মব সন্ত্রাস বন্ধ করতে না পারলে ভবিষ্যতে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গেও এটা ঘটবে, এমনটা মন্তব্য করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদ ও কলাম লেখক গোলাম মাওলা রনি। তার মতে, ভবিষ্যতে পুলিশের কোনো আইজিকে বা সেনাবাহিনীর প্রধানকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে এমন মব সৃষ্টি করা হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। তাই এখনই এই অপশক্তির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রকে ব্যবস্থা নিতে হবে।
সম্প্রতি সাবেক সিইসি নুরুল হুদার সঙ্গে মবের প্রসঙ্গে একটি ভিডিও বার্তায় এসব কথা বলতে শোনা যায় তাকে।
গোলাম মাওলা রনি বলেন, ‘নুরুল হুদার গলায় যে জুতোর মালা পড়েছে এবং এই তার গালে যে জুতোর বারি পড়েছে, এটা পুরো রাষ্ট্রীয় যে ব্যবস্থা, আমাদের দেশে রাষ্ট্রীয় যে স্থিতি, তার ভিত নাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস তার ভেরিফায়েড পেজ থেকে বিবৃতি দিতে বাধ্য হয়েছেন এবং তিনি বলেছেন যে এই বিচার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী করবে? ইউনূসের কথামতো কে এই কাজগুলো করবে? ওনার একজন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আছেন।
তিনি যে কথাবার্তাগুলো বলেন, এগুলো শুনলে মেজাজ ঠিক থাকে না। তিনি এই নুরুল হুদার এই ঘটনা নিয়ে যে বিবৃতি দিয়েছেন পত্রিকায় দেখলাম, মানে এই বয়স্ক মানুষ যিনি একজন ভালো মানুষ, তাকে দিয়ে এসব বলানো হচ্ছে কেন? এত বড় একটা ঘটনা ঘটানোর পরে যে ল্যাঙ্গুয়েজ এটা কোন পর্যায়ে যাবে বলা যাচ্ছে না। এই নুরুল হুদার ঘটনার পরে যে উগ্রবাদটা চালু হলো, কোনো উগ্রবাদ থামে না।
ব্রিগেডিয়ার সাখাওয়াত হোসেনও এই মবের শিকার হবেন জানিয়ে গোলাম মাওলা রনি বলেন, ‘বিএনপির খুব রাগ ব্রিগেডিয়ার শাখাওয়াতের প্রতি, খুব ক্ষোভ। কেননা ব্রিগেডিয়ার শাখাওয়াত মূলত ওয়ান ইলেভেনের সময় নির্বাচন কমিশনার হিসেবে পুরো কমিশনকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এবং তিনি নিজে ওয়ান ইলেভেনের কুশীলবদের সঙ্গে মিলে বিএনপির অফিসে তালা লাগাতে আসছেন।
এবং যেসব কথাবার্তা বলেছেন, নুরুল হুদার চেয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের রাগ-ক্ষোভ অনেক বেশি। এখন সাখাওয়াত সাহেবের সঙ্গে যদি এ রকম মব হয়? কারণ মানুষ তো সাহস পেয়ে গেছে। সাখাওয়াত সাহেবের সঙ্গে এখন হোক বা দুই দিন পরে হোক, বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে, লিখে রাখেন সাখাওয়াত সাহেবের সঙ্গে আরো বেশি মব হবে। সেটা ফেরাবেন কিভাবে? যদি এখন পর্যন্ত আপনারা সতর্ক না হন।’
রনি আরো বলেন, ‘এখন এ রকম যদি কোনো পুলিশের আইজিকে বা সেনাবাহিনীর প্রধানকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে এভাবে জনগণ মব তৈরি করে, তাহলে রাষ্ট্র কি আর থাকে? ফলে এখনো সময় আছে, এই ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তারা নয়, বরং তাদের পেছনে যে শক্তি আছে, শিকড় আছে, সেই শিকড় ধরে টান দিতে হবে।
এবং এই শিকড় যদি বন্ধ করা না যায়, রাষ্ট্রের কোনো পদ নিরাপদ নয়।’ সূত্র: কালেরকন্ঠ