সালেহ্ বিপ্লব, শাহানুজ্জামান টিটু: [২] ভোর ৬টা থেকে কর্মসূচি শুরু হলেও কোথাও তেমন কোনো মিটিং মিছিলের খবর পাওয়া যায়নি। রাজধানীতে জনজীবন স্বাভাবিক হলেও দূরপাল্লার বাস ট্রাক তেমন একটা চলছে না।
[৩] বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী সোমবার বিকেলে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
[৪] তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের সকল দুর্যোগ ও দুর্ভাগ্যের উৎস অবৈধ আওয়ামী সরকার। যাদের অবৈধ সত্তা, তাদের দ্বারা জনগণের হিতকর কোন কাজ হতে পারে না। দখলদার সরকার কখনোই মানব সভ্যতার পরিপূরক কোন কাজ করবে না। যে সরকার মানবাধিকার ও জনকল্যাণমূলক কাজ করে সে সরকার কখনোই ক্ষমতা দখল করে রাখবে না।
[৫] রিজভী বলেন, অবাধ মত প্রকাশ, সভা-সমাবেশের অধিকার, এবং লেখনির স্বাধীনতা গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণের প্রধান শর্ত। এই শর্তগুলি লোপ পেয়েছে বর্তমান ২ নং বাকশালী শাসন পদ্ধতির প্রভাবে। রাষ্ট্র এখন ব্যক্তির স্বাধীনতা হরণ করে একনায়কের প্রভুত্ব কায়েম করেছে। রাষ্ট্র, সরকার ও দল এখন একাকার।
[৬] তিনি বলেন, মানুষ এখন স্ব-ইচ্ছায় চলতে পারে না, পছন্দমত ব্যক্তিকে ভোট দিতে পারে না। মানুষ কোন দাস নয়, কিন্তু শেখ হাসিনা চায়, তার কাছে মানুষ স্বেচ্ছাদাসত্ব করুক। মানুষ নিজের স্বাধীনতা সমর্পণ করুক তার কাছে। শেখ হাসিনা স্বাধীনতা বলতে বোঝেন অপরের উপর অধীনতা চাপিয়ে দেওয়া। এজন্যই তিনি সর্বমহলের দাবি অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনে বিশ্বাসী নয়। দেশের জনগণের ও আন্তর্জাতিক চাপকে পাত্তা দিচ্ছেন না তিনি।
[৭] তিনি বলেন, একনায়ক, একদলীয় স্বৈরশাসক, ফ্যাসিস্ট শাসন মানুষের স্বাধীনতা হারাবার একটি বর্বর শাসন। জবাবদিহিতা ও দায় ইত্যাদি ধার ধারে না কর্তৃত্ববাদী শাসকেরা। শেখ হাসিনা ১৫ বছরে নিষ্ঠুরভাবে গড়ে তুলেছেন দুঃশাসনের বাতাবরণ। শেখ হাসিনার দেশ শাসনের কোন বৈধ অধিকার নেই।
[৮] রিজভী বলেন, নির্বাচন কমিশন যে সরকারের পথরেখা অনুসারে চলবে তার প্রমাণ নিজেরাই দিচ্ছে। সরকারের সাজানো প্রশাসনের কোন রদবদল করবে না বলে জানিয়েছে, এটাই স্বাভাবিক। কারণ প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কমিশনারদের রক্ত পরীক্ষা করে কমিশনে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সুতরাং এটিই হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন একদলীয় বাকশালী নির্বাচন।
[৯] তিনি বলেন, দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ২০১৩ সালে হাই কোর্টে সংখ্যাগরিষ্ঠের রায়ে বাতিল করার বিরুদ্ধে সুপ্রীম কোর্টে যে আপীল করা হয়েছিল গতকাল তা ‘ডিসমিস ফর ডিফল্ট’ করা হয়েছে। আপীলকারী দল রায়টিকে ‘ন্যায় ভ্রষ্ট’ বলে উল্লেখ করে তাদেরকে সুবিচার থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ করেছে। সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ন্যায়ভ্রষ্ট রায় প্রদানের মাধ্যমে তাদের সুবিচার থেকে বঞ্চিত করার দৃষ্টান্ত নতুন নয় বলেই দেশবাসী এই রায়ে বিস্মিত না হলেও সুবিচার লাভে শেষ আশ্রয়স্থল বিচার বিভাগে যুক্ত ব্যক্তিগণের রাজনৈতিক পক্ষপাতমূলক বক্তব্য এবং ক্ষমতাসীন সরকারের ইচ্ছা পূরণে সহায়তা করবে ঘটনায় হতাশ হয়ে পড়ছে।