শিরোনাম
◈ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সিইসির সাক্ষাৎ ◈ শেখ পরিবারের নামে থাকা সহস্রাধিক অবকাঠামোর নাম পরিবর্তন ◈ কল‌ম্বো টে‌স্টে চা‌পে বাংলা‌দেশ,  দিক পা‌চ্ছে না টাইগার বোলাররা ◈ রাইস কুকারে রান্নার সময় কোলের শিশুসহ মায়ের মৃত্যু! ◈ যুক্তরাষ্ট্রকে কঠিন থাপ্পড় দিয়েছে ইরান, আসল লক্ষ্য ছিল আমাদের আত্মসমর্পণ করানো”—খামেনি ◈ ‌লিও‌নেল মে‌সি আবারও মেজর লিগের সবচেয়ে পারিশ্রমিক পাওয়া ফুটবলার ◈ ডলার দরপতনে রেকর্ড, ট্রাম্পের নীতিতে অস্থির মুদ্রাবাজার ◈ এনবিআর ভবন ঘিরে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বাইরে বিক্ষোভ ◈ সরকারি ভবনে সোলার বসিয়ে বিদ্যুৎ বাঁচানোর পরিকল্পনা ◈ ক্ষমতার লোভে শেখ মুজিবও কারচুপি করেছিলেন, আদালতে হাবিবুল আউয়াল

প্রকাশিত : ২৬ জুন, ২০২৫, ০৪:৩৬ দুপুর
আপডেট : ২৬ জুন, ২০২৫, ০৭:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ক্ষমতার লোভে শেখ মুজিবও কারচুপি করেছিলেন, আদালতে হাবিবুল আউয়াল

স্বীকার করছি, আমি ডামি নির্বাচন করেছি: হাবিবুল আউয়াল


বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ডামি নির্বাচন আয়োজন করেছেন বলে স্বীকার করেছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে রিমান্ড শুনানিকালে এ কথা বলেন তিনি।

এদিন ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনের ওপর রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের শুনানি শেষে তার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক। দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে আদালতের কাঠগড়ায় তোলা হয় কাজী হাবিবুল আউয়ালকে। দুপুর ১টা ৩০ মিনিটের দিকে এজলাসে আসেন বিচারক।

এরপর রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা শুনানি করেন। এসময় আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলেন কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, ‘আমি স্বীকার করেছি- ডামি নির্বাচন করেছি। রাজনৈতিক সমঝোতার অভাবে একতরফা নির্বাচন হয়েছে। তবে এখানে আমাকে পয়সা দেওয়ার কোনো প্রশ্ন আসেনি। আমার জীবনে আমি অর্থ আত্মসাৎ বা দুর্নীতি করিনি।’

আদালত বলেন, ‘আপনার কাছে জাতির প্রত্যাশা ছিল অনেক। কিন্তু বিতর্কমুক্ত নির্বাচন করতে পারেননি।’ এ প্রসঙ্গে সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন বিতর্কিত হয়নি? ১৯৭২ এর ডিসেম্বরে সংবিধান রচনার তিন মাস পর ৭৩ এর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে শেখ মুজিবের মতো নেতা নির্বাচনে কারচুপি করেছেন। ক্ষমতার যে লোভ এটা ভয়ানক। দেশে এক হাজার বছরেও নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। সেটা করার জন্য সংস্কার লাগবে।’

আদালত বলেন, ‘সাধারণত নির্বাচনী কর্মকর্তাদের ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া হতো। কিন্তু এই নির্বাচনে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা করে দেওয়া হয়। এমনটি হওয়ার কারণ কী?’ এ প্রশ্নের জবাবে নিজের দায় এড়িয়ে যান কাজী হাবিবুল আউয়াল। রাতের বেলার ভোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যখন রাতের বেলায় ভোট হয়, তখন আমি গভীর নিদ্রায় নিমগ্ন।’

‘বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের (চরমোনাই) সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিমের ওপর হামলার প্রসঙ্গ রাষ্ট্রপক্ষ থেকে উত্থাপন করা হলে আমি বলেছি- ‘তিনি কি ইন্তেকাল করেছেন?’ আমার এ কথাটিকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।’

এসময় তার দীর্ঘ বক্তব্যে বিরক্তি প্রকাশ করেন পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী। হাবিবুল আওয়াল বলেন, ‘জাস্টিফাই করার সুযোগ না দিলে একটা জীবনকে মেরে ফেলেন।’

পরে পাবলিক প্রসিকিউটর বলেন, ‘এখানে সাধু সাজার সুযোগ নেই। আপনার নিজের অপরাধ ঢাকার সুযোগ নেই। অন্যরা অন্যায় করেছে এসব না বলে আপনি কী করেছেন সেটা বলেন।’ এসময় পাশ থেকে এক আইনজীবী বলে ওঠেন, ‘এতগুলো ছেলেমেয়ে মারা গেছে আপনার জন্য।’ এর উত্তরে হাবিবুল আউয়াল পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘আমার জন্য এতগুলো ছেলেমেয়ে মারা গেছে?’

এদিন রিমান্ড শুনানিকালে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ‘২০২৪ সালের ডামি নির্বাচনের আগে তিনি (আসামি) শেখ হাসিনাকে বলেন, সমস্যা নেই। আমি আপনাকে বিজয়ী ঘোষণা করে দেবো। আর আপনি যে টাকা দেবেন, তা পকেটে ঢুকিয়ে নেবো।’

পিপি বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় নির্বাচনী কর্মকর্তাদের টাকা দেয় এই আসামি তার হিসাব দেয়নি। এছাড়া সে নির্বাচনী বরাদ্দের টাকার হিসাব পেশ করেনি এবং এ টাকাগুলো সে আত্মসাৎ করেছে। এ ধরনের ব্যক্তিদের শাস্তি দিতে হবে, যাতে আগামীতে আর এমন জঘন্য নির্বাচন কমিশনার এদেশে জন্মগ্রহণ না করে।’

আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘তিনি ৭০ বছর বয়স্ক লোক। ফ্যাসিস্ট হঠাতে গিয়ে আমরা যেন ফ্যাসিস্ট না হয়ে যাই। আমি আসামির রিমান্ড বাতিল ও জামিন প্রার্থনা করছি।’ পরে আসামির জামিন নামঞ্জুর করে তিনদিনের রিমান্ডের আদেশ দেন বিচারক।

বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীর মগবাজার থেকে হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেফতার করে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।

গত ২২ জুন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন না করে উল্টো ভয়ভীতি দেখিয়ে জনগণের ভোট ছাড়াই নির্বাচন সম্পন্ন করার অভিযোগে মামলা করে বিএনপি। সংগঠনের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন খান বাদী হয়ে এ মামলা করেন। পরে গত ২৫ জুন এ মামলায় নতুন করে রাষ্ট্রদ্রোহ, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ধারা যুক্ত করা হয়। এ মামলায় শেখ হাসিনা এবং সাবেক ১৫ নির্বাচন কমিশনারসহ মোট ২৪ জনকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে। উৎস: জাগোনিউজ২৪ ও সময়নিউজটিভি।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়