আফগানিস্তানে সারাদেশে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে দিয়েছে তালেবান সরকার। কয়েক সপ্তাহ আগে ফাইবার-অপটিক ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর এবার দেশটি ‘সম্পূর্ণ ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট’-এর মধ্যে পড়েছে বলে জানিয়েছে ইন্টারনেট নজরদারি সংস্থা নেটব্লক্স। খবর বিবিসির।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, তারা কাবুল অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়েছে। মোবাইল ইন্টারনেট এবং স্যাটেলাইট টিভির সম্প্রচারও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। তালেবান এখনো এর কোনো আনুষ্ঠানিক কারণ জানায়নি। এক কর্মকর্তার বরাতে বলা হয়েছে, টেলিযোগাযোগ ‘পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত’ বন্ধ থাকবে।
কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকেও অন্তত আটটি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৫টার দিকে ফাইবার-অপটিক সেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ব্যাংকিং ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম মঙ্গলবার সকাল থেকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নেটব্লক্স এক পোস্টে জানিয়েছে, তালেবান নৈতিকতা সংক্রান্ত পদক্ষেপ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ধাপে ধাপে নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন করেছে। ফলে টেলিফোন সেবাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন প্রদেশে ধীরগতির ইন্টারনেট কিংবা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্নতার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছিল।
এদিকে ব্যবসায়ীরা সতর্ক করেছেন, এই অবস্থা চলতে থাকলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বড় ধরনের আঘাত আসবে। আফগান নিউজ চ্যানেল ওয়ানটিভির সাবেক প্রধান সম্পাদক বলেছেন, পুরো দেশজুড়ে এক ধরনের নীরবতা নেমে এসেছে। আফগানিস্তান এখন উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে ইন্টারনেট বিচ্ছিন্নতার প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান দখল করলো।
এটি তালেবানের সাম্প্রতিক একাধিক বিধিনিষেধের অংশ। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের লেখা বই সরিয়ে দেওয়া হয় এবং মানবাধিকার ও যৌন হয়রানি বিষয়ক শিক্ষা নিষিদ্ধ করা হয়। বর্তমানে মেয়েদের ১২ বছর বয়সের পর শিক্ষালাভে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, এমনকি ২০২৪ সালের শেষ দিকে ধাত্রীবিদ্যা কোর্সও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
২০২১ সালে আন্তর্জাতিক বাহিনীর প্রত্যাহারের পর তালেবান বিদ্যুৎগতিতে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং তখন থেকেই দেশটিতে ধারাবাহিকভাবে সামাজিক ও রাজনৈতিক বিধিনিষেধ জারি করে আসছে। সূত্র: জাগো নিউস ২৪