শোয়েব সর্বনাম: চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস সোফায় বসে আছে। তার সামনে ক্যামেরা ও সাংবাদিকদের ভীড়। কথা নাই বার্তা নাই এক বিনোদন সাংবাদিক হুট করে গিয়ে তার পাশে বসে পড়েছে। অপু বিশ্বাস তাতে অস্বস্তিবোধ করেন। সাংবাদিককে সরে বসতে বলেন। সাংবাদিক সমাজ তাতে ক্ষেপে ওঠে। ফাইনালি অপু বিশ্বাসকে ক্ষমা চাইতে হয় এই বিনোদন সাংবাদিকদের কাছে। একবার অভিনেত্রী তানজিন তিশা আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। হাসপাতালে ভর্তি। এ পরিস্থিতিতে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে রাজি হননি। তাতে হিট ইউটিবাররা শুরু করেন সাইবার বুলিং। অভিনেত্রি পুলিশের কাছে অভিযোগ জানালে একদল বিনোদন সাংবাদিক বিজয় স্বরণিতে গিয়ে তানজিন তিশার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে দেয়। পত্রিকায় নিউজ করে তাকেও ক্ষমা চাইতে বাধ্য করে।
কিছুদিন আগে আরেক অভিনেত্রি মিডিয়াতে কথা বলতে গেলে এক সাংবাদিক অনুমতি না নিয়েই কথার মাঝখানে হুট করে ভয়েস গ্রহণের ডিভাইস তার শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে নিজেই লাগায়ে দিতে যায়। অভিনেত্রি আপত্তি করেন। গোলমাল বাঁধে। পরে তাকেও ক্ষমা চাইতে হইছে। অভিনেত্রি ময়ূরী শিল্পী সমিতির নির্বাচনে ভোট দিতে গেছেন, সাথে তার কন্যা। বিনোদন সাংবাদিক তার কন্যাকে প্রশ্ন করছেন, তোমার মায়ের আইটেম সংগুলো তুমি দেখেছো? সাংবাদিকের এ প্রশ্নে অভিনয়শিল্পীরা অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পরে। কেউ কেউ ক্ষেপে গিয়ে সাংবাদিকদের মারধোর করে। এক সাংবাদিক আহত, হাসপাতালে। অভিযোগ উঠছে, শিল্পীরা সাংবাদিককে মারবে কেন? বিচার চাই। সব সাংবাদিকেরা উঠেপওে লাগছে। সদ্যনির্বাচিত সেক্রেটারি ডিপজল সাংবাদিকদের কাছে দুঃখপ্রকাশ করলেন।
প্রশ্ন হচ্ছে, একজন শিশুকে অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া কীভাবে সাংবাদিক আপত্তিকর প্রশ্ন করতে পারে? এইটা তো ডিরেক্ট চাইল্ড এবিউজের আওতায় পরে। সাংবাদিকের কেন ওই শিশুর মনস্তত্ত্বে আঘাত করতে হবে। সে কি এই বিষয়ে কথা বলতে রাজি ছিল? তার অভিভাবকের অনুমতি নেয়া হইছে? কেন এই জবরদস্তি? বিনোদন সাংবাদিকরা একের পর এক শিল্পীর সাথে আপত্তিকর আচরন করে যাচ্ছে, আবার শিল্পীদেরকেই ক্ষমা চাইতে বাধ্য করতেছে। বাস্তবতা হচ্ছে, সব সাংবাদিক এইরকম না। এই সবগুলা ঘটনা ঘটায়ে যাচ্ছে বিনোদন সাংবাদিকদের একটা নির্দিস্ট সিন্ডিকেট। এই নিউজগুলা ওই সিন্ডিকেটের নিজস্ব দু চারটা পত্রিকাতে আসে। আর এই সিন্ডিকেটের সাংবাদিকগুলার অত্যাচারে আক্রান্ত হয় সাংবাদিকদের এবং মিডিয়াকর্মিদের সকলে।
আমি যে কয়টা ঘটনা হাজির করলাম তার সবগুলাই সোশাল মিডিয়াতে ডিটেইল আছে। গত একবছরের ঘটনা এইগুলা। এর বাইরে সোশ্যাল মিডিয়া পর্যন্ত আসে নাই এমন ঘটনাও প্রচুর আছে। পরিস্থিতি এখন মারধোরে গিয়ে ঠেকছে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এ ধরনের পরিস্থিতিতে আসলে শিল্পীদের করণীয় কী? লেখক : কবি ও কথাসাহিত্যিক
আপনার মতামত লিখুন :