আইরিন হক, বেনাপোল (যশোর): দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে যশোর সীমান্তে স্বর্ণপাচার বেড়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। পাচারের অর্থ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহার হচ্ছে। তবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সীমান্তে নজরদারি বাড়ানোর ফলে স্বর্ণ আটকও বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিজিবি ৪৯ ও ২১ ব্যাটালিয়নের অভিযানে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৭ কেজি ৪৩৪ গ্রাম স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ২৩ কোটি ১৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এ সময় গ্রেফতার হয়েছে ১৮ জন চোরাকারবারি। তবে পাচারের মূল হোতারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।
সীমান্ত সূত্র বলছে, প্রতিবছর দুর্গাপূজার আগে ভারতীয় বাজারে স্বর্ণের চাহিদা বেড়ে যায়। ফলে পাচারকারীরা যশোরের বেনাপোল রুটকে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে। কখনও সীমান্তপথে হেঁটে, কখনও আমদানি-রফতানি পণ্যবাহী ট্রাক কিংবা পাসপোর্টধারী যাত্রীদের মাধ্যমে স্বর্ণ পাচার হয়।
চক্রটি মূলত দুবাই, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও আফ্রিকা থেকে বিমানযোগে চালান এনে ঢাকায় পৌঁছায়। পরে ট্রেন ও বাসে যশোর সীমান্তে আনা হয় এবং সেখান থেকে বিভিন্ন এজেন্টের মাধ্যমে ভারতে পাচার করা হয়।
মানবাধিকার সংগঠন রাইটস যশোরের নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক বলেন, “স্বর্ণ যাচ্ছে, আর এর বিনিময়ে আসছে মাদকসহ নেশাজাত দ্রব্য। পাচারের মূল হোতারা ধরা না পড়ায় সীমান্ত অপরাধ বেড়েই চলছে।”
স্থানীয় বাসিন্দারাও পাচারকারীদের আনাগুনিতে আতঙ্ক প্রকাশ করেছেন। সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আগে অনিয়মিতভাবে স্বর্ণ যেত, এখন বৈধ ট্রাক ও পাসপোর্টধারী যাত্রীদের মাধ্যমেও পাচার হচ্ছে, যেখানে দুই দেশের চালকেরাও জড়িত।
৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী বলেন, “বিজিবি আন্তরিকভাবে কাজ করছে। গত ৮ মাস ১২ দিনে ১৭ কেজি ৪৩৪ গ্রাম স্বর্ণ ও ১৮ জন পাচারকারী আটকের তথ্য নিশ্চিত করছি। মূল হোতাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”