স্বাধীনতার ৫৪ বছরে ভারতের সাথে সখ্য গড়ে ওঠেনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর। তবে জুলাই অভ্যুত্থানের পর পরিবর্তন এসেছে দেশের রাজনীতিতে। ভারতে অবস্থান করছেন দেশটির পরম বন্ধু ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সাথে নিষিদ্ধ রয়েছে তার দল আওয়ামী লীগের কার্যক্রম। এমত অবস্থায় বাংলাদেশের নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর থেকেই যেন দুশ্চিন্তায় ভারত। সূত্র: ইনকিলাব
এমনকি তাদের একটি আলোচনায়ও উঠে এসেছে বাংলাদেশের নির্বাচনের ইস্যু, যেখানে জামায়াত নিয়ে বিভিন্ন শোর শোনা যায় তাদের কণ্ঠে। তাতে কৌতূহল তৈরি করে, এবার কি জামায়াতের সাথে হাত মেলাতে চায় ভারত? গেল বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি বাংলা, যেখানে বলা হয়, পাবলিক ইউনিভার্সিটির ছাত্র সংসদ নির্বাচনে যেভাবে জামায়াত দাপুটে জয় পাচ্ছে সে বাস্তবতায় দিল্লির কোনো কোনো পর্যবেক্ষক মনে করছেন, বর্তমান বাংলাদেশে জামায়াত একটি শক্তিশালী দল।
সম্প্রতি একটি ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রফেসর শ্রীরাধা দত্ত জানান, তার চোখে ধরা পড়েছে জামায়াতের সূক্ষè কিছু পরিবর্তন। আগে যেখানে জামায়াত নেতারা ধর্মীয় পোশাকের আদলে রাজনৈতিক কার্যক্রমে মনোনিবেশ করতেন, এখন জামায়াত নেতাদের চেঞ্জ বা টি শার্ট পরে টেলিভিশন টক শো-তে আসতে দেখা যাচ্ছে। আগস্টে শ্রীরাধা দত্তের সাথে বৈঠকে বসেছিলেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ড. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
সেখানে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার সাথে শরীয়া আইনের প্রয়োগ প্রসঙ্গে প্রশ্ন আসলে উনি সরাসরি সেকথা নাকচ করেন। মুক্তিযুদ্ধ জামায়াত নিয়ে আলোচনা দীর্ঘ দিনের। এ নিয়ে প্রশ্ন করলে মতিউর রহমান নিজামী বা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর একাত্তরে জামায়াতের অবস্থান নিয়ে ক্ষমা চাওয়ার কথাও তুলে ধরেন সৈয়দ আব্দুল্লাহ এবং তারা সেটি মেনে নিয়েছেন বলে তিনি জানান।
এর মধ্যে চমকপ্রদ খবর হল, জামায়াত ভারতের সাথে সম্পর্ক তৈরি করতে চায়। মুক্তিযুদ্ধ প্রশ্নে জামায়াতের আপত্তির জায়গা কেবল একটি জায়গায়। তাদের দাবি, মুক্তিযুদ্ধের পুরো অর্জনই ছিল সব মানুষের অবদান। কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের সব অর্জন তার নিজের বলে হাইজ্যাক করে নিয়েছিলেন। তবে জামায়াতের কথা ও কাজ নিয়ে দ্বিধা আছে শ্রীরাধা দত্তের। তার মতে, জামায়াত নেতারা কথা বলেন দুর্দান্ত, কিন্তু আদতে তারা কী চায় তা পর্যবেক্ষণ করা জরুরি।
অন্যদিকে ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা জামায়াত নিয়ে তার মতামত বদলাতে নারাজ। তার ধারণা, জামায়াত কোনোদিন বদলাতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।