দিল্লিতে স্বামীর ‘যৌন অক্ষমতা’কে কেন্দ্র করে স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে হত্যার এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এসেছে। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) নিহত শাহিদ (৩৫)–এর স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে দিল্লি পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ২০ জুলাই বিকেল সাড়ে চারটার দিকে নিহাল বিহার থানায় স্থানীয় একটি হাসপাতাল থেকে ফোন আসে। সেখানে জানানো হয়—এক নারী তার স্বামী শাহিদকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে এনেছেন; তার শরীরে ছুরিকাঘাতের একাধিক চিহ্ন রয়েছে এবং হাসপাতালে আনার আগেই তিনি মারা গেছেন।
হাসপাতালে গিয়ে পুলিশকে ওই নারী দাবি করেন, শাহিদ নাকি নিজেই নিজেকে ছুরিকাঘাত করে আত্মহত্যা করেছেন। প্রথমিকভাবে পুলিশ তার বক্তব্যই গ্রহণ করে।
তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর বদলে যায় পুরো চিত্র। রিপোর্টে বলা হয়—এই ধরনের আঘাত কোনোভাবেই আত্মহত্যার মাধ্যমে হওয়া সম্ভব নয়; সামনে থেকে কেউ আঘাত করেছে বলেই এমন ক্ষতচিহ্ন সৃষ্টি হয়েছে।
এরপরই শাহিদের মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। সন্দেহের তীর ঘুরে যায় স্ত্রী–এর দিকে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ ও মোবাইল ফোনের ফরেনসিক পরীক্ষায় উঠে আসে একাধিক ‘সন্দেহজনক’ ইন্টারনেট অনুসন্ধানের তথ্য—যেমন, চ্যাট হিস্ট্রি কীভাবে মুছে ফেলা যায়, অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড (সালফস) কীভাবে ব্যবহার করা হয়, কীভাবে বিষ প্রয়োগ করলে মৃত্যু হতে পারে—ইত্যাদি।
টানা জিজ্ঞাসাবাদের মুখে শেষ পর্যন্ত অপরাধ স্বীকার করেন শাহিদের স্ত্রী। তিনি পুলিশকে জানান—স্বামীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে তিনি সন্তুষ্ট ছিলেন না। যৌন তৃপ্তি না পাওয়ার কারণে তার মনে ক্ষোভ জন্ম নেয়। সেই অসন্তোষ থেকেই স্বামীকে হত্যা করেন।
পুলিশের দাবি, শাহিদের বুকে তিনবার ছুরিকাঘাত করেন তিনি। এরপর ঘটনাকে ‘আত্মহত্যা’ হিসেবে উপস্থাপন করতে নিজেই স্বামীকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার নারীর হেফাজত মঞ্জুর করা হয়েছে। তবে তদন্তকারীরা মনে করছেন, ঘটনাটিতে আরও কেউ জড়িত থাকতে পারে।
পুলিশ এখন খতিয়ে দেখছে—তিনি কার সঙ্গে চ্যাট করতেন, কী তথ্য মুছতে চাইছিলেন এবং যৌন অসন্তোষই কি একমাত্র উদ্দেশ্য, নাকি এর পেছনে আরও কোনো কারণ লুকিয়ে আছে।