এম এম লিংকন, শিমুল চৌধুরী ধ্রুব: [২.১] শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে দেশের সাতক্ষীরা, কুয়াকাটাসহ উপকূলবর্তী এলাকাগুলোতে ঘর-বাড়ি, গাছ-পালা ভেঙে পড়ার খবর পাওয়া গেছে।
[২.২] ৫-৬ ফুট উপরে উঠছে জোয়ারের পানি। সুন্দরবনসহ সাতক্ষীরা, ভোলা, চরফ্যাশন, কুয়াকাটার বেশ কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকা এসব এলাকার লাখো মানুষ নিকটবর্তী আশ্রয় কেন্দ্রে ছুটে গেছে। পানিবন্দি হয়েছেন ১০ লাখ মানুষ।
[৩] আবহাওয়া অধিদপ্তর রাত বারোটার দিকে ১৫ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ঘূর্ণিঝড় রেমাল উত্তর দিকে এগিয়ে এসে সর্বোচ্চ ৬ ঘণ্টার মধ্যে উপকূল ছাড়বে।
[৪.১] এই ঘূর্ণিঝড়ে সাতক্ষীরায় একজন ও পটুয়াখালীতে একজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান ।
[৪.২] রাত একটার দিকে জানা যায়, কুয়াকাটায় আরো একজন মারা গেছেন।
[৫] প্রতিমন্ত্রী জানান, উপকূলের প্রায় ৯ হাজার আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষ পৌঁছে গেছে। সব আশ্রয়কেন্দ্রে খাবার, পানি ও চিকিৎসা সামগ্রীর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
[৬.১] এদিকে রোববার রাতে ঘূর্ণিঝড় রেমালের চোখ ফোটার খবর জানার পর সবার আশংকা বেড়ে গিয়েছিলো, কারণ চোখ ফুটলে ঝড়ের শক্তি বেশি হয়।
[৬.২] চোখ বা কেন্দ্র। এ সম্পর্কে বিডব্লিউওটির প্রধান আবহাওয়া গবেষক খালিদ হোসেন বলেন, একটি সাইক্লোন যখন সংঘটিত হয় তখন আশপাশের মেঘগুলো ছড়ানো ছিটানো অবস্থায় থাকে। মেঘগুলো যখন ধীরে ধীরে সংকুচিত হয়ে আসে তখন এর প্রধান কেন্দ্র প্রচণ্ড গরম থাকে।
[৬.৩] গরমের ফলে ওই জায়গায় প্রচণ্ড শক্তি তৈরি হয়। এর ফলে নিচ থেকে জলীয় বাষ্পগুলো উপরের দিকে উঠে আসে। তখন উপরের জায়গা পরিষ্কার হয়ে যায়। এমন অবস্থা তৈরি হলে চারপাশের মেঘগুলো ঘুরে ঘুরে মাঝখানে একটা চোখের মতো অবয়ব তৈরি করে। এটি মূলত একটি শক্তিশালী সাইক্লোনের লক্ষণ।
[৭.১] পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নদীর তীরের এক বাসিন্দা বলেন, খুব ভয়ংকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি। ঘরের চালা নিয়ে গেছে। নদীর পানি প্লাবিত হয়ে চারদিক তলিয়ে গেছে। গাছপালা ভেঙে তছনছ করে দিচ্ছে। কত শত ঘর ভেঙেছে, তার ধারণাও করা যাচ্ছে না।
[৭.২] রাঙ্গাবালী উপজেলার সাবেক ইউপি মেম্বার এমাদুল বেপারী বলেন, পুরো উপজেলা বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। পানি ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। রাত যত বাড়ছে মনে হচ্ছে যেন মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। জীবনে কখনো বন্যার এমন তাণ্ডব দেখিনি।
[৭.৩] ভোলা জেলার মনপুরা উপজেলার এক বাসিন্দা বলেন, অনেক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আসেনি। তাদের কী হাল হচ্ছে জানি না। আশ্রয়কেন্দ্রে থেকেই আতঙ্কে আছি। সকাল পর্যন্ত এই অবস্থা থাকলে আমরা কেউ বাঁচব না। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব
আপনার মতামত লিখুন :