জান্নাতুল ফেরদৌসী: জলপাই নিয়ে প্রচলিত অনেক গল্প থাকলেও জলপাই ফলটি অনেকেরই প্রিয়। টক স্বাদের এই ফলটি আমাদের দেশে আচার হিসেবেই ব্যবহার করা হয় বেশি। কেউ কেউ আবার ডাল বা তরকারিতে টক স্বাদ আনার জন্য জলপাই খেয়ে থাকেন। এছাড়া বিদেশ থেকে আসা অলিভ ওয়েল বা জলপাই-এর তেল আমরা নানা দরকারে ব্যবহার করি।
অনেকেই হয়তো জানেন যে, অলিভ অয়েলকে লিকুইড গোল্ড বা তরল সোনা বলা হয়। এই তেল ব্যবহারে শীতের ত্বকের রুক্ষতা দূর করে ত্বক উজ্জল রাখে।
জলপাই বেশ কয়েকটি ভিটামিন সমৃদ্ধ একটি ফল। তাই এর নানা রকম উপকারিতা আছে। এবার সেগুলো জেনে নেই। আশাকরি আপনাদের কাজে লাগবে।
১. শীতকালে সকলেরই প্রায়ই ঠান্ডা-জ্বর,কাশি লেগেই থাকে সেক্ষেত্রে জলপাই খুব উপকারী। তাই নিয়ম করে প্রতিদিন খাওয়ার পর জলপাইয়ের আচার বা জলপাইয়ের তেল খেলে শরীর ভালো থাকবে। জলপাইয়ে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে ভিটামিন-সি। যা খেলে শরীরে অ্যান্টিবডির সৃষ্টি করে, ফলে শরীরে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতার সৃষ্টি হয়।
২. জলপাই প্রতিদিন ১টি করে খেলে ভিটামিন সি এর অভাব দূর হয়। শীতে মানুষের শরীরের তাপমাত্রা কমে আসে। ফলে ভিটামিন সি শীতকালে মানুষের বেশী প্রয়োজন।
৪. ভিটামিন সি এর পাশাপাশি জলপাইয়ে আছে ভিটামিন এ। যা কিনা চোখের জন্য খুবই উপকারী। তাই চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে প্রয়োজন জলপাই নিয়ম করে খাওয়া।
৫. জলপাইয়ে আছে ভিটামিন ই। যা শরীরের হাঁড় ও দাঁত মজবুত রাখে। জলপাইয়ের ভিটামিন ই শরীরের নানা রোগ-প্রতিরোধে বাধা দেয়। ফলে ক্যান্সার রোগ হয় না। তাই জলপাই খাওয়া প্রয়োজন আমাদের সকলেরই।
৫. জলপাই ক্ষয় ধরণের রোগে প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। এলঝাইমার বা স্মৃতি ভুলে যাওয়া রোগীদের জন্য উপকারী। শরীরের যে কোন টিউমারের বৃদ্ধি, রক্তনালীর ক্ষত ও স্ফীত হওয়া ঠেকায় জলপাই।
৬. এমনকি রান্নায়ও অলিভ অয়েল ব্যবহার করা যায়। জলপাইয়ের তেল সয়াবিনের থেকে ভালো। এতে কোনো সাইড ইফেক্ট নেই। হৃদযন্ত্রের জন্যও ভালো জলপাই। অলিভ ওয়েল রান্নায় ব্যবহার করলে মেদ জমবে না। কারণ এই তেল কোলস্টেলর তৈরিতে বাধা দেয়। ফলে উচ্চ রক্তচাপ থেকেও রক্ষা করে অলিভ ওয়েল।
৭. জলপাইয়ে আছে আয়রন,যা শরীরকে তরতাজা করে। তাই আয়রনের অভাব দুর করতে প্রয়োজন রোজ জলপাই খাওয়া।
৮. জলপাই চুলকে রাখে প্রাণবন্ত এবং ত্বকে করে মসৃণ। জলপাই খাবার হজমে খুব ভালো কাজ করে।
৯. কোনো কারণে কোথাও কেটে গেলে বা ঘাঁ হলে জলপাই এই ইনফেকশন সারাতে এন্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে।
১০. জলপাই রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে। নারীদের প্রজনন ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়া সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম পেতে জলপাই খাওয়া উচিত।
টক স্বাদের এই ফলটি কাঁচা খাওয়া কঠিন। তাই সিদ্ধ করে বা আচার বানিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। তারা বলেন, প্রতিদিন খাওয়ার আগে অন্তত দশটি জলপাই খাওয়া উচিত। এতে আপনি ডাক্তার থেকে দূরে থাকবেন। তার মানে হচ্ছে আপনাকে সহজে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে না।
আপনার মতামত লিখুন :