শিরোনাম
◈ স্যার পাঁচ বছর, স্যার পাঁচ বছর’ ◈ ট্রাম্পের সঙ্গে বাবার বিরোধ নিয়ে যা বললেন ইলন মাস্ক-কন্যা ◈ ঢাকায় কোরবানির মাংসের অস্থায়ী বাজার: ২০০-৭৫০ টাকায় মিলে ১ কেজি গরুর মাংস ◈ বাংলাদেশের শুল্কমুক্ত বাজারে ভারতের গার্মেন্টস আগ্রাসন! ◈ ফ্রিজে মাংস সংরক্ষণ: টিপস, তাপমাত্রা ও সতর্কতা ◈ রাজধানীতে কোরবানির সময় গরুর লাথি ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত শতাধিক ◈ শহরের ঈদ আনন্দে বর্জ্যের গন্ধ থাকবে না — স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা ◈ কোরবানির পশুর বর্জ্য ১২ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণ করাই এবার বড় চ্যালেঞ্জ ◈ এপ্রিল মাস জাতীয় নির্বাচনের জন্য উপযোগী নয়: মির্জা ফখরুল (ভিডিও) ◈ কোরবানির মৌসুমে ঢাকামুখী দুই হাজার দিনাজপুরের কসাই, জনপ্রতি লক্ষাধিক টাকার আয় লক্ষ্যমাত্রা

প্রকাশিত : ০৭ জুন, ২০২৫, ০৪:২৬ দুপুর
আপডেট : ০৭ জুন, ২০২৫, ১১:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কোরবানির পশুর বর্জ্য ১২ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণ করাই এবার বড় চ্যালেঞ্জ

বিগত কয়েক বছরের মতো এবারও পশু কোরবানির জন্য নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করে দেয়নি রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন। ফলে নগরবাসী যে যার পছন্দমতো স্থানে পশু কোরবানি করছেন। বাড়ির আঙিনায়, অলিগলি বা প্রধান সড়কেও চলছে পশু কোরবানি। ফলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বর্জ্য অপসারণ নিয়ে চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়তে পারে দুই সিটি করপোরেশন। যদিও উভয় সিটি করপোরেশনই বলছে, বর্জ্য অপসারণের জন্য তারা প্রয়োজনীয় জনবল ও যন্ত্রপাতি প্রস্তুত রেখেছে। 

শনিবার দুপুরের পরই শুরু হবে বর্জ্য অপসারণের কার্যক্রম। আগামীকাল রোববারের মধ্যেই রাজধানী সম্পূর্ণ কোরবানির বর্জ্যমুক্ত করা হবে বলে জানানো হয়েছে। 
 
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন বলছে, এবার রাজধানীতে সাত লাখের মতো পশু কোরবানি হতে পারে। এতে ৫০ হাজার টন বর্জ্য তৈরি হবে। অতীতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে পশু বর্জ্য অপসারণের মোটামুটি সন্তোষজনক দৃষ্টান্ত দেখাতে পেরেছে দুই সিটি করপোরেরশন। তখন বর্জ্য অপসারণের কার্যক্রমগুলো কঠোরভাবে তদারকি করতেন কাউন্সিলররা। এমনকি মেয়ররাও মাঠে থাকতেন। এবার মেয়র ও কাউন্সিলরশূন্য উভয় সিটি করপোরেশন। বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র পদে বসানোকে কেন্দ্র করে গত ১৪ মে থেকে বন্ধ ছিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) যাবতীয় কার্যক্রম। ডিএসসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মচারীরাও সেই আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন। কাজেই তারা কতটা আন্তরিকভাবে পরিচ্ছন্নতার কার্যক্রমে সক্রিয় থাকবেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এমনিতেই অবকাঠামো এ ভৌগোলিক কারণে ডিএসসিসি এলাকার বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম একটা বড় চ্যালেঞ্জ। এছাড়া দীর্ঘদিন নগর ভবন অচল থাকায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমেও ভাটা পড়েছিল। রাজধানীতে প্রচুর বর্জ্য এমনিতেই জমা হয়ে আছে। তার ওপর কোরবানির বর্জ্য যুক্ত হচ্ছে। এ অবস্থায় ডিএসসিসির প্রশাসক মোঃ শাহজাহান মিয়ার ১২ ঘণ্টার মধ্যে পশুর বর্জ্য অপসারণের অঙ্গীকার কতটা আলোর মুখ দেখে তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে নগরবাসীর।

অন্যদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) মোহাম্মদ এজাজ প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই অতিমাত্রায় সক্রিয় ছিলেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠার পর তার কার্যক্রমে ধীরগতি পরিলক্ষিত হতে শুরু করে। গণঅধিকার পরিষদ নামের একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ডিএনসিসি নগর ভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে মোহাম্মদ এজাজের পদত্যাগ দাবি করে। এ ঘটনায় প্রায় টানা এক সপ্তাহ নগরভবনেই যাননি মোহাম্মদ এজাজ। 

এছাড়া তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর একক সিদ্ধান্ত গ্রহণের কারণে কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সঙ্গে তার বড় একটি দূরত্ব তৈরি হয়। ফলে ডিএনসিসির কার্যক্রমেও অনেকটা স্থবিরতা নেমে আসে। তার ওপর সবচেয়ে বড় বিষয় হলো বিগত ৫ আগস্টের অভ্যুত্থানের সময় বিক্ষোভকারীরা ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের প্রায় দুই শতাধিক যানবাহনে আগুন লাগিয়ে ভস্মীভূত করে। সেই ঘাটতি এখনও পূরণ করতে পারেনি দুই সিটি করপোরেশন। এ অবস্থায় বিদ্যমান যান-যন্ত্রপাতি দিয়ে এই বিপুল পরিমাণ পশুর বর্জ্য অপসারণ মোহাম্মদ এজাজের ১২ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের দৃঢ় ঘোষণা কতটা সফলতা বয়ে আনবে তা নিয়েও সংশয় আছে।
 
অন্যবার কোরবানির পশুবর্জ্য সংরক্ষণ ও পরিবেশ রক্ষায় কাউন্সিলরদের মাধ্যমে প্রতিটি হোল্ডিংয়ে পলিব্যাগ ও ব্লিসিং পাউডার বিতরণ করা হতো। নির্দিষ্ট স্থানের পরিবর্তে যারা বাসাবাড়িতে পশু কোরবানি করতেন, তারা সেই ব্যাগে পশুর বর্জ্য ঢুকিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে রাখতেন। সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা সেগুলো সংগ্রহ করে এসটিএস (সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন) ও সেখান থেকে মাতুয়াইল বা আমিনবাজার ল্যান্ডফিলে নিয়ে যেতেন ডাম্প ট্রাকে করে। এবার সে কাজেও ঘাটতি আছে। 

যদিও সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে পলিব্যাগ বিতরণের দাবি করা হয়েছে। কিন্তু সেই পলিব্যাগ সাধারণ নগরবাসীর কাছে খুব একটা পৌঁছেছে বলে খবর পাওয়া যায়নি। কাজেই যারা অসচেতন নগরবাসী তাদের দেওয়া কোরবানির পশুবর্জ্যর স্থান হবে বাড়ির আশপাশের ড্রেন, নালা বা খাল। এতেও পরিবেশটা কতটা পরিচ্ছন্ন থাকবে তা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে। 

তবে আশার কথা হলো, এবার প্রথমবারের মতো ঈদে ১০ দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। এ কারণে রাজধানী এখন ব্যাপক মাত্রায় ফাঁকা। জনগণের ঘনত্বও কমে এসেছে। কিন্তু যারা নগরে রয়ে গেছেন, তারা তো এই বর্জ্যদূষণের কবল থেকে রেহাই পাবেন কী করে? উৎস: সমকাল।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়