আনন্দবাজার: ট্রাম্পের বক্তব্য, আমেরিকার চলচ্চিত্রের বাজার বিধ্বস্ত। এর নেপথ্যে বিভিন্ন দেশের ‘চক্রান্ত’ দেখতে পেয়েছেন তিনি। বিদেশে প্রযোজিত ছবিতে চড়া হারে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প।
বিবিধ বিদেশি পণ্যের উপর শুল্ক আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ বার তাঁর রোষের মুখে বিদেশি সিনেমা। আমেরিকার বাইরে প্রযোজিত যে কোনও সিনেমার উপর এ বার থেকে ১০০ শতাংশ কর আদায় করবে মার্কিন প্রশাসন। এমনটাই ঘোষণা করেছেন তিনি। ট্রাম্পের ঘোষণার পর বিদেশি ছবি থেকে শুল্ক আদায়ের প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। এই নতুন নির্দেশিকার প্রভাব পড়বে ভারতে প্রযোজিত ছবিগুলির উপরেও। এ দেশে প্রযোজিত ছবি আমেরিকায় মুক্তি পেলে বাড়তি কর দিতে হবে প্রযোজনা সংস্থাকে।
ট্রাম্পের বক্তব্য, আমেরিকার চলচ্চিত্রের বাজার বিধ্বস্ত। হলিউড এবং অনুরূপ জায়গাগুলি ধুঁকছে। এর নেপথ্যে বিভিন্ন দেশের ‘চক্রান্ত’ দেখতে পেয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। অভিযোগ, আমেরিকান স্টুডিয়ো এবং চলচ্চিত্র নির্মাতাদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে বাইরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এতে সেই নির্দিষ্ট দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হচ্ছে। আমেরিকার অর্থনীতির কোনও লাভ হচ্ছে না। সোমবার নিজের সমাজমাধ্যমে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘‘চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং স্টুডিয়োগুলিকে আমেরিকা থেকে বাইরে নিয়ে যাওয়ার জন্য অন্যান্য দেশ প্রলোভন দেখাচ্ছে। হলিউড এবং আমেরিকার অন্য অনেক জায়গা বিধ্বস্ত হয়ে পড়ছে। বিভিন্ন দেশ একত্রে এই কাজ করছে। ফলে এটি আমেরিকার জাতীয় সুরক্ষার বিরুদ্ধে হুমকির সমান।’’
গোটা বিষয়টিকে আমেরিকার সিনেমার বিরুদ্ধে ‘চক্রান্ত’ বলে উল্লেখ করেছেন ট্রাম্প। তাঁর নির্দেশ, ‘‘আমি বাণিজ্য দফতরকে বলব, বিদেশে প্রযোজিত যে সমস্ত ছবি আমাদের দেশে আসছে, অবিলম্বে সেগুলির উপর ১০০ শতাংশ কর আরোপ করা হোক। আবার বলছি, আমাদের চাই আমেরিকায় তৈরি সিনেমা।’’ ট্রাম্পের এই নির্দেশের পর বাণিজ্য দফতরের সচিব হোয়ার্ড লুটনিক জানিয়েছেন, তাঁরা এই কাজ শুরু করে দিয়েছেন।
ট্রাম্পের বক্তব্যে একটি বিষয়ে ধন্দ রয়ে গিয়েছে। বিদেশি প্রযোজনা সংস্থাগুলির উপর শুল্ক আরোপিত হবে না যে সমস্ত আমেরিকান বিদেশে গিয়ে ছবি বানাচ্ছেন, তাঁদের কর দিতে হবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়।
হোয়াইট হাউসে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই নতুন শুল্কনীতি অনুসরণ করছেন ট্রাম্প। যে সমস্ত দেশ আমেরিকার পণ্য থেকে চড়া হারে শুল্ক নিয়ে থাকে, সেই সমস্ত দেশের পণ্যেও পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন তিনি। যদিও ট্রাম্পের এই নতুন শুল্ক আপাতত ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রয়েছে। ব্যতিক্রম কেবল চিন। সে দেশের পণ্যে শুল্কের পরিমাণ কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প। পাল্টা চিনও শুল্ক বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেছে। মাসখানেক আগে চিন জানিয়েছিল, তাদের দেশে আমেরিকায় তৈরি সিনেমার প্রদর্শনের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তার পর বিদেশি সিনেমায় শুল্ক আরোপের কথা জানালেন ট্রাম্প।