পরাগ মাঝি : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের এক বছর অতিবাহিত হয়েছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের। আমেরিকানরা তাকে পছন্দ করুক বা না করুক, এটা অস্বীকার করার উপায় ইেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের এই নতুন নেতা তার প্রথাবিরোধী চরিত্র ও কর্মকান্ড দিয়ে ওয়াশিংটকে কাপিয়ে তুলেছেন, নাড়া দিয়েছেন সারা বিশ্বে।
বলা যায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের এক বছর ঘটনাবহুল ও বিতর্কীত হলেও গুরুত্বপূর্নও বটে। এই এক বছরে তার অর্জনও কম নয়। একজন ব্যবসায়ী হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার সময় আমেরিকার সাধারন মানুষের পাশাপাশি সারা পৃথিবীই এক উৎকন্ঠার মধ্যে ছিলো। নির্বাচনী প্রচারণার সময় তার কট্টর অবস্থান থেকে এই এক বছরে তিনি অনেকটাই সরে এসেছেন। যদিও বাস্তবতার চাপেই এমনটা হয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। মুসলিমদের প্রতি তার বৈরি মনোভব থেকে এখন কিছুটা সরে এসেছেন। অভিবাসন নীতিতেও তাকে যতোটুকু কট্টর মনে হয়েছিলো, ততটুকু এখন নন। এর জন্য বিশেষ কৃতিত্ব রয়েছে মার্কিন বিচার বিভাগীয় প্রক্রিয়ার। চূড়ান্ত কোন পদক্ষেপ নিতে মার্কিন আদালতগুলো বরাবরই ট্রাম্পকে প্রতিহত করেছে। বিরোধী ডেমোক্রেট সিনেটররাও এ ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে।
ট্রাম্পের বিগত বছরটি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, প্রেসিডেন্ট হিসেবে গত বছরের ২০ জানুয়ারী দায়িত্ব গ্রহণের পর ২৩ ফেব্রæয়ারী তিনি টিপিপি চুক্তি থেকে বেড়িয়ে আসেন। এর চার দিন পরই তিনি ছয়টি মুসলিম দেশের নাগরিকদের উপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। ৭ এপ্রিল তিনি রাসায়নিক হামলার অভিযোগে সিরিয়ায় মিসাইল হামলা এবং ২৮ মে নাফটা চুক্তির আধুনিকায়নের জন্য নির্দেশনা দেন ট্রাম্প।
এরপরও বলা যায়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ট্রাম্প মার্কিন নীতিকেই অনুসরণ করেছেন। যদিও জলবায়ু চুক্তি থেকে সরে গিয়ে মার্কিন নীতিকে তিনি অবজ্ঞা করেছেন বলে মনে করেন অনেকে। বিদেশ নীতির ক্ষেত্রে ট্রাম্প আগ্রাসী মনোভব দেখালেও নিরবে তিনি মার্কিন নীতিকেই প্রতিষ্ঠিত করছেন।
ট্রাম্পকে নিয়ে বড় সমস্যা হলো, তাকে নিয়ে সহজে পূর্বানুমান করা সম্ভব হয়না। কেউ কেউ তার বিরুদ্ধে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত আরও বাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। এসবের নেপথ্যে মার্কিন অস্ত্র ব্যবসাকে আরও সুপ্রতিষ্ঠিত করার প্রয়াশ রয়েছে ট্রাম্পের। তবে, এর মাধ্যে কূটনৈতিক দূরদর্শিতার ঘাটতি চোখে পড়েছে অনেকের। রাশিয়া ও চীনের ক্ষেত্রে মার্কিন নীতির প্রতিফলন না ঘটিয়ে তিনি বরং উত্তর কোরিয়াতেই আটকে গেছেন।
নির্বাচনের সময় রুশ সংশ্লিষ্টতা নিয়ে এফবিআইয়ের তদন্তও ট্রাম্প প্রশাসনকে অনেকাংশে প্রভাবিত করেছে। সমালোচকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রকেন্দ্রিক বিশ্ব ব্যবস্থা পরিবর্তন হয়ে গেছে ট্রাম্পের অদূরদর্শীতার কারণে। বিশ্ব শক্তি হিসেবে চীন, রাশিয়ার পাশাপাশি ভারত ও মধ্যপ্রাচ্যে ইরান দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। ভয়েজ অব আমেরিকা অবলম্বণে