পার্সটুডে- ৯/১১-এর পর দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে আফগানিস্তান এখনও মানবিক ও অর্থনৈতিক সংকটের সাথে লড়াই করছে। ২০২১ সালে তালেবানদের প্রত্যাবর্তনের পর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এবং বিধিনিষেধ লক্ষ লক্ষ আফগানের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলেছে এবং দেশের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত করে তুলেছে।
যদিও মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের অজুহাত ছিল সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই কিন্তু আজ আফগানিস্তান দারিদ্র্য, নিরাপত্তাহীনতা এবং ভঙ্গুর অবকাঠামো নিয়ে প্রতিনিয়ত টিকে থাকার লড়াই করছে।
তাসনিম নিউজ এজেন্সির বরাত দিয়ে পার্সটুডে জানিয়েছে, অদৃশ্য মাত্রাগুলোর মধ্যে একটি হল আফগান জনগণের দৈনন্দিন জীবনে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রভাব। ইউনিসেফের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, আফগান জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি মানুষের মানবিক সহায়তা প্রয়োজন এবং তাদের মধ্যে ১ কোটি ২০ লক্ষ শিশু। শিশুদের মধ্যে, বিশেষ করে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে তীব্র অপুষ্টিজনিত সমস্যা রয়েছে। জনসংখ্যার মাত্র একটি অংশ সীমিত স্বাস্থ্যসেবা পায়, অন্যদিকে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ভেঙে পড়েছে। ২০২৫ সালের ৬ আগস্ট পূর্ব আফগানিস্তানে ৬ মাত্রার ভূমিকম্পও সংকটকে আরও গভীর করে তুলেছে; হাজার হাজার ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে যায় এবং পাঁচ লক্ষেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ক্ষতিগ্রস্ত মধ্যে ৯২ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত থাকে।
অর্থনৈতিকভাবে, বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে ২০২১ সাল থেকে মোট দেশজ উৎপাদন ২৭ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। জনসংখ্যার মাত্র ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে এবং বেকারত্ব বাড়ছে। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা, সম্পদ জব্দ এবং বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার কারণে জনসেবা ব্যাহত করেছে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
বর্তমান শাসক হিসেবে, তালেবান আফগানিস্তানের নিরাপত্তা ও উন্নয়নের জন্য দায়ী। একই সাথে নারীদের বিরুদ্ধে কঠোর বিধিনিষেধ, সংখ্যালঘু অধিকার লঙ্ঘন এবং চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলির অব্যাহত কার্যকলাপের কারণে তালেবান শাকদের ওপর পশ্চিমাদের চাপ অব্যাহত রয়েছে। তবে, জনগণের মানবিক অবস্থা বিবেচনা না করে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রাখাও অমানবিক।