শিরোনাম
◈ মধ্যরাতে দেশ ছাড়লেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ! ◈ ভারত-পাকিস্তানকে ‘দীর্ঘমেয়াদি শান্তির জন্য’ কাজ করার আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ◈ অযথা হর্ন বাজালে চালকদের শাস্তির ঘোষণা, ঢাকার সিগন্যালে যুক্ত হচ্ছে এআই প্রযুক্তি ◈ ভারত থেকে ১০২ জনকে ‘পুশ ইন’ ঘটনায় উত্তেজনা, সরকারের কঠোর পদক্ষেপ চাইলেন জামায়াত আমির ◈ এবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য টিউলিপ সিদ্দিককে দুদকে তলব ◈ এবার পাকিস্তানের লাহোরে একাধিক ‘বিস্ফোরণ’ (ভিডিও) ◈ আর্সেনালকে হা‌রি‌য়ে চ‌্যা‌ম্পিয়নস লি‌গের ফাইনালে পিএসজি ◈  ভার‌তের কাপুরুষোচিত হামলার জবাব দিয়েছে পাকিস্তান: শাহবাজ শরীফ ◈ মা‌র্কিন প্রেসি‌ডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বল‌লেন, সর্বকা‌লের সেরা টুর্না‌মেন্ট হ‌বে ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপ  ◈ রোহিত শর্মা আর টেস্ট ক্রিকেট খেল‌বেন না

প্রকাশিত : ০৭ মে, ২০২৫, ০৮:৪৪ রাত
আপডেট : ০৮ মে, ২০২৫, ১১:০৪ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যে কারণে ভারত বনাম পাকিস্তান যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্র বনাম চীন যুদ্ধও!

যুক্তরাষ্ট্র, চীনসহ বিশ্বপরাশক্তিগুলোও এখন এই বিরোধে নাক গলাতে শুরু করেছে—সম্পর্কের এসব নতুন মারপ্যাঁচ, দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে পুরোনো এ সংঘাতের সমস্যাকে করে তুলছে আরও জটিল। চীনের প্রভাব ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র একদিকে ভারতকে ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাইছে। অন্যদিকে, ভারত যতই আমেরিকার সান্নিধ্যে যাচ্ছে, চীন ততই পাকিস্তানের পক্ষে বিনিয়োগ ও সমর্থন বাড়াচ্ছে। খবর: দ্য নিউইয়র্ক টাইমস

কাশ্মীরের পেহেলগামের কাছে সন্দেহভাজন জঙ্গি হামলার পর শ্রীনগরের ডাল লেকের পাড়ে নিরাপত্তা দিচ্ছেন ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। ছবি: রয়টার্স/আদনান আবিদি/ফাইল ছবি

ভারত ও পাকিস্তান সর্বশেষ ২০১৯ সালে সামরিক সংঘর্ষের মুখোমুখি হয়েছিল। ওই সময় মার্কিন কর্মকর্তারা দু'দেশের পারমাণবিক অস্ত্রাগারে কিছু অস্বাভাবিক গতিবিধি লক্ষ্য করেন, যা তাদের উদ্বিগ্ন করে তোলে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে সে সময়কার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও মাঝরাতে ঘুম থেকে উঠে দুই দেশের নেতাদের ফোন দেন। তিনি তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, 'প্রতিপক্ষের কেউই পারমাণবিক যুদ্ধের কোনো প্রস্তুতি নিচ্ছে না'।

দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ওই সময়ে সংঘাতে জড়ালেও কিছুদিন পরই পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসে। তবে ছয় বছর পর আবারও সেনা সংঘাতে জড়িয়েছে ভারত ও পাকিস্তান—এবার কাশ্মীরের ভারত-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে পর্যটকদের ওপর প্রাণঘাতী জঙ্গি হামলার পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।

এবারের উত্তেজনায় একটি নতুন অনিশ্চয়তা যুক্ত হয়েছে—কারণ, অঞ্চলটির গুরুত্বপূর্ণ সামরিক জোটগুলোর চিত্র বদলে গেছে।

এই পরিবর্তনের প্রমাণ মিলছে অস্ত্র সরবরাহের ধারা থেকে। এটি স্পষ্ট করে তুলছে, কতটা বদলে গেছে দক্ষিণ এশিয়ার এই অস্থিতিশীল অঞ্চলের কৌশলগত ভারসাম্য—যেখানে তিনটি পরমাণু শক্তিধর দেশ ভারত, পাকিস্তান ও চীন পাশাপাশি অবস্থান করছে, কিন্তু পারস্পরিক সম্পর্ক রয়ে গেছে অস্থির ও অনিরাপদ।

দীর্ঘদিন ধরে জোট নিরপেক্ষ থাকা ভারত শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি কিছুটা দ্বিধান্বিত থাকলেও, এখন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশ থেকে শত শত কোটি ডলারের ডলারের সামরিক সরঞ্জাম কিনছে। অন্যদিকে, স্নায়ুযুদ্ধের সময় অল্প মূল্যে অস্ত্র কেনার ক্ষেত্রে রাশিয়ার ওপর যে নির্ভরতা ছিল, তাও এখন অনেকটুকু কমিয়ে দিয়েছে ভারত। 

আবার, আফগানিস্তানে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পাকিস্তান গুরুত্ব অনেকটাই কমে গেছে, কারণ পাকিস্তান আর আগের মত যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্র কিনছে না। সামরিক সরঞ্জামের বড় একটি অংশ কেনার জন্য বর্তমানে পাকিস্তান চীনের ওপর নির্ভরশীল। 

যুক্তরাষ্ট্র, চীনসহ বিশ্বপরাশক্তিগুলোও এখন এই বিরোধে নাক গলাতে শুরু করেছে—সম্পর্কের এসব নতুন মারপ্যাঁচ, দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে পুরোনো এবং জটিল সংঘাতের সমস্যাকে করে তুলছে আরও জটিল। চীনের প্রভাব ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র একদিকে ভারতকে ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাইছে। অন্যদিকে, ভারত যতই আমেরিকার সান্নিধ্যে যাচ্ছে, চীন ততই পাকিস্তানের পক্ষে বিনিয়োগ ও সমর্থন বাড়াচ্ছে।

একই সময়ে, সীমান্ত বিরোধ নিয়ে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত ও চীনের মধ্যকার সম্পর্কও বেশ খারাপ হয়েছে। সময়েভেদে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে কয়েকদফা সংঘর্ষও হয়েছে। আর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে বাণিজ্য যুদ্ধের ঘোষণা দেয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্পর্কও তলানিতে ঠেকেছে। 

এমন পরিস্থিতিতে দেখা যাচ্ছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যে বিশ্বব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল, তা ভেঙে পড়ার সাথে সাথেই আন্তর্জাতিক জোটগুলোর চিত্র এখন বেশ জটিল ও বিশৃঙ্খল। এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতে আরও যোগ হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার ঘন ঘন সামরিক সংঘর্ষের ইতিহাস। যেকোনো মুহূর্তেই উভয় পক্ষের সামরিক বাহিনীর ছোট কোনো ভুলের কারণে হুট করে সংঘাতগুলো আরও বড় আকার নেওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়।

সাবেক কূটনীতিক এবং একই সাথে কার্নেগি এন্ডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের সিনিয়র ফেলো অ্যাশলে টেলিস বলেন, 'চীনের সাথে পাকিস্তানের এখন একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠায়, ভারতের নিরাপত্তার জন্য যুক্তরাষ্ট্র এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।' 

বর্তমানে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারত সামরিক পদক্ষেপ নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রও এখন আগের তুলনায় আরও শক্তিশালীভাবে ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ২২ এপ্রিলের সন্ত্রাসী হামলার পর প্রথমেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে কথা বলেন। ভারতের প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের শক্তিশালী সমর্থনকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার একটি 'সবুজ সংকেত' হিসেবে দেখে দিল্লি, যদিও সেসময় যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছিল।

পরিস্থিতি পরিবর্তনের আরেকটি ইঙ্গিত ছিল—কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার পর ট্রাম্পসহ বিশ্বের অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে ফোনালাপ করছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি। তবে সেসময় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে তার আলাপ হয়নি। 

হামলার প্রায় এক সপ্তাহ পর রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা জানান, মোদি ও পুতিন অবশেষে এই সপ্তাহে কথা বলেছেন। 

অপরদিকে, পাকিস্তানকে 'লৌহ-দৃঢ় বন্ধু ও সব ধরনের পরিস্থিতিতে কৌশলী অংশীদার' হিসেবে আখ্যায়িত করে চীন তার পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়ে আসছে।

এই ধরনের প্রবণতাগুলো সামনের দিনের সামরিক সংঘাতগুলোতে আরও স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তা লিন্ডসে ফোর্ড বলেন, 'আপনি যদি চিন্তা করেন, ভবিষ্যতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কোনো যুদ্ধ হলে সেটার চিত্র কেমন দেখাবে, তাহলে সেটা অনেকটা হবে এরকম—ভারত যুদ্ধ করবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে, এবং পাকিস্তান যুদ্ধ করবে চীনের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে। গত এক দশকে দেশ দুটির নিরাপত্তা সহযোগীদের অবস্থান অনেকটাই বদলে গেছে।' 

সাম্প্রতিক বছরগুলোর আগ পর্যন্ত দক্ষিণ এশিয়ার জোটকে রূপ দিয়ে এসেছিল স্নায়ুযুদ্ধের হিসাব-নিকাশ ।

জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী দেশগুলোর একটি ছিল ভারত। তবুও সময়ের পরিক্রমায় ভারত ধীরে ধীরে সোভিয়েত ইউনিয়নের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে। অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ ভারতের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে আসা হতো মস্কো থেকে। 

অন্যদিকে আফগানিস্তানে সোভিয়েতদের পরাজিত করার লক্ষ্যে পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের 'ফ্রন্টলাইন পার্টনার' (সম্মুখসারির মিত্র) হয়ে ওঠে। 

এই সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে ১৯৮০-এর দশকে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী তার অস্ত্রাগার আরও মজবুত করতে শুরু করে—বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে কয়েক ডজন লোভনীয় এফ-১৬ যুদ্ধবিমান কেনার পর ভারতের বিমান আধিপত্য কিছুটা হলেও খর্ব হয়েছিল।

স্নায়ুযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ১৯৯০-এর দশকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার জন্য ভারত ও পাকিস্তান—উভয় দেশই মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হয়েছিল। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে পাকিস্তানকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান সরবরাহ করতে দেয়া হয়নি।

তবে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক ও পেন্টাগনে সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানের ভাগ্য আবারও বদলে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে পাকিস্তান আবারও যুক্তরাষ্ট্রের 'ফ্রন্টলাইন পার্টনার' হিসেবে আবির্ভূত হয়।

যদিও সেসময় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একদিকে তালেবানের নেতাদের আশ্রয় দেওয়া এবং অন্যদিকে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তা করার—'ডাবল গেম'-এর অভিযোগ ওঠে, তবুও মার্কিন সামরিক বাহিনী দেশটিতে কয়েক দশক ধরে দেশটিতে কয়েকশো কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা ঢেলেছিল। তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তখন পাকিস্তানের অস্ত্রের শীর্ষ সরবরাহকারী হয়ে ওঠে। এর পরের স্থানেই ছিল চীন।

চীনের সাথে এই উষ্ণ সম্পর্কের কারণে মূলত যখন থেকে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের প্রতি আগ্রহ হারাতে শুরু করে, ততই পাকিস্তান চীনের দিকে ঝুঁকতে থাকে। 

স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, ২০০০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে পাকিস্তানের মোট ৩৮ শতাংশ অস্ত্রের সরবরাহকারী ছিল চীন। কিন্তু গত চার বছরে এই হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮০ শতাংশে। 

একই সময়ে ভারত রাশিয়ার ওপর নির্ভরতা অর্ধেকেরও বেশি কমিয়ে এনেছে। ২০০৬ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে ভারতের প্রায় ৮০ শতাংশ প্রধান সামরিক সরঞ্জাম এসেছিল রাশিয়া থেকে। কিন্তু গত চার বছরে এই হার নেমে এসেছে প্রায় ৩৮ শতাংশে। এখন ভারতের সামরিক আমদানির অর্ধেকেরও বেশি আসছে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্র দেশ—ফ্রান্স ও ইসরায়েলের কাছ থেকে।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কে যতই শীতলতা আসুক না কেন, একটি খাতে ব্যতিক্রম রয়েই গেছে—এফ-১৬ যুদ্ধবিমান কর্মসূচি। গত দুই দশকে পাকিস্তান তার এফ-১৬ বহর আরও বিস্তৃত করেছে। এমনকি যুদ্ধবিমানগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ ও সেবার জন্য বাইডেন প্রশাসন প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি পাস করিয়ে দেয় ।

২০১৯ সালে পাকিস্তান একটি এফ-১৬ ব্যবহার করে একটি রাশিয়ান নির্মিত ভারতীয় জেট ভূপাতিত করে । ঘটনাটির পর তীব্র আপত্তি তোলে দিল্লি, দাবি করে, পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে করা চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। সেই চুক্তিতে বলা ছিল, এসব বিমান শুধুমাত্র সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানেই ব্যবহার করা যাবে।

ভারতের ক্ষোভ সামলাতে তৎকালীন মার্কিন কর্মকর্তারা দাবি করেন যে পাকিস্তানকে তারা সতর্ক করেছেন। তবে মার্কিন কূটনৈতিকরা বহু আগেই ইঙ্গিত দিয়ে আসছিলেন যে, পাকিস্তান তার বিমানবাহিনী মূলত গড়ে তুলছে ভারতের সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধের কথা মাথায় রেখে ।

২০১৯ সালের সেই সংঘাতে ভারতের একটি হেলিকপ্টারও ভুলবশত গুলি করে ভূপাতিত করা হয়—যাতে নিহত হন ছয়জন সামরিক সদস্য। ঘটনাটি ভারতের সামরিক বাহিনীর দুর্বলতা বেশ স্পষ্ট করে দেয়। তারপর থেকেই ভারত তার সামরিক বাহিনীকে আধুনিক করতে কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করছে।

তবে এবারের পরিস্থিতি আরও জটিল ও বিপজ্জনক—কারণ এখন আর শুধু ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি নয়, পাকিস্তানের পেছনে রয়েছে চীন। এই উদ্ভূত পরিস্থিতে চীন শুধু একজন নীরব দর্শকই নয়, বরং সক্রিয়ভাবে সরাসরি সহযোগিতা করছে ভারতের প্রতিপক্ষকেও। 

যেসব মার্কিন কর্মকর্তারা ২০১৯ সালের ঘটনাবলীগুলো খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করে আসছিলেন, তাদের অনেকের কাছে একটি বিষয় স্পষ্ট—একমাত্র মানুষের ভুলই এই অঞ্চলের সংঘাতকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যেতে পারে।

তাদের আশঙ্কা, উগ্র জাতীয়তাবাদ ভারত ও পাকিস্তানের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। দুই দেশেরই সামরিক বাহিনী বেশ শক্তিশালী, এবং দুই দেশেরই একে অপরের প্রতি গভীর অবিশ্বাস। এমন পরিস্থিতিতে সামান্য ভুল, কিংবা আদেশ অমান্য করে নেয়া ছোট কোনো পদক্ষেপও ভয়াবহ সংঘাতে পরিণত হতে পারে।

সাবেক মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা লিন্ডসে ফোর্ড বলেন, '২০১৯ সালে আমরা যেমনটা দেখেছি—আন্তঃসীমান্ত বিমান হামলা এবং আকাশযুদ্ধের মতো পরিস্থিতি যে কোনো সময় এই সংঘাতকে বিপজ্জনক পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে। এবং যখন এরকম পরিস্থিতে দুটি পারমাণবিক শক্তিশালী দেশ জড়িত থাকে, বিষয়টি তখন আরও ভয়াবহ।' অনুবাদ: বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়