শিরোনাম
◈ ভূমিকম্পে ঢাকায় আরমানীটোলায় ভবন ধস, আতঙ্কে রাস্তায় মানুষের ভিড়, ধসে পড়েছে একাংশ ◈ 'এখনই তত্ত্বাবধায়ক' দাবি থেকে কেন সরে এলো বিএনপি ও জামায়াত? ◈ ভূমিকম্পে কেঁপে উঠলো কলকাতাও ◈ আর্থিক দুর্নীতির মামলায় প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর স্বামীর বিরুদ্ধে দিল্লির আদালতে চার্জশিট জমা ◈ হামজা চৌধুরীর অভিনন্দন বার্তা পে‌য়ে বিস্মিত মুশফিকুর র‌হিম ◈ ঢাকাসহ বাংলাদেশের অন্যান্য স্থানে ৫.২ মাত্রার ভূমিকম্প ◈ ভারত–বাংলাদেশ নিরাপত্তা সংলাপ: দুই দিনের বৈঠকে ‘ইতিবাচক বার্তা’ ◈ পেশাগত নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও কর্মক্ষেত্র নিরাপত্তায় বৈপ্লবিক অগ্রগতি—আইএলওর ১০টি মৌলিক দলিল অনুমোদন করলো বাংলাদেশ ◈ প্রবাসী ভোটারদের রেকর্ড সাড়া—পোস্টাল ভোট অ্যাপে কোরিয়া-জাপান এগিয়ে ◈ সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণে সম্মতি খালেদা জিয়ার

প্রকাশিত : ১৯ নভেম্বর, ২০২৫, ০৯:২৫ রাত
আপডেট : ২১ নভেম্বর, ২০২৫, ১১:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পাল্টা শুল্কে মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি কমেছে

বাংলাদেশের একক বৃহত্তম রপ্তানি বাজার যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক (আরএমজি) রপ্তানি আগস্ট থেকে অক্টোবরের মধ্যে প্রায় ৩ শতাংশ কমেছে। খাত সংশ্লিষ্টরা গত আগস্টে ট্রাম্প প্রশাসন আরোপিত নতুন পাল্টা শুল্ককেই (রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ) এই পতনের জন্য দায়ী করছেন।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের (২০২৫-২৬) আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত মার্কিন বাজারে আরএমজি রপ্তানি হয়েছে ১.৭৯ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৫৩ মিলিয়ন ডলার বা ২.৮৮ শতাংশ কম।

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সহ-সভাপতি মো. শাহাবুদ্দিন চৌধুরী টিবিএসকে বলেন, 'মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি কমার মূল কারণ হলো, আমাদের পণ্যের ওপর নতুন ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক। এর ফলে বাজার সংকুচিত হয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের ধারণা, কম চাহিদার কারণে আগামী মাসগুলোতেও ওই বাজারে রপ্তানি কমতে পারে।' দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় পোশাক রপ্তানিকারক শাহাব আরও যোগ বলেন, 'দুই সপ্তাহ আগে আমি যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে প্রায় ২০টি ব্র্যান্ডের দোকান পরিদর্শন করেছি। খুব কম ক্রেতা দেখেছি। বিক্রয় কর্মীরাও জানিয়েছেন, বিক্রি কমছে।'

তবে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে মোট রপ্তানি দাঁড়িয়েছে ২.৫৯ বিলিয়ন ডলার, যেখানে বিগত অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ২.৪৬ বিলিয়ন ডলার; অর্থাৎ ৫.১৪ শতাংশের একটি সামান্য প্রবৃদ্ধি। এই প্রবৃদ্ধি মূলত জুলাই মাসের চালানে শক্তিশালী উল্লম্ফনের কারণে হয়েছে, যা ছিল ১৯ শতাংশ।

শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন শুল্ক ৭ আগস্ট কার্যকর হওয়ার আগে অগ্রিম ক্রয়ের কারণেই এ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে।

বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, 'এই উল্লম্ফন মূলত প্রত্যাশিত শুল্কের প্রভাব পড়ার আগে অগ্রিম ক্রয়ের কারণে হয়েছে।'

বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জ—যা বাংলাদেশের পোশাক খাতে টেকসই ও উদ্ভাবনী অনুশীলনকে উৎসাহিত করে—এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবেল আরও বলেন, 'পরবর্তী তিন মাসে নেতিবাচক বা দুর্বল প্রবৃদ্ধির যে প্রবণতা দেখা গেছে, তা অন্তর্নিহিত চাহিদা ও নীতিগত অনিশ্চয়তার ইঙ্গিত দেয়।'

তিনি সতর্ক করে বলেন, 'আগামী কয়েকটি প্রান্তিক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।' তিনি আরও বলেন, 'বাংলাদেশের জন্য মূল চ্যালেঞ্জ হবে, এই কঠিন শুল্ক পরিবেশকে গভীরতর মূল্য সংযোজন, বাজার বৈচিত্র্যকরণ এবং শক্তিশালী বাণিজ্য কূটনীতির মাধ্যমে সুযোগে পরিণত করতে পারা যায় কি না, তা নির্ধারণ করা।'

গত আগস্ট থেকে ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা বেশিরভাগ পণ্যের ওপর উল্লেখযোগ্য শুল্ক আরোপ করেছে। নতুন শুল্ক কাঠামোর আওতায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে অতিরিক্ত ২০ শতাংশ শুল্কের আওতায় পড়েছে।

শুধু বাংলাদেশ নয়, চীন, ভারত, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়াসহ প্রায় সব প্রতিযোগী দেশই এই নতুন শুল্কের আওতায় এসেছে। তাদের মধ্যে চীন ও ভারতের ওপর আরোপিত শুল্ক বাংলাদেশের তুলনায় আরও বেশি।

এর ফলে বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের প্রত্যাশা ছিল, মার্কিন ক্রেতারা চীন ও ভারত থেকে অর্ডার সরিয়ে বাংলাদেশে আনবে। কিন্তু বাস্তবে তেমনটি ঘটেনি।

নতুন শুল্ক আরোপের পর চীন, ভারত বা অন্যান্য দেশ থেকে রপ্তানি কমেছে কি না—এ ব্যাপারে এখনো কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য মেলেনি। মার্কিন বাণিজ্য বিভাগের একটি শাখা অফিস অফ টেক্সটাইলস অ্যান্ড অ্যাপারেল (ওটিইএক্সএ) গত জুলাই থেকে তাদের পোশাক আমদানি-সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করেনি। ফলে অন্যান্য দেশের যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি বেড়েছে নাকি কমেছে, তা স্পষ্ট নয়।

এদিকে ভারতীয় গণমাধ্যমে জানানো হয়েছে, নতুন শুল্ক আরোপের পর আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে দেশটির বস্ত্র রপ্তানি কমেছে।

সূত্র: দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়