শিরোনাম
◈ অন্তর্বর্তী সরকারের ১২ মাসে ১২ সাফল্যের কথা জানালেন প্রেসসচিব ◈ এবার ভারতীয় মিডিয়ার রোষানলে শেখ হাসিনা! কাঠগড়ায় মোদি (ভিডিও) ◈ এক হচ্ছে দেশের তিন দ্বীপ, নতুন ভূমি, নতুন সম্ভাবনা: স্পারসোর গবেষণা ◈ ১০ বছরের সাজা থেকে খালাস পেলেন জি কে শামীম ◈ জুলাই অভ্যুত্থানের গেজেট থেকে ৮ শহীদের নাম বাদ দিয়ে গেজেট প্রকাশ ◈ ভারতীয় পণ্যে মার্কিন শুল্ক বাড়ানোর জবাবে মোদির হুঁশিয়ারি: চড়া মূল্য দিতেও প্রস্তুত, কিন্তু আপস নয় ◈ ট্রাম্পের ১৫,০০০ ডলারের ভিসা বন্ড কর্মসূচি কী – এবং কারা এটির প্রভাবের আওতায় পড়বেন? ◈ ধ্বংস ডেকে আনলেন নেতানিয়াহু, নিজের তৈরি ‘দানব’ এখন তার দিকেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে! ◈ যেসব যোগ্যতা বিবেচনায় দেওয়া হবে বিএনপির মনোনয়ন! ◈ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. কলিমউল্লাহ গ্রেপ্তার

প্রকাশিত : ০৭ আগস্ট, ২০২৫, ১১:৩২ দুপুর
আপডেট : ০৭ আগস্ট, ২০২৫, ০৪:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : এল আর বাদল

অন্তর্বর্তী সরকার চেষ্টা কর‌ছে নির্বাচ‌নে জামায়াত ও এনসিপিকে বিএনপির প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে গ‌ড়ে তুল‌তে

এল আর বাদল : জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশের আগে তার কপি মাত্র তিনটি দলকে দেয়া হয়েছে। অন্য দলগুলোর বেশিরভাগের প্রতিনিধি প্রধান উপদেষ্টার মঙ্গলবারের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও তারা বিষয়টি ভালোভাবে নেননি।
সিপিবিসহ কয়েকটি বাম দল ওই অনুষ্ঠান বর্জন করেছে। তারা বলছে  এটা বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথে বাধা। 
বিশ্লেষকরা বলছেন, আসলে এখন বহুদল বা দ্বিদলীয় গণতন্ত্রের পথে এগোনোর কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না। ----- সূত্র, ড‌য়ে‌চে‌ভে‌লে

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হওয়ার পর দেশের এখন সবচেয়ে বড় দল বিএনপি। কিন্তু পরের দলগুলো  বিএনপির কাছাকাছি তো দূরের কথা, বিএনপির সঙ্গে কোনো ধরনের প্রতিযোগিতাই গড়ে তুলতে সক্ষম নয়। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রবণতা হলো, জামায়াত ও এনসিপিকে বিএনপির প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে গড়ে তোলা। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন।

ঘোষণাপত্র প্রকাশের অনুষ্ঠানে ৫০টিরও বেশি দল ও সংগঠন অংশ নেয়। লোক সমাগমের উদ্দেশ্যে ঢাকার বাইরে থেকে লোক আনার জন্য ট্রেন ভাড়া করে দেয় সরকার।

গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হাসান ডয়চে ভেলেকে বলেন," আমরা ঘোষণাপত্র প্রকাশ অনুষ্ঠানে গিয়েছি। কিন্তু বিএনপি, জাময়াত ও জাতীয় নগরিক পার্টি (এনসিপি) - এই তিনটি দলকে আগে ঘোষণাপত্র দেয়া হয়েছে। আর কোনো দলকে দেয়া হয়নি। আমাদের খসড়াও দেয়া হয়নি। বলা হয়েছিল, ঘোষণার জন্য চূড়ান্ত করার পর দেয়া হবে, তা-ও  দেয়া হয়নি। যা ঘোষণা করা হলো তা আগে আমরা কিছুই জানতাম না।”

তার কথা, "এখানে আসলে এখন কোনো গণতন্ত্রের চর্চা হচ্ছে না। ‘একটি দল' যেরকম চায় সেরকমই হয়।  আর বিএনপিসহ দুই-একটি দলের সাথে কথা বলা হয়। আসলে এখানে এখন আর দ্বিদলীয়, বহুদলীয় গণতন্ত্র বলে কিছু নাই। ‘তারা' যা চায়, তাই হয়। তাদের মর্জিমাফিক সবকিছু হচ্ছে।

যারা বর্জন করেছে

জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ অনুষ্ঠান মূলধারার চারটি বাম দল দল-বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ, মার্কসবাদী) ও শরীফ নুরুল আম্বিয়ার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) বর্জন করেছে। তারা বলছে, আমন্ত্রণ জানানো হলেও তারা অনুষ্ঠানে যাননি৷ কারণ, জানতে চাইলে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন," আমরা সাক্ষী গোপাল হতে চাইনি বলেই ওই অনুষ্ঠানে যাইনি, বর্জন করেছি। কারণ  জুলাই আন্দোলন যারা করেছেন, তাদের সবার সঙ্গে আলোচনা করেই এই ঘোষণাপত্র তৈরি করা ছিল বাঞ্ছনীয়। কিন্তু তা করা হয়নি। আমাদের কোনো খসড়াও পাঠানো হয়নি।  আমাদেরকে শুধু সম্মতি নেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।”

"তারা একটা পাঠের আসর করলেন। তার জন্য ট্রেন ভাড়া করে বাইরে থেকে লোকজন আনলেন। আরো অনেক কর্মকাণ্ড করলেন, যা দেশের মানুষ ভালোভাবে নেয়নি। তারা কেন এটা করলেন, উদ্দেশ্য কী আমরা তা বুঝতে পারছি না। সরকার এক বছরে অনেক বিতর্কিত কাজ করেছে। ফলে, সরকার ডাকলেই এখন আমরা যাবো না। আমাদের বুঝে-শুনে যেতে হবে,” বলেন তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "বিশেষ দল ও বিশেষ গোষ্ঠীর প্রতি ওনাদের নজর আছে। সেই কারণে তারা (সরকার) বিশেষ দল বা গোষ্ঠীকে ডাকেন এবং তাদের সাথে পরামর্শ করেন।  ওনাদের বিশেষ কোনো চিন্তা প্রতিষ্ঠিত করাই ওনাদের বড় কাজ বলে আমার কাছে মনে হচ্ছে। ফলে, বহুদলীয় গণতন্ত্র তো দূরে থাক, গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে একটি ঐক্যের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল, তার মধ্যে বিভক্তির বীজ রোপণের চেষ্টা আমরা দেখতে পাচ্ছি।”

তবে এ প্রসঙ্গে বিএনপির যুগ্ম মহসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, "আসলে সরকার কোন দলকে আগে ঘোষণাপত্র পাঠাবে , কোন দলকে পাঠাবে না সেটা তাদের ব্যাপার। সেটা নিয়ে আমাদের কী বলার আছে। তবে সবার সঙ্গে আলোচনা করতে পারল ভালো হতো। হয়তো সময় বাঁচানোর জন্য এটা করা হয়েছে। আমরাও তো জুলাই ঘোষণার কিছু বিষয়ের সাথে একমত হতে পারছি না। তারপরও মেনে নিয়েছি। এখন নির্বাচন এসে গেছে। সবার সেদিকে মনোযোগ দেয়া ভালো।”

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন মনে করেন, "শুধু সব দল নয়, জুলাই আন্দোনে অংশ নেয়া সব পক্ষের মতামত নেয়া দরকার ছিল। শুধু আমাদের তিনটি দলের মতামত যথেষ্ট নয়।” তবে তিনি তাদের প্রতি সরকারে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ অস্বীকার করেন।

বহুদলীয় গণতন্ত্র, না এক দলের প্রাধান্য? 

বাংলাদেশে এখন বহুদলীয় গণতন্ত্রের বিষয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ৫৫টি। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত যা সিদ্ধান্ত তাতে আগামী নির্বাচনে তাদের অংশ নেয়ার সুযোগ থাকবে না। অন্যদিকে নতুন নিবন্ধন পাওয়ার আশায় আছে এনসিপিসহ বেশ কিছু রাজনৈতিক দল। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা বিভিন্ন সময়ে বৈঠকে যাদের ডাকেন, তাদের মধ্যে নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দল আমন্ত্রণ পায় না। আবার অনিবন্ধিত দল হলেও এনসিপি অন্তর্বর্তী সরকারের আছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে বলে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অভিযোগ। তাই এখন নতুন করে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে- বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের সম্ভাবনা কতটুকু? আওয়ামী লীগ না থাকায় ভোটের হিসাবে দ্বিদলীয় গণতন্ত্রেরই বা কতটুকু বিকশিত হওয়ার সুযোগ আছে?

বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, "এই সরকার কোলে-পিঠে করে এনসিপিকে বড় করার চেষ্টা করছে। আরেক দিকে ধর্মবাদী রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে তাদের আন-অফিসিয়াল বন্ডেজ বা অ্যালাইনমেন্ট দেখা যায়। আর বিএনপি যেহেতু বড় দল, প্রধান বিরোধী দল তাই কিছুটা চাপে পড়ে তাদের কিছুটা গুরুত্ব দেয়। এটা কোনো গণতান্ত্রিক আচরণ নয়। বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য এটা সহায়ক নয়।

ভোটের হিসাব কী বলছে? 

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৯টি আসনে ভোটগ্রহণ হয়। নোয়াখালী-১ আসনের বৈধ প্রার্থী মো. নুরুল ইসলাম মারা যাওয়ায় ওই আসনের ভোট বাতিল করে কমিশন। সেটাই ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সর্বশেষ ভোট।

সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ নিবন্ধিত ৩৮টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়। ভোটার ছিলেন আট কোটি ৮৭ হাজার ৩ জন। ভোট পড়ে রেকর্ড ৮৭.১৩ শতাংশ। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৩০টি, বিএনপি ৩০টি, জাতীয় পার্টি ২৭টি, জাসদ ৩টি, জামায়াতে ইসলামী ২টি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৪টি আসনে জয়ী হন।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে ৪৮.০৪ শতাংশ, বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে ৩২.৫ শতাংশ, এইচএম এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীক ৭.০৪ শতাংশ এবং জামায়াতে ইসলামী দাঁড়িপাল্লায় ৪.৭ শতাংশ, স্বতন্ত্র ২.৯৪ শতাংশ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ০.৯৪ শতাংশ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি ০.০৬ শতাংশ ভোট পায়।  নির্বচনি ফলাফলে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই বড় দল মিলেই ৮০.৫৪ শতাংশ ভোট পেয়েছে। এরপরে জাতীয় পার্টি ও জামায়াতের অবস্থান। কিন্তু তাদের ভোটের হার বড় দুই দলের ধারে কাছেও নেই।

তবে ২০২৪ সালে গণঅভ্যুত্থান এবং আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ার পর সাম্প্রতিক কিছু জরিপে ভোটের হিসাবে নতুন ধরনের চিত্র উঠে আসছে। সম্প্রতি সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম)-এর তরুণদের মধ্যে চালানো এক জরিপের ফলাফলে বলা হয়েছে, ৩৮.৭৬ শতাংশের মত অনুযায়ী, আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার দৌড়ে বিএনপি শীর্ষে থাকবে। তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী৷ দলটির পক্ষে মত দিয়েছেন ২১.৪৫ শতাংশ । এছাড়া নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) পাবে ১৫.৮৪ শতাংশ ভোট।

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ আসন্ন নির্বাচনে অংশ নিতে পারলে ১৫ শতাংশের কিছু বেশি ভোট পেতে পারে জানিয়েছেন জরিপে অংশ নেয়া ব্যক্তিরা। সানেমের জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, এছাড়া অন্যান্য ধর্মীয় দলগুলো সম্মিলিতভাবে ৪.৫৯ শতাংশ ভোট পেতে পারে। জাতীয় পার্টি পাবে ৩.৭৭ শতাংশ এবং অন্যান্য ছোট দলের প্রাপ্ত ভোট হবে মাত্র ০.৫৭ শতাংশ।

বিএনপি নেতা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, "আমরা তো এখানে বহুদলীয় গণতন্ত্রের বিকাশ চাই। নানা মত আর পথের বিকাশ ঘটবে এখানে। এখানে দ্বিদলীয় ব্যবস্থা গড়ে উছেছিল। কিন্তু যারা তাদের ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল, তাদের আবার ফিরে আসার মধ্য দিয়ে দ্বিদলীয় গণতন্ত্র আমরা চাই না। সবার অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র বিকশিত হবে।

তবে সরকারের ভিতরে একটা প্রবণতা আছে কোনো কোনো দলকে টেনে নিয়ে আসার, তাদের বিএনপির প্রতিদ্বন্দ্বী করার। কিন্তু সেটা জনগণ গ্রহণ করবে না। প্রধান উপদেষ্টা ফেব্রুয়রিতে নির্বাচনের স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন। এখন বিষয়গুলো পরিষ্কার হবে জনগণ কী চায়।”

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন বলেন, "আবার যদি এক দলীয় ব্যবস্থার উদ্ভব হয়, একক কোনো দলের আধিপত্য হয়, তা হবে আমাদের জন্য দু:খজনক। আমরা ফের ফ্যাসিবাদ চাই না। ”

তার কথা, "যদি পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়, প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার হয়, তাহলে আসলে সব দলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে। জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে।”

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "সরকারের সহায়তায় আমরা বিএনপির প্রতিদ্বন্দ্বী হতে চাইছি। বা সরকার চেষ্টা করছে এটা বিএনপির অপপ্রচার। আমরা রাজনীতি করেই আমাদের অবস্থান তৈরি করতে চাই।

বিশ্লেষকরা যা মনে করেন 

বিশ্লেষকরা  মনে করেন, আওয়ামী লীগ না থাকায় বিএনপি এখন একমাত্র বড় দল। দেশে দ্বিদলীয় ব্যবস্থা অনুপস্থিত। তবে আওয়ামী লীগের ভোটরারা তো আর চলে যাননি। ওই ভোটাররা কোন দিকে টার্ন করে, তারা সংঘবদ্ধভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে কিনা তার ওপর নির্ভর করছে অনেক কিছু। নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে, ততই বিষয়গুলো। পরিষ্কার হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ও নির্বাচন  বিশ্লেষক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম বলেন, "এটা সত্য যে, আওয়ামী লীগ দৃশ্যপটে না থাকায় বাংলদেশে এখন টু পার্টি সিস্টেম অনুপস্থিত। তবে আওয়ামী লীগের ভোটাররা তো আছেন। ফলে আমার মনে হয় আগামী নির্বাচন দ্বিদলীয় না হলেও দুই ধারার হতে পারে। একদিকে থাকবে তুলনামুলকভাবে একটু লিবারেল ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি, যার নেতৃত্বে থাকতে পারে বিএনপি, আরেক দিকে থাকবে রক্ষণশীল ও ইমলামী ধর্মীয় ধারা। সেখানে থাকবে জামায়াত ও এনসিপিসহ ইসলামী ধারার দল।”

"আর বামপন্থি যে দলগুলো আছে, ভোটের বিবেচনায় তারা তেমন বড় না।  তবে তাদেরও একটা অবস্থান থাকবে,” বলেন তিনি। তার কথা, "নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে, তত এই দুই ধারা স্পষ্ট হবে। নির্বাচনের ইশতেহারেই দুই ধারা চিহ্নিত করা যাবে। আর রাজনীতির পরিসর যদি উন্মুক্ত থাকে, কোনো দল যদি বাধার মুখে না পড়ে, তাহলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সংহত হয়।

এ প্রসঙ্গে সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল বলেন, "বাংলাদেশে এখনো মানুষ নির্বাচন বলতে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের ভোট মনে করে। এখন আওয়ামী লীগের কার্যক্রম তো নিষিদ্ধ। তারপরও মানুষের কাছে জিজ্ঞেস করেন- তারা এই কথাই বলবে। ফলে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে দ্বিদলীয় ব্যবস্থার কোনো পরিবেশ বা পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। বিএনপির কাছাকাছি আসার মতো কোনো দল নাই।

তার কথা, আমি এখন বিএনপিকে চ্যালেঞ্জ করার  মতো কোনো রাজনৈতিক দলের উত্থানের সম্ভাবনা দেখছি না। এনসিপির একটা সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু সেটা এরইমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। নেতাদের বিতর্কিত কাজ এবং একই সঙ্গে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতার কারণে সেটা হয়েছে। মানুষ কিংস পার্টি চায় না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়