাদকদ্রব্য কেনার জন্য যে কোনো উপায় টাকা জোগাড় করতে চায়। তাদের কাছে সেই সময় বাবা মা পরিচয় থাকে না। এটি মানসিক রোগের মধ্যে পড়ে যায়। আমরা ঐশীকে দেখেছি। সে একজন মানসিক রোগীই ছিল। যার জন্য বাবা-মাকে হত্যা করতে পেরেছে।
ঐশীর মতো মানসিক রোগী যদি পুরো যুবসমাজ হয়, তাহলে আমাদের দেশটিও মানসিক রোগীতে পরিণত হবে। যুব সমাজ আমাদের শক্তি। তারা আমাদের ভবিষ্যত সম্বল। এদেরকে যে কোনোভাবে কাজে লাগাতে হবে। তারা যেন মাদকের দিকে ঝুঁকে না যায়, খেয়াল রাখতে হবে সকলকে। মাদকের কবল থেকে তাদের বের করতে হলে মা-বাবার ভূমিকা বেশি। তাদের মধ্যে একটি পারিবারিক বন্ধন সৃষ্টি করতে হবে। ঐশীর কথা ভেবে দেখুন, যা চেয়েছে তাই পেয়েছে। যার জন্য এই পরিণতি হয়েছে। তাই বাবা-মাকে সন্তানের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। আর সরকারের কাজ হচ্ছে, দেশে যেন কোনোভাবে মাদক না আসে সেটি নিশ্চিত করা। আমাদের পাশের দেশগুলোতে এতো মাদকাসক্তি নেই। কিন্তু তাদের দেশ থেকে আমাদের দেশে মাদক আসে। এইগুলো স্পেশালি বাংলাদেশের জন্য তৈরি হচ্ছে। তাই সরকারের উচিত এই বিষয়গুলো দেখা, যেন আমাদের দেশে কোনভাবে মাদক ঢুকতে না পারে। আর যুব সমাজ কেন হতাশায় ভুগছে সেটি দেখা। কারণগুলো বের করে, যুবসমাজকে হতাশা মুক্ত করা। তাহলে তারা আর মাদকাসক্ত হবে না।
পরিচিতি : রাজনীতিক ও শিক্ষাবিদ
মতামত গ্রহণ : গাজী খায়রুল আলম
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ