শিরোনাম
◈ উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে জবাব দিলেন সাকিব ◈ রাখাইনের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে, এখনই রাজনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়ার সময়: খলিলুর রহমান ◈ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন ভারত: পাকিস্তানকে খোঁচা দিয়ে মোদির স্ট্যাটাস ◈ পা‌কিস্তা‌নের বিরু‌দ্ধে জ‌য়ের হ‌্যা‌ট‌ট্রিক, এশিয়া কা‌পে ভারত অপরা‌জিত চ‌্যা‌ম্পিয়ন ◈ ৪৭তম বিসিএস প্রিলির ফল প্রকাশ, পাস ১০৬৪৪ জন ◈ দুর্গাপূজা শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, ঐক্যের প্রতীক: প্রধান উপদেষ্টা (ভিডিও) ◈ ঘন ঘন ভূমিকম্প কিসের ইঙ্গিত! ◈ কাপ্তাইয়ে যাত্রীবাহী বাস থেকে ৫০০ দা-চাপাতি উদ্ধার, ইউপিডিএফের সহিংসতার পরিকল্পনা ভেস্তে দিলো বিজিবি ◈ অমর একুশে বইমেলা স্থগিত ◈ প্রাথমিকে ছুটি কমছে, বছরে খোলা থাকবে আরও বেশি দিন

প্রকাশিত : ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৮:৫৬ রাত
আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৫:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রুমিন ফারহানাকে মনোনয়ন থেকে বিরত রাখতে একজোট বিএনপি নেতারা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে বিএনপির নেত্রী রুমিন ফারহানাকে ‘বহিরাগত’ উল্লেখ করে তাঁকে ঠেকাতে একজোট হয়েছে দলটির মনোনয়নপ্রত্যাশী সাতজন নেতা। শনিবার দুপুরে আশুগঞ্জের একটি রেস্তোরাঁয় তাঁরা বৈঠক করেছেন। সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দার বাইরে কাউকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে চাইছেন না তাঁরা।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে প্রার্থী হতে চান সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক রুমিন ফারহানা।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, রুমিন ফারহানাকে ঠেকাতে শনিবার দুপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ উপজেলার একটি রেস্তোরাঁয় বৈঠক করেন বিএনপির ছয়জন মনোনয়নপ্রত্যাশী। এ ছাড়া আরেকজন নেতা ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন। তাঁরা হলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির উপদেষ্টা শেখ মো. শামীম, জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও সরাইল উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনিসুল ইসলাম ঠাকুর, জেলা বিএনপির আইন সম্পাদক ও সরাইল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লস্কর, জেলা বিএনপির সদস্য আহসান উদ্দিন খান, আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান সিরাজ, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আক্তার হোসেন। বৈঠকে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব এস এন তরুণ দে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন।

বৈঠক উপস্থিত বিএনপি নেতারা বলেন, আগামী নির্বাচন সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে বিএনপি থেকে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী মাঠে কাজ করছেন। তাঁরা দীর্ঘদিন দলের পাশে ছিলেন, কারাভোগ করেছেন। গত ১৬ থেকে ১৭ বছর নেতা-কর্মীদের নিয়মিত খোঁজ নিয়েছেন। তাঁরা সবাই আসনের স্থায়ী বাসিন্দা। কিন্তু এখান থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী রুমিন ফারহানা সরাইল ও আশুগঞ্জের বাসিন্দা কিংবা ভোটার নন। তাঁদের দাবি, দুই উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দাদের মধ্য থেকে দল যেন কাউকে মনোনয়ন দেয়।

সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গেজেটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে বিজয়নগর উপজেলার বুধন্তী ও চান্দুরা ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসন থেকে কেটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এর পক্ষে ছিলেন রুমিন ফারহানা। বিপক্ষে ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী খালেদ হোসেন মাহবুবসহ (শ্যামল) স্থানীয় অনেক নেতা-কর্মী।

‘বিএনপির ঘাঁটি’ হিসেবে পরিচিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে থেকেই মাঠে নেমেছিলেন রুমিন ফারহানা। এখনো মাঠে আছেন। প্রায় প্রতি সপ্তাহে এলাকায় এসে গণসংযোগসহ নানা সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। তবে দলের ভেতরে একটি অংশ তাঁকে ‘বহিরাগত’ হিসেবে মনে করেন। তাঁরা এ আসনে রুমিন ফারহানাকে দল মনোনয়ন দিক, এটা চান না।

রুমিন ফারহানার বাবা ভাষাসংগ্রামী অলি আহাদ ছিলেন বিজয়নগর উপজেলার বুধন্তি ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা। তবে রুমিন ফারহানা এখন সরাইলের শাহবাজপুর গ্রামের বাসিন্দা। গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিজয়নগর উপজেলা সদর উপজেলার অধীন ছিল। ২০১২ সালে সদর উপজেলার বুধন্তী ও চান্দুরা ইউনিয়নসহ ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে বিজয়নগর উপজেলার যাত্রা শুরু হয়। আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারিত হওয়ায় ‘বহিরাগত’ বলে তাঁর বিরুদ্ধে যে প্রচারণা ছিল, তা কেটে গেছে বলে মনে করছেন অনেকে।

জানতে চাইলে সরাইল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লস্কর প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা আশুগঞ্জের একটি রেস্তোরাঁয় মধ্যাহ্নভোজ করেছেন। তাঁরা কয়েকটি বিষয়ে একমত হয়েছেন। তাঁরা এ আসনের স্থায়ী বাসিন্দার বাইরে কাউকে চান না। যাকেই মনোনয়ন দেওয়া হোক, তিনি যেন দুই উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা হন। বিষয়টি তাঁরা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের জানাবেন। রুমিন ফারহানা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি সরাইল-আশুগঞ্জের স্থায়ী বাসিন্দা নন। ১৭ বছর দুর্দিনে যাঁরা দলের পাশে ছিলেন, দল যেন তাঁদের মূল্যায়ন করে।

সরাইল উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনিসুল ইসলাম ঠাকুর প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা ১৬-১৭ বছর দলের জন্য কাজ করেছেন, দীর্ঘদিন মাঠে ছিলেন, কারাবরণ করেছেন—তাঁদের মধ্য থেকে একজনকে যেন দল মনোনয়ন দেয়। আপাতত দুই উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দাদের বাইরে কাউকে চাইছেন না। তবে দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। দল যাঁকে মনোনয়ন দেবে, তাঁকে তাঁরা মেনে নেবেন। রুমিন ফারহানার বিষয়ে বলেন, ‘আমরা কাউকে ইঙ্গিত করছি না। তবে আমি যত দূর জানি, তিনি সরাইল-আশুগঞ্জের বাসিন্দা নন। এমনকি ভোটারও নন।’

তবে সরাইল উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক মশিউর রহমান মাস্টার প্রথম আলোকে বলেন, রুমিন ফারহানা সরাইল উপজেলার শাহবাজপুরের ভোটার। বিজয়নগরের বুধন্তি তাঁর আদি বাড়ি। বিজয়নগরের দুটি ইউনিয়ন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে‌। তাই তাঁকে আর কোনোভাবেই বহিরাগত বলা যাবে না। সূত্র: প্রথম আলো 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়