বিয়ে একটি নতুন জীবনের সূচনা, যেখানে দুই ভিন্ন মানুষ এক ছাদের নিচে বসবাস শুরু করেন। সামাজিক ও মানসিক স্থিতি বাড়ানোর দিক থেকে বিবাহিতরা অনেক সময়ই এগিয়ে থাকেন বলে বহু গবেষণায় উঠে এসেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক এক গবেষণা জানাচ্ছে এক বিপরীত চিত্র—বিবাহিতদের ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রষ্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অবিবাহিতদের তুলনায় অনেক বেশি।
ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা প্রায় ১৮ বছর ধরে ৭২ বছর গড় বয়সের ২৪০০-এর বেশি প্রাপ্তবয়স্ক আমেরিকান নাগরিকের ওপর এই গবেষণা চালিয়েছেন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বিবাহিত, ডিভোর্সি, অবিবাহিত ও বিধবা—সব ধরনের মানুষই ছিলেন।
গবেষণার চমকপ্রদ ফলাফল:
বিবাহিতদের মধ্যে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।
অবিবাহিতদের তুলনায় বিবাহিতদের মধ্যে ডিমেনশিয়া হওয়ার সম্ভাবনা ৪০ শতাংশ বেশি।
ডিভোর্সিদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি ৩৪ শতাংশ কম এবং
বিধবাদের ক্ষেত্রে ২৭ শতাংশ কম।
কেন এই ঝুঁকি বেশি বিবাহিতদের?
গবেষকরা জানিয়েছেন, যদিও বিষয়টির পেছনে সরাসরি কোনো কারণ স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা যায়নি, তবে কিছু সম্ভাব্য ব্যাখ্যা রয়েছে। বিবাহিতদের জীবনে অতিরিক্ত দায়িত্ব, মানসিক চাপ, জীবনসঙ্গীর যত্ন নেওয়ার বোঝা এবং আত্মনির্ভরশীলতার অভাব—এসব কারণ মস্তিষ্কের উপর দীর্ঘমেয়াদে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
আগে যা বলেছিল গবেষণা
এর আগের বহু গবেষণা বলেছে, বিবাহিতরা সামাজিকভাবে বেশি সংযুক্ত থাকেন, তারা সুস্থ জীবনধারা মেনে চলেন এবং মানসিকভাবে বেশি স্থিতিশীল থাকেন। ফলে তাঁদের ডিমেনশিয়া হওয়ার আশঙ্কা কম হওয়ার কথা। কিন্তু নতুন এই গবেষণা সেই বিশ্বাসকে অনেকটাই চ্যালেঞ্জ করেছে।
অবিবাহিতদের ক্ষেত্রে কী বলছে গবেষণা?
অবিবাহিতরা কম অসুস্থ হন বলেই চিকিৎসাও কম করান। তাঁদের মানসিক চাপ তুলনামূলকভাবে কম, যা ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয় বলে গবেষকরা মনে করছেন।
এই গবেষণা আবারও প্রমাণ করল যে, শুধু বিবাহিত জীবন মানেই মানসিক স্বস্তি—এই ধারণার সঙ্গে বাস্তবের মিল সব সময় নাও থাকতে পারে। শারীরিক সুস্থতার মতোই মানসিক চাপ এবং জীবনযাপনের ধরন মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের ওপর বড় প্রভাব ফেলে। সূত্র : ওয়ানইন্ডিয়া