পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সাম্প্রতিক সময়ের বিধ্বংসী ভূমিকম্পের পর যখন মানুষ এখনো আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে পারেনি, ঠিক তখনই ভবিষ্যতের ভয়াবহতা নিয়ে নতুন করে শঙ্কা জাগাচ্ছে বুলগেরিয়ান ভবিষ্যদ্বক্তা বাবা ভাঙ্গার এক ভবিষ্যদ্বাণী। তার অনুসারীরা বলছেন, ২০২৬ সালে বিশ্বব্যাপী একটি ‘মেগা-ভূমিকম্প’সহ বৃহৎ প্রাকৃতিক বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।
‘বলকানের নস্ট্রাডামুস’ নামে পরিচিত দৃষ্টিহীন এই মহিলা তার জীবদ্দশায় আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ৯/১১-এর হামলা, চেরনোবিল বিপর্যয়, প্রিন্সেস ডায়ানার মৃত্যু এবং ব্রেক্সিটের মতো একাধিক ঘটনার নির্ভুল পূর্বাভাস দিয়েছিলেন বলে দাবি করা হয়। তার এই ভবিষ্যদ্বাণীগুলো জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে প্রবল আলোড়ন সৃষ্টি করে। তবে সেগুলোর পক্ষে কোনো প্রমাণিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
বাবা ভাঙ্গার নাম ব্যবহার করে প্রচারিত বিভিন্ন অনানুষ্ঠানিক সূত্রে বলা হচ্ছে, আগামী ২০২৬ সালে বিশ্বজুড়ে বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে—মেগা-ভূমিকম্প, বৃহৎ আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুত্পাত এবং এর ফলে স্থলভাগের সাত থেকে আট শতাংশ পর্যন্ত অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা।
এ ছাড়া বন্যা, তীব্র খরা ও চরম আবহাওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলেও দাবি করা হচ্ছে।
তবে ভূমিকম্প ও জলবায়ুবিদ্যা বিশেষজ্ঞরা স্পষ্ট করে বলেছেন—এই ধরনের ভবিষ্যদ্বাণী বিশ্বস্ত কোনো তথ্য বা বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের ভিত্তিতে নয়। বাবা ভাঙ্গার ভবিষ্যদ্বাণী সম্পর্কিত কোনো নির্ধারিত দলিল নেই এবং তার নামে প্রচারিত অধিকাংশ কথাই মৌখিক বা জনপ্রিয় সংস্কৃতি থেকে ছড়ানো।
বলা হয়, বাবা ভাঙ্গা একবার বজ্রপাতের কবলে পড়ে তার দৃষ্টিশক্তি হারানোর পর প্রকৃতি তাকে ভবিষ্যতের ঘটনা দেখতে পাওয়ার ক্ষমতা দান করেছিল। তার ভবিষ্যদ্বাণীগুলো যেমন ভয় জাগানো, তেমনই তা উত্তেজনায় ভরা।
বিশেষজ্ঞরা আরও জানান, ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঠিক সময়, বছর বা তীব্রতা আগে থেকে নির্ভুলভাবে পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। তাই এমন দাবির ভিত্তিতে আতঙ্কিত না হয়ে বৈজ্ঞানিক তথ্য, দুর্যোগ মোকাবিলা প্রস্তুতি এবং অবকাঠামোগত নিরাপত্তা জোরদার করার ওপর গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।