মো. কামরুল ইসলাম, নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের শ্যামগ্রাম-সলিমগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের বেহাল অবস্থা দীর্ঘদিন ধরেই ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে কুলাসিং থেকে দেবদারু মোড় পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কের ভাঙাচোরা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেন এ পথে চলাচল এখন আতঙ্কের নাম। প্রতিদিনই ঘটছে যানবাহন বিকল, দুর্ঘটনা ও যাত্রী দুর্ভোগ।
স্থানীয় বাসিন্দা ও নিয়মিত যাত্রীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। একাধিক স্থানে বড় বড় গর্ত ও খানা-খন্দে ভরপুর এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত এখন যেন এক যন্ত্রণার নাম।
ইব্রাহিমপুর পালবাড়ি বাজার এলাকার সিএনজি চালক মুসা মিয়া বলেন, "আমি প্রতিদিনই কোনাঘাট মোড় থেকে সলিমগঞ্জ পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে যাই। শুধুমাত্র পেটের দায়ে এই ভাঙাচোরা রাস্তা দিয়ে চলাচল করি। প্রতিদিন বাসায় ফিরলে শরীরজুড়ে ব্যথা অনুভব করি। আর গাড়ির ক্ষতি তো হচ্ছেই—সামনের চাকায় ঝাঁকুনি খেয়ে মাঝে মাঝেই গ্যাসলাইন ফেটে যায়।"
স্থানীয় শ্যামগ্রাম মোহিনী কিশোর স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী রাফিয়া সুলতানা জানান, "স্কুলে যাওয়া আসার সময় আমাদের অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। বৃষ্টির দিনে কাদায় ভিজে জামা-কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। মাঝে মাঝে পড়ে গিয়েও চোট পাই।"
স্থানীয় শিক্ষক ও সাংবাদিক মো. কামরুল ইসলাম বলেন, এই সড়কটি শুধু একটি রাস্তা নয়—এটি নবীনগরের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইউনিয়নের মানুষের জীবনরেখা। শিক্ষার্থী, রোগী, কৃষক, সবাই এই পথে চলাচল করে। অথচ বছরের পর বছর ধরে এই সড়কটির বেহাল দশা দেখেও কর্তৃপক্ষ নিরব। অবিলম্বে সংস্কার না হলে মানুষের ক্ষোভ আরও বাড়বে।"
এলাকাবাসীর দাবি, শ্যামগ্রাম-সলিমগঞ্জ সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ একটি পথ। এটি দিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য শিক্ষার্থী, শ্রমজীবী মানুষ ও পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করে। দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থা চলতে থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি।
তাদের দাবি, অবিলম্বে সড়কটির পূর্ণাঙ্গ সংস্কার কাজ শুরু করা হোক, নয়তো বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন তারা। এ বিষয়ে ঠিকাদার লোকমান হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে নবীনগর উপজেলার এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাহবুব হোসেন জানান, এ কাজ শেষ হবার আরো সময় আছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ রাস্তার কাজটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পুরোদমে শুরু করবে বলে আমাদের জানিয়েছেন। আশা করছি নির্ধারিত সময়ের আগেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাস্তার কাজ শেষ করবে।