মরিয়ম চম্পা : হাইতি, এল সালভাদর ও আফ্রিকার দেশগুলোকে নোংরা-অশোভন উক্তি করায় বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় বইছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল ট্রাম্পের এমন আপত্তিকর মন্তব্যের জন্য তাকে আফ্রিকার নাগরিকদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহবান জানিয়েছে আফ্রিকান ইউনিয়ন।
ট্রাম্পের এই বিতর্কিত মন্তব্যর সমর্থন করে আবার সাফাই গেয়েছেন অনেক ট্রাম্প ভক্ত। ওহিওর নাগরিক জেনে ডিফাবিও বলেন, ট্রাম্প অবস্যই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের বিষয়টি আগে দেখবে। তাছাড়া ট্রাম্প মেধা ভিক্তিক ইমিগ্রেশনের বিষয়টি মাথায় রেখেই মন্তব্যটি করেছিলেন।
সমালচোনার জবাবে ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় বলেন, ডিএসিএ মিটিংএ উল্লেখিত দেশগুলোর বিষয়ে আমার ভাষাগতো কঠরোতা থাকলেও আমি কোন বিতর্কিত মন্তব্য করিনি।
কংগ্রেস সদস্যদের সঙ্গে অভিবাসন নীতি নিয়ে এক বৈঠকে ট্রাম্প হাইতি, এল সালভাদর এবং আফ্রিকার কিছু দেশকে শিটহোল বলেন। তার এমন মন্তব্যকে বর্ণবাদী হিসেবে আখ্যায়িত করেছে বিভিন্ন দেশ ও সংগঠন।
সাবেক মেক্সিকান প্রেসিডেন্ট ভিসেন্ট ফক্স বলেন, ট্রাম্পের মুখই হচ্ছে পৃথিবীর সবচাইতে নিকৃষ্ট শিটহোল।
জাতিসংঘের মানবাধিকারকর্মী রুপার্ট কলভিলি বলেন, ট্রাম্প চাইলেই কোন দেশকে ছোট করে মন্তব্য করতে পারেন না। আমি দু:খিত যে ট্রাম্পের পুরো বক্তব্যটাই ছিল বর্ণবাদী।
ইতালির ভাটিকানের এক অফিসিয়াল বিবৃতিতে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বক্তব্য সম্পূর্ণভাবে অফেনসিভ।
ওয়াশিংটনস্থ আফ্রিকান ইউনিয়নের দূতাবাস এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ট্রাম্প প্রশাসন আফ্রিকান জাতিকে এখনো উপলব্ধি করতে পারেননি। আমেরিকার মত বৈচিত্রময় নাগরিকের দেশে এমন মন্তব্য মানুষের মর্যাদা ও বিশ্বায়নের জন্য বাধা এবং রীতিমত অসম্মানজনক।’
পুলিৎজার বিজয়ী আলবার্ত স্ক্যাডিনো বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হচ্ছেন সর্বোচ্চ মাত্রার উন্মাদ, যাকে এখনই উপযুক্ত চিকিৎসা করানো উচিৎ।
ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির মন্তব্য সাবেক কিং কান্ট্রি নরওয়েকে থুথু দিয়েছে বলে জানিয়েছে নরওয়ে সরকার। নরওয়ের অফিসিয়াল এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘থ্যাংকস, বাট নো থ্যাংক, নরওয়ের কোন নাগরিক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাবেনা।’ নরওয়ের নাগরিকদেরকে ট্রাম্পের আমন্ত্রণের বিষয়টি প্রত্যাখান করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ডেমোক্রেট নেতা হিলারি ক্লিনটন এক টুইট বার্তায় বলেন, ট্রাম্পের একাধিকবার শিটহোল মন্তব্য কান্ডজ্ঞানহীন ও বণবার্দী আচরণের প্রমান দেয়। হাইতিতে গত ৮ বছর আগে যে ভয়াবহ ভূমিকম্পসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হেনেছে, তা নিঃস্বন্দেহে মানবিক ও স্পর্শকাতর বিষয়। বিপদগ্রস্থ দেশগুলোকে সাহায্যের পরিবর্তে তার এই বিরূপ মন্তব্যই প্রমান করে যে, তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে কতোট অযোগ্য।
মার্কিন সিনেটর ডিক ডারবিন বলেন, আমি বিশ্বাস করতে পারছি না যে, প্রেসিডেন্ট যে শব্দগুলো ব্যবহার করেছেন, হোয়াইট হাউসের ইতিহাসে, ওই ওভাল অফিসে বসে এর আগে কখনো কোন প্রেসিডেন্ট তা বলেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করা অসম্ভব বলে পদত্যাগ করেছেন পানামার নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত জন ফিলি। তবে তার এই পদত্যাগের সঙ্গে আফ্রিকার দেশগুলো ও হাইতি নিয়ে করা ট্রাম্পের সা¤প্রতিক মন্তব্যের কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানান তিনি।
এদিকে ট্রাম্পের মন্তব্যের প্রতিবাদে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে প্রায় লক্ষ্য লক্ষ্য টুইট করেছে প্রতিবাদকারিরা। সিএনএন, বিবিসি, টাইম