ড. দেলোয়ার হোসেন : এটি এখন স্পষ্ট হয়েছে যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যে মধ্যপ্রাচ্য নীতি বা ইসরায়েল, ফিলিস্তিন নীতি কোনোভাবে তা গ্রহণযোগ্য নয়। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বৈঠকে যে ভোট নেওয়া হয়েছে, তা যদি সংখ্যার দিক থেকে নয় কোয়ালিটির দিক থেকেও দেখা হয়। তাহলে আমরা দেখতে পাই, বিশ্বের সকল ক্ষমতাধর দেশগুলো ট্রাম্পের বিপক্ষে সিদ্ধান্ত দিয়েছে। কিছু দ্বীপ অঞ্চলের দেশ শুধু ট্রাম্পের পক্ষে সিদ্ধান্ত দিয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে তাদের কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। তাই ট্রাম্পের বুঝা উচিত, তার সিদ্ধান্তটি কি সঠিক ছিল, না কি ভুল ছিল। তাদের লক্ষ্য ছিল সেটা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছুন্ন হয়েছে, এই একটি ভোটের মাধ্যমে। এটাও তারা বোঝা উচিত। তাদের বন্ধু রাষ্ট্র থেকে সাধারণ রাষ্ট্রগুলোও চায় ট্রাম্প তার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসুক।
এটি যে একটি হটকারী ও অত্যন্ত হুমকীস্বরূপ তা সবাই বুঝতে পেরেছে। তাই ক্ষমতাশালী সকল দেশ ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে গিয়েছে। ট্রাম্পের হুমকীকেও তারা কোনো পরোয়া করেনি। যে সিদ্ধান্তে পৃথিবীতে শান্তি আসবে, সেটাই করেছে বেশিরভাগ দেশ। এখন কথা হচ্ছে, জেরুজালেমের বিষয়টি একটি ইস্যু হয়ে আছে। যার একটি সঠিক সমাধান করা দরকার। জেরুজালেম যদিও তিনটি ধর্মের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান। তবু মুসলিমরা এই অধিকার আদায়ে বেশি দাবিদার। এটি যদি ফিলিস্তিনের রাজধানী হয়, তাহলে তিনটি ধর্মের লোকই শান্তিপূর্ণ ভাবে তাদের ধর্মের কাজ করতে পারবে। কিন্তু ইসরায়েল রাজধানী করতে গেলে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে।
তাই এটি আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক তৎপরতার কারণে ট্রাম্পের বিপক্ষে সবাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার উদ্ভট যে আচরণ, তা তিনি জাতিসংঘেও দেখিয়েছেন। তার সিদ্ধান্তের বিপক্ষে যারা যাবে তাদের হুমকি দিয়েছেন। এটা ভয়ঙ্করভাবে বিশ্ব শান্তির জন্য, ক্ষতিকর বিশ্বকূটনীতির জন্য। তাছাড়া তারা যে দেশে দেশে কূটনীতিকের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশকে হুমকি দিয়েছে, এটাও খুবই নিন্দনীয়। আর তাদের যে পুথিকীজুরে একটি গ্রহণযোগ্যতা ছিল, তারা এটিও হারিয়েছে। নিজেরাই নিজেদের বন্ধু রাষ্ট্রগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। জাতিসংঘের ভোটের কারণে বিশ্বশান্তির বিজয় হয়েছে। এখন সবাই মিলে বিষয়টির সমাধান কিভাবে করা যায়, এটা নিয়ে বিবেচনা করা দরকার।
পরিচিতি : অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, ঢাবি.
মতামত গ্রহণ : গাজী খায়রুল আলম
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ