পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি ও সন্ত্রাসী তৎপরতার পরিকল্পনা ভেস্তে দিলো বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। বিজিবি’র রাঙ্গামাটির কাপ্তাই ব্যাটালিয়ন (৪১ বিজিবি)-এর আওতাধীন কুকিমারাপাড়া বিজিবি ক্যাম্পের তৎপরতায় গতকাল বিকালে একটি যাত্রীবাহী বাস থেকে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
বিজিবি কর্তৃপক্ষ জানায়, বান্দরবান থেকে রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা করা সম্রাট পরিবহনের একটি বাসে (ঢাকা মেট্রো-ব-১১-১৬৩০) তল্লাশি চালিয়ে ৫০০টি দেশীয় দা/চাপাতি উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে বাসের চালক ও সহকারী স্বীকার করেছে, প্রসীত বিকাশ খীসার নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফ সংগঠনের নির্দেশে খাগড়াছড়ি ও গুইমারা এলাকায় সহিংসতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এসব অস্ত্র পরিবহন করা হচ্ছিলো। বিজিবি জানায়, উদ্ধারকৃত অস্ত্র, বাস ও সংশ্লিষ্ট তথ্য আইনগত ব্যবস্থার জন্য পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ক্যাম্প কমান্ডার সুবেদার আব্দুল মালেকের নেতৃত্বে চেকপোস্টে দায়িত্বরত বিজিবি সদস্য কর্তৃক বান্দরবান হতে রাঙ্গামাটিগামী সম্রাট পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস তল্লাশি করে আনুমানিক ৫০০টি দেশীয় অস্ত্র (দা/চাপাতি) মালিকবিহীন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে ওই বাসের চালক মো. শুক্কুর আলী ও চালকের সহকারী মো. সাব্বিরকে আটক করা হয়। চালক শুক্কুর আলী রাঙ্গামাটির কোতোয়ালি থানার রিজার্ভ বাজার এলাকার জয়নাল আবেদীনের পুত্র। চালকের সহকারী সাব্বির একই এলাকার মো. ইউসুফের পুত্র।
তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাসসহ আটক করা হয়। অবৈধ অস্ত্র পরিবহনের দায়ে এবং এ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য উদ্ঘাটনের জন্য বাসের চালক ও সহকারীকে কাপ্তাই থানা পুলিশ কর্তৃক জিজ্ঞাসাবাদ কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে থানার ওসি মোহাম্মদ কায় কিসলু জানান।
কাপ্তাই ব্যাটালিয়নের কর্মকর্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় বিজিবি সর্বদা সজাগ। যারা সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে চায়, বিশেষত ইউপিডিএফসহ সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন এবং অস্ত্রগুলোর উৎস ও পরিকল্পিত ব্যবহার সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চলছে। এদিকে, খাগড়াছড়িতে মারমা শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় অবরোধের নামে খাগড়াছড়ি জুড়ে ব্যাপক সহিংসতা চালায় ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীরা।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে ইউপিডিএফের সহিংস কর্মকাণ্ড বেড়ে যাওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নজরদারি বাড়িয়েছে। বিজিবি’র এ সফল অভিযানকে সন্ত্রাসী তৎপরতা প্রতিরোধে একটি কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। সূত্র: মানবজমিন