শিরোনাম
◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু, মানতে হবে কিছু নির্দেশনা ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ চেক প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ প্রফেসর ইউনূসকে প্রদত্ত "ট্রি অব পিস" প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য: ইউনূস সেন্টার ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করে দেশে ফিরলেন ভুটানের রাজা

প্রকাশিত : ০৭ ডিসেম্বর, ২০২২, ০২:৪৪ রাত
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর, ২০২২, ০২:৪৪ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ইরানের ফ্যাসিজমবিরোধী আন্দোলন ও আনন্দবাজারের স্বাধীনতা

কাকন রেজা

কাকন রেজা: ইরানের ফ্যাসিস্ট শাসকরা পিছু হটছে। তিন শতাধিক প্রাণের বিনিময়ে আংশিক সফলতা এসেছে আন্দোলনে। কিন্তু মূল সফলতা আসতে এখনো দেরি। ফ্যাসিজমের একটা শাখা কেবল ছেঁটে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। কিন্তু ফ্যাসিজমের মূল উৎপাটন করা যায়নি। বারবার বলে এসেছি এ আন্দোলন হিজাবের বিরুদ্ধে ছিলো না, ছিলো ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে। ফ্যাসিস্ট শাসকদের নিপীড়নের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ। এ আন্দোলন কেন হিজাবের বিরুদ্ধে নয় তা বলতে গিয়ে বলেছি, খোদ যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ইরানিরা আন্দোলনে শরিক হয়েছে, প্রতিবাদ করেছে। সে প্রতিবাদে অনেক নারী হিজাব পরেই অংশ নিয়েছেন। তাদের প্রতিবাদ যদি হিজাবের বিরুদ্ধে হতো, তাহলে তারা যুক্তরাষ্ট্র্রের মতন মুক্তমতের দেশে হিজাব পরে সেই প্রতিবাদে অংশ নিতেন না। সেই প্রতিবাদের ছবি প্রকাশ করেছে বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যম। হিজাব পরে আন্দোলনে তাদের সমস্যা নেই, সমস্যা সব ভারত বাংলাদেশে। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের একটা অংশ এই আন্দোলনকে হিজাব বিরোধী আন্দোলন হিসেবে তকমা দিতে রীতিমতো প্রাণপাত করছে। ডিসেম্বরের ৪ তারিখে আনন্দবাজারের শিরোনামটি পড়লেই বিষয়টি অনেকটা পরিষ্কার হয়ে যাবে। আনন্দবাজার লিখলো, ‘আবার কি বিকিনি পরে সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে পারবেন ইরানি নারী? 

হাতছানি দিচ্ছে স্বাধীনতা’! বুঝলেন তো, পশ্চিমবঙ্গবাসী কথিত বিপ্লবীদের স্বাধীনতার পরিধি। তাদের কাছে বিকিনি পরে সমুদ্র সৈকতে বেড়ানোটাই স্বাধীনতা। মানুষের মৌলিক অধিকার, যার মধ্যে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা অন্যতম সেগুলো আনন্দবাজারের ভাষায় স্বাধীনতা নয়। তাদের স্বাধীনতা নারীদেহ প্রদর্শনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আর সে কারণেই ভারতীয় নারীদের পণ্যে পরিণত করা হয়েছে। কতটুকু খুললে টিআরপি বাড়বে টেলিভিশনগুলোর, কতটা খুললে বেশি চলবে সিনেমা এই তাদের চিন্তা। উরফি জাভেদ হিট। এমনকি যারা মুখে কম্যুনিজমের কথা বলেন, তারাও মস্তিষ্কের গোপন অলিন্দে ধারণ করেন কর্পোরেট চিন্তা। রাশিয়া সমকামিতা যে ভাষায় নিষিদ্ধ করেছে তা ইরানকেও ছাড়িয়ে গেছে, কিন্তু তা নিয়ে প্রতিবাদ নেই। প্রতিবাদ রয়েছে বিশ্বকাপে সমকামিতা নিষিদ্ধ করায় কাতারের বিরুদ্ধে। পচে যাওয়া এসব কথিত রাম-বামেদের ডাবল স্ট্যান্ডার্ডের ফলে দু’দেশের মানুষের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হচ্ছে এবং গত এক যুগে সেই ক্ষুণ্নতা আতঙ্কের পর্যায়ে পৌঁছেছে। মূলত আনন্দবাজারী আর পশ্চিমবঙ্গের কথিত কম্যুনিস্টরা মাঠের লড়াইয়ে আলাদা কিন্তু ঘরের আপোসে এক। কীভাবে একটু বলি। ইরানের মানুষের আন্দোলন তাদের শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে।

পশ্চিমা গণমাধ্যমের দিকে নজর দিলেই তা পরিষ্কার হয়ে ওঠে। মূলত ফুসে উঠার একটা উপলক্ষ লাগে এবং তা ছিলো মায়শা আমিনি। মানুষ দীর্ঘদিন নির্যাতন সয়ে সয়ে ভেতরে ভেতের তেতে ছিলো। যখনই প্রকাশ করার মতন একটা অবলম্বন পেয়েছে তখনই রিভোল্ট করেছে। আমরা যেমন আমাদের মুক্তিযুদ্ধে বলেছিলাম ‘উই রিভোল্ট’ অনেকটা তেমনি। এই ‘রিভোল্ট’কে উল্টোধারায় প্রবাহিত করার চেষ্টায় রয়েছে আনন্দবাজারীরা। তারা তাই শাসকগোষ্ঠীকে আড়াল করে, ফ্যাসিজমকে আড়াল করে হিজাবকে ফোকাস করার চেষ্টা করছে। যাতে এই উছিলায় পশ্চিমবঙ্গ এবং প্রতিবেশী দেশের মুসলিম সম্প্রদায়কে চাপে রাখা যায়। তারা যেন দুর্বল হয়ে পড়ে এবং হিন্দুত্ববাদ আর ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারে। মানুষ যেন মানুষ পরিচয়ে এক হতে না পারে। বাজারী এসব রাম-বাম ও তাদের ছুপা ও দৃশ্যমান অনুসারীদের প্রাণপাত চেষ্টা মানুষের মাঝে বিভেদ সৃষ্টির। মূলকথা হলো ফ্যাসিজমকে দীর্ঘায়িত করা। উত্তর কোরিয়া, বেলারুশ, মিয়ানমার, ইরান, রাশিয়া তাদের আদর্শ। কিম আর পুতিন তাদের আদর্শিক নেতা। মুখে সাধারণ মানুষের অধিকারের পক্ষে কথা বললেও তাদের রাতের আপোস ফ্যাসিস্টদের সাথে। ওই যে, হেলাল হাফিজ বলেছিলেন না, ‘রাইত হইলে অমুক ভবনে বেশ আনাগোনা খুব কানাকানি’, অবস্থা সে রকম আর কী। লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়