সৈয়দা সাজিয়া আফরিন: এ তল্লাটে ‘নিরাপদ’ বলা যায় বা সুযোগ পেলে সুযোগ নেবে না এরকম কোনো পুরুষ নেই। পুরুষ নিজের গায়ে যে লেভেলই আঁটেন না কেন। সেটা মুক্তমনা নারীবাদী, প্রগ্রেসিভ অথবা নামাজি কালামি ধার্মিক। আমার বিশ্বাস করতে সমস্যা আছে যে সে অলরেডি নির্যাতক নয় অথবা সুযোগের সন্ধানে নেই। ‘পুরুষ’ ব্যাপারটা হলো লৈঙ্গিক ক্ষমতা, সামাজিক সংখ্যাগরিষ্ঠতা, রাজনৈতিক ক্ষমতা, অর্থনৈতিক এমনকি ভৌগলিক রিসোর্সও একা ভোগকারী, যাকে প্রচণ্ড সুবিধাখোর বলা যায়। নারীও কখনো কখনো পুরুষের ছায়াতলে বেড়ে উঠে পরজিবী ক্ষমতাশালী হয়ে উঠেন। পুরুষ তাদের ক্ষমতার জন্য এসব নারীকে থ্রেট মনে করে না। তাই পুরুষ কিছু সুবিধার উচ্ছিষ্ট এসব নারীকে দেয়। তারা বনে যায় প্রগ্রেসিভ পুরুষ। কারণ তারা জানে এসব নারী পুরুষকে শ্রেষ্ঠত্ব দিতে জীবন বাজি ধরবে।
তবে এসব নারী পুরুষের চেয়ে দ্বিগুণ নারীবিদ্বেষী হয়ে থাকেন। কারণ তারা অন্য নারীকে তার প্রতিযোগী এবং সুবিধাভোগের জন্য থ্রেট মনে করে। তারা হলেন লাইফ স্প্রিংয়ের সুষমা রেজা গং। এরা স্ত্রী হিসেবে ইনসিকিউর, কর্মী হিসেবে ইনসিকিউর, তারা পুরুষতন্ত্রের যে সুবিধাটা ভোগ করতেসে তা অব্যাহত থাকবে কি না তা নিয়ে ইনসিকিউর। এসব নারী পুরোপুরি নারী না, তারা ‘হাফ পুরুষ’। তাই সর্বহারা, নিপীড়িত নারীর জন্য তাদের সহমর্মিতা নেই। তারা স্বামীর জুতোর পাশাপাশি কুপ্রথাকেও চাটে। চাটার প্রতিযোগিতায় ছাঁটতে চায় ‘অন্য নারী’। বাহু ও পেনিসবলে বিশ্বাসী পুরুষের আইনের প্রয়োজন পড়েছে নারীকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য নয়। নিজ নারী বা তার সম্পত্তিভুক্ত নারীকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্যই তাদের আইনের প্রয়োজন পড়েছে নিয়মের প্রয়োজন পড়েছে। যেহেতু নারী একটি দ্রুত পচনশীল জিনিস এবং এই পচনের সঙ্গে পুরুষের অহম জড়িত তাই নিপীড়িত নারীর মালিক পুরুষের চেয়ে নিপীড়ক পুরুষ বেশি ক্ষমতাশালী। এ কারণেই আজ পর্যন্ত একটা অনার কিলিং হয়নি যেখানে সম্মান রক্ষার্থে পুরুষকে হত্যা করা হয়েছে। অথচ পুরুষও নানা অনাচার করে পরিবারের সম্মান নষ্ট করে। পুরুষ অনার কিলিংয়ের শিকার নয়। কারণ পুরুষ পচনশীল নয়।
প্রকৃতির রিসোর্স, ভৌগলিক একসেস, টাকা, ক্ষমতা সবই পুরুষের দখলে। নারী সে ক্ষমতার ধারেকাছেও যেতে পারেনি। যদিও নারী ছোটখাট পদ পেয়ে, ঘর সামলাই ব্যবসাও সামলাই টাইপের ব্যবসা পেয়ে আত্মতুষ্টিতে ভুগতেসে। আত্মতুষ্টিতে ভোগার কারণটাও হলো তারা প্রতিযোগী মনে করতেসে পিছিয়ে থাকা নারীকে যারা প্রতিযোগিতার ফিল্ডে নামেও নেই। সামান্য প্রগ্রেসিভ ভাষণ দিলেই নারীর পুরুষের জন্য প্রেম পাচ্ছে। এগুলো অসুখ। এর চিকিৎসা প্রয়োজন। যুদ্ধ জয়ের আগেই নারী সমান সমান অনুভব করে যার সঙ্গে প্রেম দেওয়া-নেওয়া করে প্রতারিত হওয়ার পর নারী দেখে তার পাশে কেউ নেই। অথচ পুরুষের সঙ্গে আছে তাবৎ পুরুষ ও কিছু পুরুষতান্ত্রিক নারীও। প্রেম প্রেম অসুখের চিকিৎসা নেন। চিকিৎসা নেন ওই আত্মতুষ্টিরও যা অন্য নারীকে প্রতিযোগী ভেবে অনুভব করেন। লেখক: উইম্যানভয়েসবিডি.ডটকম
আপনার মতামত লিখুন :