শিরোনাম

প্রকাশিত : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১২:০১ রাত
আপডেট : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০২:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : মনজুর এ আজিজ

তিন গবেষণা প্রকল্পে বিইপিআরসির অর্থায়ন চুক্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক : আগের সরকারের ৩ বছরে মাত্র একটি গবেষণা প্রকল্পে অর্থায়ন চুক্তি করলেও বর্তমানে একদিনেই তিনটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ গবেষণা কাউন্সিল (বিইপিআরসি)। গত এক বছরে মোট ৪টি প্রকল্পের চুক্তি সম্পাদন করেছে এ সংস্থাটি। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিইপিআরসির কনফারেন্স রুমে বুয়েট, এমআইএসটি, শাবিপ্রবির সঙ্গে পৃথক ৩টি চুক্তি স্বাক্ষর সম্পন্ন হয়।

গবেষণা প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- বুয়েট অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল বাসিতের নেতৃত্বে সুপার ক্যাপাসিটর প্রকল্প। ওই প্রকল্পের আওতায় দেশীয় উপাদানে ব্যাটারি উদ্ভাবনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এখন যে ব্যাটারি আমদানি করতে ৩ লাখ টাকার মতো প্রয়োজন পড়ে। তার চেয়ে উন্নতমানের ব্যাটারি মাত্র ২৫ হাজার টাকায় তৈরি করা সম্ভব। সাধারণ ব্যাটারি ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার সাইকেল লাইফটাইম হলেও এই ব্যাটারিগুলো ১ লাখ সাইকেল লাইফ আশা করা হচ্ছে। মূলত সৌর বিদ্যুতের স্টোরেজ হিসেবে ব্যবহৃত হবে। যাতে দিনের বেলা চার্জ ধরে রেখে রাতে যানবাহনে চার্জ করা যাবে। এই প্রকল্পে বিইপিআরসি ২ কোটি ৯৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা অর্থায়ন করবে।

মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) ইনস্ট্রাকটর মেজর শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনের নেতৃত্বে এআই ভিত্তিক সৌর বিদ্যুতের রিয়ালটাইম মনিটর এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার প্রযুক্তি উদ্ভাবন। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে সৌর বিদ্যুতের প্রকৃত উৎপাদন এবং কোন কারণে উৎপাদন ব্যহত হলে তা জানা যাবে। এই প্রকল্পে বিইপিআরসি ১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা অর্থায়ন করবে।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক নুর উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে ফুয়েল সেল গবেষণা প্রকল্প। ওই প্রকল্পের মাধ্যমে নতুন প্রযুক্তি সম্পন্ন হাইড্রোজেন গাড়ির ফুয়েলের উপকরণ নিয়ে কাজ করবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ফারজানা মমতাজ। প্রকল্পগুলোর উপস্থাপনা দেখে উচ্ছাস প্রকাশ করে তিনি বলেন, দেশের জন্য কাজ করার যে আন্তরিকতা, এটার আর্থিক মূল্যদিয়ে মাপা যায় না। আমরা দেশের কোন সমস্যা বাইরে থেকে লোক হায়ার করছি, খরচ হচ্ছে কিন্তু যথাযথ সমাধান পাচ্ছি না। কারণ আমাদের সমস্যা সম্পর্কে তারা অবগত নন, যে কারণে আমাদের সমস্যার স্থায়ী সমাধান হচ্ছে না। অনেক ছোট ছোট বিষয়ে সই করতে হচ্ছে, এতে অনেক অর্থ খরচ হচ্ছে। আমরা যদি দেশের মধ্য থেকে নিজেদের মতো করে সমস্যার সমাধান বের করতে পারি, তাহলেই ভালো সমাধান হবে। 

সুপারি ক্যাপাসিটর প্রসঙ্গে বলেন, সৌর বিদ্যুতে স্টোরেজ করতে গেলে অনেক খরচ পড়ছে। যে কারণে স্টোরেজ ছাড়াই ভাবতে হচ্ছে। সাশ্রয়ী খরচে যদি স্টোরেজ নিশ্চিত করা যায়, তাহলে বিশাল পরিবর্তন আসবে। তখন আর ব্যয়বহুল তেল ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রয়োজন হবে না।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে বিশেষজ্ঞ যারা রয়েছেন তাদের কাজে লাগাতে পারছি না। আমরা কিন্তু খুব বেশি দূরে নেই। আমরা আর কতদিন পেছনে পড়ে থাকবো। তরুণ প্রজন্মকে সামনে পথ দেখিয়ে দিতে পারলে তারাই দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। সেই দিন জ্ঞানে, বিজ্ঞানে বিশ্ব দরবারে সবার সমান হিসেবে থাকতে পারবো।

বিইপিআরসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওয়াহিদ হোসেন বলেন, আমি এক বছর আগে যখন চেয়ারম্যান পদে যোগদান করি তখন জানতে চেয়েছিলাম মূল চ্যালেঞ্জটা কি, তারা জানালেন মানসম্মত গবেষণা প্রকল্প পাওয়া যাচ্ছে না। আমি অনাহূতভাবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গেছি, প্রোটকল নিয়ে কোন চিন্তা করিনি। আজকে তার সুফল পেতে শুরু করেছি।

বিইপিআরসি ৯ বছরে মাত্র ১৩টি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। আমরা ১ বছরে ৪টি প্রকল্পের চুক্তি করেছি। আরও দুটি প্রকল্প প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। গত অর্থবছরে ৭১ শতাংশ কাজ করেছি এবার ১০০ শতাংশে হবে না, বাড়তি বাজেট লাগবে।
তিনি বলেন, অনেকে প্রশ্ন করেন বিইপিআরসি শুধু প্রোডাক্ট চায়, প্রায়োগিক গবেষণা করতে হলে প্রোডাক্ট লাগবে, আমাদের এই চাওয়াটা অমূলক নয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়