শিরোনাম
◈ বিদ্যুৎ আমদানিতে আদানির ৪০ কোটি ডলারের ‘শুল্ক ফাঁকির’ অনুসন্ধানে দুদক ◈ হাইকোর্টে চিন্ময় দাসের জামিন ◈ আবারও ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে গোলাগুলি ◈ আজ গভীর রা‌তে বা‌র্সেলোনা ও ইন্টার মিলান মু‌খোমু‌খি ◈ প্রতিনিয়ত যুদ্ধের হুমকি, প্রস্তুতি না রাখা আত্মঘাতী: প্রধান উপদেষ্টা ◈ বড় সুখবর দ্বৈত নাগরিকত্বের আবেদনকারীদের জন্য ◈ টি-টোয়েন্টি সি‌রিজ খেল‌তে পাকিস্তানে যাচ্ছে বাংলাদেশ ◈ আমার স্বামী চায় আমি খোলামেলা জামা পরি: মডেল পিয়া বিপাশা ◈ বিচারকাজে বাধা ও হুমকি: শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ ◈ ২০২৪ সালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রধান উপদেষ্টার ঘর হস্তান্তর: সেনাবাহিনীর দক্ষতায় অর্ধেক খরচে সফল বাস্তবায়ন

প্রকাশিত : ২৬ এপ্রিল, ২০২৫, ০৩:৫১ দুপুর
আপডেট : ২৭ এপ্রিল, ২০২৫, ১০:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শত্রুতায় হার মানলেন এক পরিশ্রমী কৃষক

ইফতেখার আলম বিশাল,রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহীর মতিহার থানাধীন বামনশিকড় পশ্চিমপাড়া গ্রামের এক নিঃস্ব কৃষক আবু বাক্কারের স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে রাতের আঁধারে সংঘটিত এক ন্যক্কারজনক ঘটনা। পূর্ব শত্রুতার জেরে শতাধিক লাউ গাছ কেটে ও চুরি করে পুরো মৌসুমের আয়ের পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে তার আপন মামা আব্দুল আজিজ ও তার পরিবার। গ্রামবাসীর ক্ষোভ, “লাউ গাছের মতো নিরীহ কৃষিজ পণ্যকে কেউ এভাবে ধ্বংস করতে পারে, এটা কল্পনাও করা যায় না।”

ভুক্তভোগী আবু বাক্কার একজন স্কুল কর্মচারী। চাকরির সামান্য বেতনে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। তাই প্রতিবছর তিনি তার পৈত্রিক জমিতে আবাদ করেন বিভিন্ন সবজি। এবারও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ১৬ শতাংশ জমিতে 'হাজারি' জাতের লাউ চাষ করেন, যা ভালো ফলনও দিয়েছিল। কিন্তু ২২ এপ্রিল গভীর রাতে কেটে ফেলা হয় তার শতাধিক লাউ গাছ। অনেক বড় বড় লাউ গাছের গোড়া কেটে নিয়ে যাওয়া হয় লাউসহ। সকালে এসে এই ধ্বংসযজ্ঞ দেখে বাক্কার কান্নায় ভেঙে পড়েন।

স্থানীয় লোকজন বলছেন, আবু বাক্কার একজন পরিশ্রমী ও নিরীহ মানুষ। গ্রামের অনেকেই তার কৃষি সাফল্য দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে সবজি চাষ শুরু করেছেন। এমন এক মানুষের ওপর এ ধরণের হামলা মোটেও মেনে নিতে পারছেন না তারা।

একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় শিক্ষক বলেন, “আজিজের মতো মানুষ গ্রামে একাধিক পরিবারকে নানা ভাবে হয়রানি করেছে। বাক্কারের বাগান কেটে ফেলা তার সর্বশেষ নিকৃষ্ট কাজ। প্রশাসনের উচিত, দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া।”

আরেকজন দোকানদার বলেন, “একজন চাষির কয়েক মাসের ঘাম, স্বপ্ন আর উপার্জনের পথ ধ্বংস করা হয়েছে। আমরা চাই প্রশাসন অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার করুক এবং বাক্কার যেন ক্ষতিপূরণ পায়।”

বাক্কার অভিযোগ করেন, মামা আজিজ ও তার ছেলে বাবু শুধু গাছ কেটেই ক্ষান্ত হননি, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ডিপ টিউবওয়েল থেকেও পানি নিতে দেন না তাকে। মাঝে মাঝেই দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ভয় দেখানো হয়।

বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান সাঈদ আলী মোর্শেদ বলেন, “আজিজ মীমাংসার পথে আসতে চায় না। সে কিছুটা উদ্ভট প্রকৃতির মানুষ। তাই আমি বাক্কারকে থানায় যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।”

থানায় দেয়া অভিযোগের ভিত্তিতে মতিহার থানার এসআই মিজানুর রহমান মিজান বলেন, “আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। তদন্তের পর অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

অন্যদিকে অভিযুক্ত আব্দুল আজিজ ফোনে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। আমি নিজেও বাক্কারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছি।”

গ্রামবাসী একবাক্যে জানাচ্ছেন— কৃষকের ঘাম যেন অপচয় না হয়, কৃষির প্রতি এ ধরনের হামলা যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায়। তাহলেই হবে প্রকৃত ন্যায়বিচার।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়