এল আর বাদল : ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সংঘাতে যুদ্ধবিরতি চলছে। কিন্তু তার মধ্যেও ইজরায়েল ও ইরান, উভয়ই একে অপরকে নিশানা করে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করছে। ফলে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা নিরসন প্রশ্নের মুখে। এই সংঘাতে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লা আলি খামেইনির নাম বিশ্বজুড়ে বার বার শিরোনামে এসেছে। দুনিয়াজুড়ে মানুষের খামেইনিকে নিয়ে কৌতুহল বেড়েছে। অনেকেই লক্ষ্য করেছেন যে, ভাষণ দেওয়া বা কথা বলার সময়ে তিনি সর্বদা একটি হাত ব্যবহার করেন। এর নেপথ্যে কী রহস্য রয়েছে? -- জি নিউজ
-- খামেনি কেন কেবল একটি হাত ব্যবহার করেন? --
এই জন্য ফিরে যেতে হবে ১৯৮১ সালের ২৭ জুন। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, সেদিন ইরানের রাজধানী তেহরানে আয়াতুল্লাহ আলি খামেইনি আবুজার মসজিদে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। অনুষ্ঠান চলাকালীন, একজন যুবক তার কাছে একটি টেপ রেকর্ডার রেখেছিল।
কিন্তু সেটি শুধুমাত্র একটি টেপ রেকর্ডার ছিল না, তার ভেতরে একটি লুকানো বোমা ছিল! যখনই ডিভাইসটি চালু করা হয়, তখনই বিকট শব্দে বিস্ফোরণয ঘটে। খামেইনি গুরুতর আহত হন এবং মেঝেতে পড়ে যান। মসজিদে সর্বত্র বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে।
সেই বোমা হামলার পর থেকে খামেইনির ডান হাত আংশিকভাবে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে। সেই কারণেই তিনি বেশিরভাগ সময় জনসমক্ষে কেবল তাঁর বাঁ হাতটিই ব্যবহার করেন।
বিগত ১২ দিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ অব্যাহত ছিল। তবে আপাতত যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা করা হয়েছে ইরান-ইজরায়েল সংঘাতে। তবে, যুদ্ধবিরতির পরও পারস্পারিক নিশানা চলছেই। এই সংঘাতে এতদিন বিশ্ব কেবল শক্তিশালী সব ক্ষেপণাস্ত্রগুলিই দেখেনি, বরং খামেইনির মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বদেরও স্মরণ করছে। কারণ এঁদের অতীত ভয়ঙ্কর।
-- চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেছেন কিন্তু খামেইনি সকল প্রতিকূলতার বিরুদ্ধেও বেঁচে গিয়েছেন--
১৯৮১ সালের বোমা বিস্ফোরণে আয়াতুল্লা খামেইনি গুরুতর আহত হয়েছিলেন। বিস্ফোরণে তাঁর ডান হাত পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে, তাঁর ফুসফুসের কিছু অংশ এবং কানের স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইরানের সর্বোচ্চ নেতার বুকের একপাশে গুরুতরভাবে পুড়ে যায়। বোমার টুকরোগুলি তাঁর শরীরের ডান দিকে আটকে যায়।
যখন খামেইনিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন তাঁর অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে গিয়েছিল যে, একজন চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণাও করেছিলেন। কিন্তু অন্য ডাক্তারদের একটি দল হাল ছাড়েনি - তাঁরা অস্ত্রোপচার চালিয়ে যান এবং খামেইনির জীবন বাঁচান।
অপারেশনের পর তার প্রথম প্রশ্ন ছিল-
অস্ত্রোপচারের পর, খামেইনি কথা বলতে পারছিলেন না। কিন্তু তাঁর বাম হাত ব্যবহার করে তিনি একটি প্রশ্ন লিখেছিলেন: "মসজিদে আমার সঙ্গীরা কি আঘাত পেয়েছেন?"
তাঁকে বলা হয়েছিল যে বাকি সবাই নিরাপদ। তারপর তিনি জিজ্ঞাসা করেছিলেন: "আমার কী হয়েছে?" চিকিৎসকরা ব্যাখ্যা করেছিলেন যে- তাঁর ডান হাত আর কখনও কাজ নাও করতে পারে।
এর উত্তরে খামেইনি শান্তভাবে উত্তর দিয়েছিলেন: "যদি আমার মস্তিষ্ক এবং জিহ্বা কাজ করে, তবে আমার হাতের প্রয়োজন নেই।