পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় এক কিলোমিটারের একটি রাস্তা নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন স্থানীয়রা। এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজে অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করায় উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) এক কর্মচারীকে বিক্ষুব্ধ জনতা মারধর করেছে।
শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার ময়দানদীঘি ইউনিয়নের গাইঘাটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, গাইঘাটা এলাকায় প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ একটি রাস্তার নির্মাণ কাজ চলছিল। দীর্ঘদিন ধরে কাজ চললেও মান নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছিল। সম্প্রতি কার্পেটিংয়ের পর অংশবিশেষ উঠে যাওয়ায় স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে শনিবার দুপুরে কাজ বন্ধ করে দেন। ঘটনার দিন এলজিইডির কার্যসহকারী জাহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজের অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করলে উত্তেজিত জনতা তাকে ধাওয়া করে মারধর করে। পরে তিনি পাশের একটি ধানক্ষেতে আশ্রয় নেন।
এ বিষয়ে ময়দানদীঘি ইউনিয়নের ইউপি সদস্য (মেম্বার) বেলাল হোসেন সময় সংবাদকে বলেন, ‘এ রাস্তার কাজ দীর্ঘদিন ধরে চলছে। পাশের আরেকটি রাস্তায় কাজ শেষ হলেও এই রাস্তায় বারবার কাজ বন্ধ হচ্ছে অনিয়মের কারণে। আমি নিজে গিয়েও কাজের মান খুবই খারাপ পেয়েছি, তাই স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হয়ে বন্ধ করে দেয়।’
স্থানীয় বাসিন্দা ইউসুফ আলী সময় সংবাদকে বলেন, ‘রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় দেখি সামান্য চাপেই কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। মিস্ত্রিরা হাতুড়ি দিয়ে ঠিক করার চেষ্টা করছিলেন। এত অনিয়ম হওয়ার পরেও বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।’
মাসুদ রানা নামে আরেকজন বলেন, ‘রাস্তার ওপর কাদা ও ধুলাবালির স্তর না সরিয়েই কার্পেটিং করা হচ্ছিল। প্রতিবাদ করায় আমাকে হুমকি দেয়। এতে স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন।’
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মিস্ত্রি আবুল কালাম বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে কিছু জায়গায় বালু ছিল, তবুও কার্পেটিং করা হয়েছে। রাস্তা ভালোভাবে পরিষ্কার না করায় সমস্যা হয়েছে।’
মারধরের শিকার এলজিইডির কার্যসহকারী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘অফিস থেকে আমাকে কাজ দেখতে বলা হয়েছিল। গিয়ে দেখি স্থানীয়রা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। স্থানীয়দের অনিয়ম নেই বললে তারা উত্তেজিত হয়ে আমাকে মারধর করে। কোনোমতে পালিয়ে প্রাণে বাঁচি।’
প্রায় ১০ দিন আগে প্রাইম কোট দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বৃষ্টির পর পরিষ্কার না করেই কার্পেটিং করায় সমস্যা হয়েছে বলেও জানান জাহিদুল ইসলাম।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমআর ট্রেডার্সের প্রতিনিধি মিজানুর ইসলাম বলেন, ‘এটি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রকল্প। আমি সাব-ঠিকাদার হিসেবে যুক্ত ছিলাম, সব কিছু এখন মনে নেই।’
পঞ্চগড় জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ জামান বলেন, ‘রাস্তার কাজের অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি এবং স্থানীয়রা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। তবে কেউ গণপিটুনির শিকার হয়েছেন, এমন তথ্য এখনো আমরা পাইনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ উৎস: সময়নিউজ ও যমুনা টেলিভিশন।