আড়াই বছর আয়নাঘরে আটক থাকার দাবি করেছেন শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন। আজ বুধবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে রিমান্ড আবেদনের শুনানির সময় তিনি এ দাবি করেন।
আদালতে সুব্রত বলেন, ‘আমাকে আড়াই বছর আয়নাঘরে রাখা হয়। আমি নাকি চুরি করি, ছিনতাই করি। এখন কত কী বানায়। আমার কোনো পাওয়ার দরকার নেই। আমি চাইলে নিজেই টিভি খুলতাম। সাংবাদিক রাখতাম।’
সুব্রত আরও বলেন, ‘২০২২ সালে আমাকে চোখ বেঁধে নিয়ে যায়। আমাকে আড়াই বছর ধরে আয়নাঘরে রাখে। আমাকে গত বছরের ৫ আগস্ট রাত ৩টার দিকে ছেড়ে দেয়। আমাকে মাথায় রড দিয়ে পিটিয়ে শেষ করে দিয়েছে।’
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার ভোররাত ৫টার দিকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ অভিযানে কুষ্টিয়া জেলা থেকে শীর্ষ তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে ফতেহ আলী ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী মোল্লা মাসুদ ওরফে আবু রাসেল মাসুদকে আটক করা হয়। পরে তাঁদের তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে আটক করা হয় সুব্রত বাইনের দুই সহযোগী শুটার আরাফাত ও শরীফকে। পরে আজ বুধবার তাঁদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা করা হয়।
অভিযানের সময় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে পাঁচটি বিদেশি পিস্তল, ১০টি ম্যাগাজিন, ৫৩টি গুলি ও একটি স্যাটেলাইট ফোন উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহার করতেন বলে মামলায় বলা হয়েছে।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, ২০০১ সালে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আসামি সুব্রত বাইন, তাঁর সহযোগী মোল্লা মাসুদসহ ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম ঘোষণা করে এবং তাঁদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়। সুব্রত সন্ত্রাসী বাহিনী সেভেন স্টার গ্রুপ পরিচালনা করতেন। সুব্রত বাইন সে সময় খুন-ডাকাতি সংঘটনের মধ্য দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলেন। আসামিরা বিভিন্ন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর তাঁরা আবারও সন্ত্রাসী কার্যক্রম শুরু করেন। তাঁদের গ্রুপে আরও অনেকে জড়িত। তাঁদের শনাক্ত করতে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা এবং অভিযান পরিচালনা করা প্রয়োজন। অভিযান পরিচালনা করতে পারলে আরও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব হবে।