শিরোনাম
◈ শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টানানো সেই প্রধান শিক্ষিকা বরখাস্ত ◈ মব ভায়োলেন্সকে উৎসাহিত ও নারীর প্রতি সহিংস আচরণ করবেন না, অন্যের স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকুন: তারেক রহমান ◈ জুলাই গণভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টার বার্তা (ভিডিও) ◈ আইজিপির ভুয়া ভিডিও স্টেটমেন্ট এআই দিয়ে তৈরি: পুলিশ সদর দপ্তর ◈ অনিয়মের অভিযোগে বাতিল হলো ‘বিনিময়’ ◈ চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধে উত্তাপ, রাশিয়া-ইরান থেকে তেল কিনে চীনের ‘চ্যালেঞ্জ’ ট্রাম্পকে ◈ ‘বিপ্লব বিক্রি করে দিচ্ছে’: হাসিনার পতনের এক বছর পরও স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশে ◈ ভাইরাল অডিও: ঘুষ দাবির অভিযোগে এসআই চিরঞ্জীব ৬ ঘণ্টায় প্রত্যাহার ◈ কারফিউ, পথে পথে কাঁটাতারের বেড়া, ৫ই অগাস্ট ঢাকার সকাল কেমন ছিল? ◈ গণঅভ্যুত্থান দিবসে বেনাপোল বন্দরে আমদানি, রফতানি বন্ধ

প্রকাশিত : ০৫ আগস্ট, ২০২৫, ১২:০৫ দুপুর
আপডেট : ০৫ আগস্ট, ২০২৫, ০১:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

এই দিনে ছাত্র আন্দোলনে নেমে শেরপুরে তিন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছিলো

তপু সরকার হারুন, শেরপুর প্রতিনিধি : গত বছরে শেরপুরের রাজপথ রঞ্জিত হয়েছিল ওই ৩ তরুণের রক্তে। তাদের মধ্যে সবুজ মিয়া (১৮) নামে একজন আওয়ামী লীগের একাংশের মিছিল থেকে ছোড়া গুলিতে এবং মাহবুব আলম (২১) ও শারদুল আশীষ সৌরভ (২১) আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর টহলে থাকা ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে নিহত হন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও এসব ঘটনার বিচার হয়নি।  জড়িতদের শাস্তি ও নিরপরাধ আসামিদের অব্যাহতির মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচার চান নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্যরা।

নিহত সবুজ মিয়া শ্রীবরদী উপজেলার খরিয়াকাজীরচর ইউনিয়নের রূপারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। মাহবুব আলম শেরপুর সদর উপজেলার চৈতনখিলা এলাকার বাসিন্দা ও শেরপুর সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী এবং শারদুল আশীষ সৌরভ ঝিনাইগাতী উপজেলার বাসিন্দা ও সেকান্দর আলী ডিগ্রি কলেজের সম্মান প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে গত বছরের ৪ আগস্ট দুপুরের পর থেকেই শেরপুর শহর উত্তাল হতে শুরু করে। শহরের কলেজ গেট এলাকাসহ কয়েক জায়গায় বিকেল ৩টা থেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীরা জড়ো হতে থাকেন। এইচএসসি পরীক্ষার্থী সবুজ সেদিন বন্ধুদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দিতেই শহরে গিয়েছিলেন। বিকেলে শিক্ষার্থীরা একসাথে জড়ো হয়ে কলেজমোড় থেকে খরমপুরের দিকে মিছিল নিয়ে বের হন। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে খরমপুর-কলেজমোড় সড়কে বিপরীত দিক থেকে আসা আওয়ামী লীগের একাংশের মিছিল থেকে ছোড়া গুলি শিক্ষার্থী সবুজের মাথার ডান পাশে লাগলে মুহূর্তেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। দ্রুত তাঁকে জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। বাবার অসুস্থতার কারণে লেখাপড়ার পাশাপাশি একটি ওষুধের দোকানে কাজ করে সংসারের হাল ধরেছিলেন সবুজ।

সেদিনের ঘটনার কথা স্মরণ করে সবুজের মা সমেজা বেগম আর্তনাদ করে বলেন, আওয়ামী লীগের অস্ত্রধারী লোকজন আমার ছেলেকে গুলি করে মেরেছে। এখন আমি আমার ছেলের হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই, দ্রুত বিচার চাই।

সবুজের মৃত্যুর আধঘণ্টা পর বিকেল সোয়া ৫টার দিকে খরমপুর সড়কে আবার মিছিল বের করেন ছাত্র-জনতা। মিছিলের পেছন দিক থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর যৌথ টহলের মধ্যে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে বহনকারী একটি গাড়ি চাপা দেয় কয়েকজন আন্দোলনকারীকে। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান মাহবুব আলম ও শারদুল আশীষ সৌরভ। আহত হন আরও কয়েকজন।

মাহবুব আলম ৫ ভাই-বোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট ছিলেন। অসুস্থ বাবার পাশে দাঁড়াতে ফ্রিল্যান্সিং করে পরিবারের হাল ধরেছিলেন। তার মা মাহফুজা খাতুন বলেন, আমার ছেলের হত্যাকারীরা শাস্তি পাক,  এটা আমি চাই।

সৌরভের বাবা সোহরাব হোসেন ঘটনার বিচার চেয়ে বলেন, আমার ছেলে কোনো দল করত না। মিছিলে দাঁড়িয়েছিল মাত্র। পেছন থেকে আসা গাড়িটা তাকে পিষে দিল। এখন শুধু বিচার চাই।

এদিকে ওইসব হত্যার ঘটনায় নিহতদের স্বজনরা বাদী হয়ে সদর থানায় পৃথক ৩টি মামলা করেছিলেন। সম্প্রতি পুলিশ ওই মামলাগুলোর অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করে, যা সারাদেশের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানসংশ্লিষ্ট হত্যা মামলাগুলোর মধ্যে প্রথম অভিযোগপত্র। তবে মাহবুব ও সবুজ হত্যা মামলায় অনেক অপরাধীর নাম না থাকা এবং নিরপরাধ ব্যক্তির নাম থাকার অভিযোগ তুলে নারাজির আবেদন দিয়েছেন ওই ২ মামলার বাদী।

জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহ্বায়ক মামুনুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থলে আওয়ামী লীগের অনেক লোকজন ছিল। মূলত তাদের মিছিল থেকেই ওইদিন গুলিতে সবুজের প্রাণ গেছে। আর বাকি দুজন সরকারি গাড়ির চাপায় প্রাণ হারিয়েছেন। আমরা জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাই। এ ছাড়া কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যেন এ মামলায় ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেটার দাবিও জানাচ্ছি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়