মুজিবুল হক চুন্নুকে বাদ দিয়ে দলের তরুণ নেতা শামীম হায়দার পাটোয়ারীকে জাতীয় পার্টির মহাসচিব পদে নিয়োগ দিয়েছেন দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। জাপার সম্মেলন ঘিরে দলের নেতাদের দুটি পক্ষের চলা উত্তেজনার মধ্যে এই সিদ্ধান্ত জানালেন তিনি।
আজ সোমবার জাপার পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের প্রেস সচিব খন্দকার দেলোয়ার জালালী বার্তাটি পাঠিয়েছেন।
জাতীয় পার্টির নেতৃত্ব নিয়ে দলটির জ্যেষ্ঠ নেতাদের দুটি অংশের মধ্যে একধরনের উত্তেজনা চলছে। গত মাসে দলের সম্মেলনের ঘোষণাকে ঘিরে বিষয়টি অনেকটা প্রকাশ্যে চলে আসে। সেই উত্তেজনার মধ্যেই জি এম কাদের দলের মহাসচিব পদে শামীম হায়দার পাটোয়ারীকে নিয়োগ দিলেন।
শামীম হায়দার পাটোয়ারী জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
গত ২৮ জুন বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় পার্টির সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। সম্মেলনের জন্য মিলনায়তন না পাওয়ার কথা উল্লেখ করে ১৬ জুন জি এম কাদের সম্মেলন স্থগিত করেন। কিন্তু দলের দুই কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও রুহুল আমিন হাওলাদারের নেতৃত্বে জ্যেষ্ঠ নেতাদের একটি অংশ আগের ঘোষিত তারিখেই সম্মেলন করার ঘোষণা দেন। যদিও পরে তাঁরা সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব পদে নিয়োগ পাওয়া শামীম হায়দার পাটোয়ারী সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী। ২০১৮ সালের মার্চে গাইবান্ধা–১ আসনের উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। এরপর ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের বিতর্কিত নির্বাচনেও তিনি একই আসন থেকে সংসদ সদস্য হন। সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে একই আসনে জাতীয় পার্টির মনোনয়নে নির্বাচন করে হেরে যান তিনি।
শামীম হায়দার পাটোয়ারী একসময় জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি জাতীয় পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব এবং গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন।
এত দিন জাতীয় পার্টির মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন আরেক সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুল হক (চুন্নু)। এরই মধ্যে সোমবার বিকেলে হঠাৎই বর্তমান মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে বহিষ্কার করে শামীম হায়দার পাটোয়ারিকে মহাসচিব করা হয়েছে বলে দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সর্বশেষ, ২০১৯ সালে এরশাদ মারা যাওয়ার পর সবশেষ ২০২৪ সালের ২০ এপ্রিল তার স্ত্রী রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির একটি অংশ ভাগ হয়ে যায়। এবারও জিএম কাদের সম্মেলন ডাকতে গড়িমসি করলে সপ্তমবারের মতো দল ভাঙনের মুখে পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।