চ্যাটজিপিটি প্রায়শই মিথ্যা কিছু তথ্য সত্য বলে প্রচার করে। সব সময় হালনাগাদ হওয়া তথ্য এর কাছে থাকে না বলা চলে। এছাড়া কোন কারণে সরাসরি ভুল হলেও অবিশ্বাস্যভাবে আত্মবিশ্বাসী থাকে।
প্রতিদিন বহু কাজেই এখন আমরা চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে থাকি। নতুন রেসিপি বানানো থেকে শুরু করে বিদেশি ভাষা শেখা কিংবা ছুটি কাটানোর পরিকল্পনার জন্য এটি বেশ মজার। তবে সব কাজের জন্য চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করা একদম উচিত নয়। এটা সব দিক দিয়ে উপযুক্ত ও না বলা চলে। এমনকি অনেক বিষয়ে চ্যাটজিপিটি নিঃসন্দেহে ঝুঁকিপূর্ণ।
কখন চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে এ বিষয়ে যদি ধারণা না থকে তাহলে এই পরিস্থিতিগুলো মাথায় রাখতে পারেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক, কোন কোন ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করা মোটেও উচিত নয়--
স্বাস্থ্য সমস্যা পরীক্ষা করা
চ্যাটজিপিটিকে বিভিন্ন উপসর্গ দিয়ে সম্ভাব্য রোগের তালিকা খুঁজতে গেলে ডিহাইড্রেশন আর ফ্লু থেকে শুরু করে ক্যান্সারের রোগী পর্যন্ত বানিয়ে দিতে পারে।
স্বাস্থ্য বিষয়ে চ্যাটজিপিটির ভালো ব্যবহার যে নেই এমনটি নয়, যেমন এটি ডাক্তারের কাছে পরবর্তী অ্যাপয়েন্টমেন্টের জন্য প্রশ্ন বানিয়ে দিতে পারে, চিকিৎসা সংক্রান্ত জটিল শব্দগুলো সহজ ভাষায় বুঝিয়ে দিতে পারে। তবে এটি ল্যাব টেস্ট করতে পারে না, শারীরিক পরীক্ষা করতে পারে না, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এটি কোনো ভুলের দায়ভার নেয় না। তাই এর সীমাবদ্ধতাগুলো অবশ্যই জানা উচিত।
মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া
এ বিষয়ে চ্যাটজিপিটি কিছু টেকনিক দিতে পারে কিন্তু মানসিকভাবে সত্যিকারের সংকটের সময় এটি ফোন তুলে পাশে দাঁড়াতে পারবে না। চ্যাটজিপিটির নিজস্ব কোনো অভিজ্ঞতা নেই, এটি শরীরি ভাষা ও কণ্ঠস্বর বুঝতে পারে না। একজন লাইসেন্সধারী থেরাপিস্ট আইনগত নীতিমালা ও পেশাগত আচরণ মেনে চলেন, যা রোগীকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। চ্যাটজিপিটির মধ্যে এসব নেই।
নিরাপদ সিদ্ধান্ত গ্রহণে
বড় ল্যাংগুয়েজ মডেলগুলো গ্যাসের গন্ধ পায় না, ধোঁয়া শনাক্ত করতে পারে না বা জরুরি সহায়তায় বাহিনী পাঠাতে পারে না। চ্যাটজিপিটি কেবল তাতে দেওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই কাজ করতে পারে। জরুরি পরিস্থিতিতে এর ব্যবহার ভয়ংকর হতে পারে।
আর্থিক কিংবা কর পরিকল্পনা করা
চ্যাটজিপিটি এক্সচেঞ্জ ট্রেড ফান্ড কী বুঝিয়ে দিতে পারবে কিন্তু এটা ব্যক্তির ধারদেনা ও আয় অনুপাত, দেশের ট্যাক্স রেট ইত্যাদি জানে না। চ্যাটবট কোনো লাইসেন্সধারী পাবলিক অ্যাকাউনটেন্ট নয় যে, এমন ভুল ধরিয়ে দেবে যাতে কয়েক লাখ বা কোটি টাকা ক্ষতির হাত থেকে বেঁচে যাবেন।
যখন আসল টাকা-পয়সা, ফাইলিংয়ের সময়সীমা বা আয়কর অফিসের করা জরিমানার মত বিষয় আসে তখন চ্যাটজিপিটির বদলে একজন দক্ষ মানুষের ওপর ভরসা রাখুন।
একান্ত তথ্য নিয়ে কাজ করা
আয়কর তথ্য, জন্মনিবন্ধন, ড্রাইভিং লাইসেন্স কিংবা পাসপোর্ট এ ধরনের একান্ত বা সংবেদনশীল তথ্য যদি চ্যাটজিপিটির প্রম্পটে দেওয়া হয় তাহলে এটা নিশ্চিত নয় যে তথ্যটি কোথায় সংরক্ষণ করা হচ্ছে বা ভবিষ্যতের মডেলে ট্রেইনিংয়ের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে কি না।
চ্যাটজিপিটি হ্যাকার বা সাইবার আক্রমণকারীদের থেকে মুক্ত এমনটিও নয়। তাই, যেসব তথ্য গণপরিসরে দিতে পারেন না, সেগুলো চ্যাটজিপিটিতেও দেবেন না।
এছাড়া বেআইনি কিছু করা, স্কুলের বাড়ির কাজ করা, হালনাগাদ তথ্য বা ব্রেকিং নিউজ জানা, জুয়া খেলা, উইল কিংবা আইনগত চুক্তির খসড়া করার মতো কাজে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার একেবারেই অনুচিত। এমনকি যদি কোনো শিল্পকর্ম তৈরি করতে চান যেটির কৃতিত্ব আপনি পেতে চান, সেটি তৈরিতেও এআই কিংবা চ্যাটজিপিটি ব্যবহার কখনোই করবেন না।