বিবিবাংলার প্রতিবেদন।। ভারতের মুম্বাইয়ে বিরল প্রজাতির সাপ চোরাচালানের অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই ব্যক্তির চোরাচালান করা সাপের মধ্যে বেশ কিছু বিষধর সাপও রয়েছে।
রোববার থাইল্যান্ড থেকে ফেরা এক ব্যক্তিকে মুম্বাইয়ের বিমানবন্দরে আটক করা হয়, যার চেক-ইন ব্যাগে ৪৭টি বিষধর সাপ পাওয়া গেছে বলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জানায়।
ভারতের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের কয়েকটি ধারার অধীনে ওই সাপগুলো জব্দ করা হয়।
তবে সাপ চোরাচালানের দায়ে অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির নাম প্রকাশ করেনি কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। তাকে পুলিশের জিম্মায় নেয়া হয়েছে। তিনি এখনো এই বিষয়ে কোনো বক্তব্য দেননি।
সাপগুলো যেখান থেকে আনা হয়েছে
মুম্বাইয়ের কাস্টমস বিভাগ সামাজিক মাধ্যম এক্সে তাদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে জব্দ করা সাপগুলোর ছবি প্রকাশ করেছে।
পোস্টে প্রকাশ করা ছবিতে দেখা যায়, একটি বাক্সে বিভিন্ন রঙয়ের কয়েকটি সাপ একসাথে জড়ো করে রাখা।
পোস্টে কাস্টমস বিভাগ উল্লেখ করেছে যে জব্দ করা সাপগুলোর মধ্যে তিনটি 'স্পাইডার-টেইলড হর্নড ভাইপার', পাঁচটি 'এশিয়ান লিফ টার্টল' আর ৪৪টি বিষধর 'ইন্দোনেশিয়ান পিট ভাইপার' রয়েছে।
তবে এই সাপগুলো কোন এলাকা থেকে আনা হয়েছে, সে সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু জানায়নি কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
ভারতে পশু-পাখি আমদানি করে আনা আইনিভাবে নিষিদ্ধ নয়। তবে নির্দিষ্ট কিছু প্রজাতির প্রাণী আমদানি করার বিষয়ে ভারতের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এই তালিকায় সরকার নির্ধারিত কিছু বিপন্নপ্রায় প্রাণীও রয়েছে।
ভারতের আইন অনুযায়ী, কোনো বন্যপ্রাণী বিদেশ থেকে ভারতে নিয়ে আসতে গেলে প্রয়োজনীয় লাইসেন্স ও অনুমোদন নিতে হয়।
বন্যপ্রাণী পাচারের পূর্ববর্তী যেসব ঘটনা
ভারতে অন্য দেশ থেকে বন্যপ্রাণী চোরাচালানের ঘটনা খুব একটা নতুন নয়।
এ বছরের জানুয়ারিতে জানুয়ারিতে ভারতের কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কানাডার এক নাগরিককে দিল্লি বিমানবন্দরে গ্রেফতার করেছিল যিনি তার লাগেজে কুমিরের মাথার কঙ্কাল বহন করছিলেন।
পরের মাসেই মুম্বাইয়ের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে যিনি পাঁচটি সিয়ামাং গিবন (বানর জাতীয় প্রাণী) ও একটি ছোট বানর নিয়ে ভারতে প্রবেশ করার চেষ্টা করছিলেন।
এই ধরনের প্রাণী সাধারণত ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের জঙ্গলে পাওয়া যায়।
ওই গিবনগুলো আন্তর্জাতিক পরিবেশ সংরক্ষণ ইউনিয়ন, আইইউসিএনের বিপন্নপ্রায় প্রাণীর তালিকাভুক্ত। ওই প্রাণীগুলোকে যাত্রীর বহন করা ট্রলি ব্যাগের ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল।
এর আগে, ২০২৪ সালের নভেম্বরে কাস্টমস কর্মকর্তারা দুইজনকে আটক করেছিল যারা ব্যাংকক থেকে ১২টি বিপন্ন প্রজাতির কচ্ছপ নিয়ে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করছিল।
এই দফার মত ঘটনা ঘটেছিল ২০১৯ সালে চেন্নাই বিমানবন্দরে।
সেসময় কর্মকর্তারা একটি হর্নড পিট ভাইপার, পাঁচটি ইগুয়ানা (বড় ধরনের সরীসৃপ), চারটি 'ব্লু-টাঙড স্কিন' (এক ধরনের সরীসৃপ), তিনটি সবুজ 'ট্রি ফ্রগ' (এক ধরনের ব্যাঙ) এবং ২২টি মিশরীয় কচ্ছপ উদ্ধার করেছিল এক ব্যক্তির কাছ থেকে যিনি থাইল্যান্ড থেকে ভারতে ফিরছিলেন।