শিরোনাম
◈ আইন সংশোধন, নতুন ভোটার অন্তর্ভুক্তি ও প্রশিক্ষণে আটকে নির্বাচন পরিকল্পনা ◈ খামেনির বিরুদ্ধে ইসরায়েলের হত্যাযজ্ঞ পরিকল্পনা বন্ধ করলেন ট্রাম্প? ◈ ডিজিটাল বাংলাদেশে নতুন মাইলফলক: সার্টিফিকেট সত্যায়ন এখন অনলাইনেই (ভিডিও) ◈ রাতের আকাশে আগুন! ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রে কাঁপছে ইসরায়েল ◈ ইসরায়েলে আঘাত করা ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে যা জানা গেল ◈ অধ্যাপক ইউনূসের যুক্তরাজ্যে 'সরকারি সফর' থেকে কী অর্জন হলো ◈ ইরানে বিদ্রোহের ইঙ্গিত সাবেক যুবরাজ রেজা পাহলভির: ইসরায়েল-যুদ্ধ পরবর্তী ‘রেজিম চেঞ্জ’ পরিকল্পনার আভাস ◈ ভুটানসহ আরও ৩৬ দেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে, বাকি দেশ গুলোর নাম হলো ◈ ইরানে ইসরায়েলের হামলার আসল কারণ যা জানাগেল! ◈ ইরান প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য হটলাইন চালু

প্রকাশিত : ১১ জুন, ২০২৫, ০১:৩৯ দুপুর
আপডেট : ১৫ জুন, ২০২৫, ০৫:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ইরানের সর্বোচ্চ নেতার পূর্ণাঙ্গ হজবাণী

ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ী ২০২৫ সালের পবিত্র হজ উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন। পূর্ণাঙ্গ হজবাণী এখানে তুলে ধরা হলো।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

হজ হলো মুমিনদের আকাঙ্ক্ষা, অধির আগ্রহীদের ঈদ এবং সৌভাগ্যবানদের আধ্যাত্মিক জীবিকা। হজের সঙ্গে এর রহস্যময় মর্মজ্ঞানের মিশ্রণ ঘটলে তা কেবল মুসলিম উম্মাহরই নয় বরং সমগ্র মানবজাতির প্রধান সমস্যাগুলোর প্রতিকার হয়ে ওঠে।

হজ অন্যান্য সফরের মতো নয় যা ব্যবসা, পর্যটন বা অন্যান্য উদ্দেশ্যে করা হয়, যেখানে কখনো কখনো ইবাদত বা সৎকর্ম সেই সফরের অংশ হয়ে হয়ে ওঠে।

হজ হলো সাধারণ জীবন থেকে আদর্শ জীবনে স্থানান্তরিত হওয়ার একটি অনুশীলন। আদর্শ জীবন হলো একত্ববাদী জীবন। এর প্রধান ও চিরস্থায়ী উপাদানগুলো হলো সত্যের অক্ষের চারপাশে অবিরাম প্রদক্ষিণ
(তাওয়াফ), কঠিন চূড়াগুলোর মধ্যে নিরলস প্রচেষ্টা (সাঈ), কুচক্রী শয়তানের দিকে সর্বদা পাথর নিক্ষেপ, জিকির ও এবাদতের সাথে বিরতি, পক্ষাঘাতগ্রস্ত ও পথচারী দরিদ্রদের খাওয়ানো, সব জাতি, বর্ণ ও ভাষার মানুষ এবং ভৌগোলিক অঞ্চলকে সমানভাবে দেখা এবং সব সময় সেবা করার জন্য প্রস্তুত থাকা, আল্লাহর
আশ্রয় প্রার্থনা করা এবং সত্যকে রক্ষার পতাকা উড্ডীন রাখা।

পবিত্র ক্বাবাঘর হজ নিজের মধ্যে এই (আদর্শ) জীবনের প্রতীকী দৃষ্টান্তগুলোর সম্মিলন ঘটিয়েছে এবং হজযাত্রীদেরকে এসবের সাথে পরিচিত করিয়ে এই জীবনের প্রতি আমন্ত্রণ জানায়। এই আহ্বান অবশ্যই শোনা উচিৎ। হৃদয়-মন এবং বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ চোখ খুলতে হবে। শিখতে হবে। শিক্ষাগুলো রপ্ত করে সেগুলো প্রয়োগ করার দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করতে হবে। প্রত্যেকেই তাদের সামর্থ্য অনুসারে এ ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নিতে পারে। আলেম, বুদ্ধিজীবী এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থানের অধিকারী ব্যক্তিদের দায়িত্ব আরও বেশি।

মুসলিম বিশ্বের এখন এই শিক্ষাগুলো প্রয়োগ করা আগের চেয়েও বেশি প্রয়োজন। গাজা এবং পশ্চিম এশিয়ায় বিপর্যয় চলা অবস্থায় এবার দ্বিতীয় হজ পালিত হচ্ছে। ফিলিস্তিন দখলদার অপরাধী ইহুদিবাদী চক্র ভয়াবহ নিষ্ঠুরতা, বর্বরতা এবং শয়তানির মাধ্যমে গাজার বিপর্যয়কে অকল্পনীয় মাত্রায় নিয়ে গেছে। ফিলিস্তিনি
শিশুরা এখন কেবল বোমা, গুলি এবং ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতেই নয়, তৃষ্ণা ও অনাহারেও মারা যাচ্ছে। প্রিয়জন তথা তরুণদের হারানো অথবা বাবা-মা হারানো শোকসন্তপ্ত পরিবারের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এই মানবিক
বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে কারা রুখে দাঁড়াবে?

নিঃসন্দেহে এই দায়িত্ব প্রথমেই মুসলিম সরকারগুলোর। আর জাতিগুলো তাদের সরকারগুলোর কাছ থেকে এই পদক্ষেপের দাবিদার। মুসলিম সরকারগুলোর মধ্যে নানা ক্ষেত্রে মতবিরোধ থাকতেই পারে, কিন্তু এই মতবিরোধ গাজার ভয়াবহ বিপর্যয় এবং আজকের বিশ্বের সবচেয়ে মজলুম জনগোষ্ঠীর প্রতি সহযোগিতা করা
থেকে তাদেরকে বিরত রাখবে এমনটি হওয়া উচিৎ নয়। মুসলিম সরকারগুলোকে অবশ্যই ইহুদিবাদী ইসরাইলকে সহায়তার সকল পথ বন্ধ করে দিতে হবে এবং গাজায় বর্বর কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাওয়া থেকে অপরাধীদেরকে
বিরত রাখতে হবে। আমেরিকা নিশ্চিতভাবে ইহুদিবাদী ইসরাইলের অপরাধের সহযোগী।

কাবা শরিফ
এই অঞ্চল এবং অন্যান্য মুসলিম অঞ্চলে আমেরিকার সহযোগীদের উচিৎ মজলুমদের রক্ষা করার বিষয়ে কুরআনের ডাকে সাড়া দেওয়া। তাদেরকে অবশ্যই দাম্ভিক মার্কিন সরকারকে এই নিপীড়নমূলক আচরণ বন্ধের
জন্য বাধ্য করতে হবে। হজের সময় বারায়াত (সম্পর্কচ্ছেদ) অনুষ্ঠান এমন লক্ষ্য অর্জনের জন্যই একটি পদক্ষেপ।

গাজার জনগণের অবিশ্বাস্য প্রতিরোধ ফিলিস্তিন ইস্যুকে মুসলিম বিশ্ব তথা গোটা বিশ্বের সকল স্বাধীনচেতা মানুষের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে গেছে। এই সুযোগকে অবশ্যই কাজে লাগাতে হবে এবং এই মজলুম জাতির সাহায্যে এগিয়ে যেতে হবে। দাম্ভিক শক্তি ও ইহুদিবাদী ইসরাইলের সমর্থকরা ফিলিস্তিন ইস্যুটির
নাম-নিশানা [মানুষের মন থেকে] মুছে ফেলার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও এই দখলদার নেতাদের ঘৃণ্য স্বভাব

ও তাদের বোকামিপূর্ণ নীতি এখন এমন এক পরিস্থিতি তৈরি করেছে যেখানে ফিলিস্তিনের নাম অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে উজ্জ্বলতর হয়েছে এবং ইহুদিবাদীদের ও তাদের সমর্থকদের প্রতি জনমতের ঘৃণা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেড়েছে। এটি মুসলিম বিশ্বের জন্য একটা বড় সুযোগ।

যারা সমাজের মুখপাত্র হিসেবে সম্মানিত এবং সমাজে যাদের বিশেষ অবস্থান রয়েছে তাদের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিন ইস্যুতে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে, সংবেদনশীলতা আরও গভীর করতে হবে এবং ফিলিস্তিন সম্পর্কিত দাবিগুলোকে ছড়িয়ে দিতে হবে।

আপনারা সৌভাগ্যবান হাজিরা হজ পালনের সময় সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করার সুযোগকে অবহেলা করবেন না। জালিম ইহুদিবাদী ইসরাইল এবং তাদের সমর্থকদের বিরুদ্ধে বিজয়ের জন্য সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে দোয়া করুন।

মহানবী ও তাঁর পবিত্র বংশধরদের ওপর আল্লাহর সালাম, দরুদ ও রহমত বর্ষিত হোক। একই সঙ্গে ইমাম মাহদি বাকিয়াতুল্লাহ (আল্লাহ তাঁর পুনরাবির্ভাব ত্বরান্বিত করুন) এর ওপর সালাম ও দরুদ বর্ষিত হোক।

ওয়া আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়