মাজহারুল শিপলু, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল): [২] জেলার মির্জাপুরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে চলতি বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই ফতেপুর এলাকায় তীব্র হয়েছে ভাঙ্গন। এরইমধ্যে নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে, অর্ধশতাধিক জমিজমা, ঘরবাড়ি, দোকানপাট। ফতেপুর-মির্জাপুর আঞ্চলিক সড়কটিও নদীগর্ভে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেকটাই ব্যাহত হচ্ছে। সরকারি সহযোগিতা পেলে জমি-ঘর হারানো পরিবারগুলো স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপন করতে পারবে এমনটিই আশা সকলের।
[৩] জানা যায়, তিন সপ্তাহ আগেও যেখানে মানুষের চলাচল থাকতো অবিরত এখন সেখানে শুধুই অথৈই পানি আর পানি। নদীর পারেই ষাটোর্ধ্ব সোনা বানুর নিজের একটিসহ ৩ ছেলের পাঁচটি ঘর ছিলো। হঠাৎ নদী ভাঙনে ৩টি ঘর বিলীন হয়ে গেছে। টিউবওয়েলের অর্ধেকাংশ ফাটল দেখা দিয়েছে, নিচের মাটিও সরে গেছে, সে সময়ও ঝুঁকি নিয়ে ওযু করা অবস্থায় কান্না জড়িত কন্ঠে তিনি আক্ষেপ করতে থাকেন।
[৪] সোনা বানুর মতো অর্ধ-শতাধিক মানুষের ঘর-দোকান গত তিন সপ্তাহের ব্যবধানে বংশাই নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এসব বাসিন্দার অবস্থান টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার হাট ফতেপুর গ্রামে। বংশাই নদীর পশ্চিম পারে অবস্থিত ফতেপুর বাজার ও গ্রামটি এখন নদী ভাঙ্গনে বিলীন হওয়ার পথে। ঘরবাড়ি, দোকানপাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা ও মির্জাপুর-ফতেপুরের যোগাযোগ সড়কটিও নদী গ্রাস করেছে। বসতভিটা হারিয়ে অনেক পরিবার ভাঙ্গন কবলিত এলাকা সংলগ্ন খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছে।
[৫] অপরদিকে ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে থাকা অনেকে আতঙ্কিত হয়ে বসবাস করছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণ করা না হলে ভাঙ্গন ভয়াবহ আকারে রূপ নিতে পারে বলে ধারণা ক্ষতিগ্রস্তদের। তাই সরকার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় বন্যা কবলিত এলাকায় বাঁধ নির্মানের দাবি জানান তারা।
[৬] এদিকে স্থানীয় এমপি খান আহমেদ শুভ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সদস্যরা ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।
[৭] টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ইতিমধ্যে আমরা জিও ব্যাগ ফেলতে শুরু করেছি। জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের মাধ্যমে ভাঙ্গন রোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
[৮] এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাকিলা বিনতে মতিন জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় ৬ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি সহযোগিতা দ্রুত পৌঁছে দেয়ার লক্ষে ইতিমধ্যে নামের তালিকা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। সম্পাদনা: ইস্রাফিল ফকির
প্রতিনিধি/আইএফ