আশিক রহমান : ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র পদে উপনির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ হওয়ায় ঢাকাসহ মাদ্রাসা ও কারিগরি এই ৩টি শিক্ষাবোর্ডের এসএসসি ও সমমানের ২৪ ও ২৫ ফেব্রুয়ারির পরীক্ষার সময়সূচি পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিক্ষাবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা নির্বাচনের জন্যে এসএসসি’র মতো গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার সময়সূচি পরিবর্তনের সমালোচনা করেছেন। তারা বলছেন, নির্বাচনের চেয়ে পরীক্ষা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক আফসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতি তো এখন মোটামুটি বড় লোকদেরই ব্যাপার। এ ধরনের ভাবনা আমাদের মধ্যে থাকা উচিত নয় যে, তাদের বিষয়ের চেয়ে আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ হতে হবে। তিনি বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্যি যে বাংলাদেশে শিক্ষা ব্যবস্থা এখন এমন কোনো বড় বিষয় নয়। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার এখন যা অবস্থা তাতে মেয়র বা সিটি করপোরেশন নির্বাচন হওয়াটা রাজনৈতিকভাবে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এতে সরকারি দল, বিরোধী দল বা অন্য যে দলই হোক না কেন তাদের কোনো একটা অবস্থাপূর্ণ সবল মানুষকে দরকার। এবং সেটাই হচ্ছে ক্ষমতাবানদের বেশি প্রয়োজন। সেখানে শিক্ষা ব্যবস্থা এত কি গুরুত্বপূর্ণ! আমাদের শিক্ষার যে হাল তাতে তো মনে হয় নাÑ দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ। এটা আসলে আমরা খামোখাই বলি। এখানে এটা একেবারেই ছোটখাটো বিষয়। মিউনিসিপালিটির ময়লা পরিষ্কার করাটাও গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে, কিন্তু শিক্ষা ব্যবস্থা আর যাই হোক গুরুত্বপূর্ণ নয়!
তিনি আরও বলেন, পরীক্ষার সময়সূচি পরিবর্তনে শিক্ষার্থীদের সমস্যা হলে তার সমাধানও হয়ে যাবে। পরীক্ষার হলে শিক্ষকদের অনেকেই প্রশ্ন সরবরাহ করে দিবেন। ঘোষণা করে দিলেই তো পারে যে, এই পরীক্ষার জন্য সরকার প্রশ্নপত্র সরবরাহ করবে! সরকার ঘোষণা দিয়ে প্রশ্নপত্র সরবরাহ করুক আর না করুকÑ তারা তো কিছুই করতে পারে না প্রশ্নপত্র ফাঁস করার ব্যাপারে।
অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, নির্বাচন কম গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনের জন্য পরীক্ষার সূচি পরিবর্তন অন্যায়। তিনি আরও বলেন, ফুটবল কিংবা ক্রিকেট খেলার জন্যেও এদেশে পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন হয়। এসব খুবই দুঃখজনক।
সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেছেন, সরকারের কাছে শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ নয়। তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তাদের রাজনীতি। তিনি বলেন, এ কারণেই পরীক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব না দিয়ে নির্বাচনকেই প্রাধান্য দিয়েছে। নির্বাচন হবে, পরীক্ষাও হবে, একটার সঙ্গে আরেকটি যুক্ত করা উচিত নয়।
তিনি আরও বলেন, তাছাড়া শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ, যারা জাতির নেতৃত্ব দিবে তাদের বিষয়টি সরকার প্রাধান্য দিচ্ছে না। সরকার যেটা করছে সেটা হলো যে তাদের দলীয় রাজনৈতিক সুবিধা। এই বিষয়টি সরকারের পুনঃবিবেচনা করা উচিত।