শিরোনাম
◈ বহুমুখী সংকটে বাংলাদেশের পোশাক খাত: ভারতের নিষেধাজ্ঞা, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় হুমকিতে প্রবৃদ্ধি ◈ ভাবির কাটা মাথা নিয়ে থানায় আত্মসমর্পণ দেবরের! ◈ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বাংলাদেশে 'বিদেশি' পুশ ইন করছে আসাম: মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত ◈ সাবেক এমপি আনোয়ারুল আজিম মারা গেছেন ◈ সিঙ্গাপুরে জিমন্যাস্টিকসে বাংলাদেশের স্বর্ণ জয় ◈ যে কারণে খেলা ছেড়ে স্ত্রীকে নিয়ে পালালেন ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট! ◈ সাকিবের জাতীয় দলে ফেরা প্রসঙ্গে যা বললেন নতুন বিসিবি সভাপতি ◈ মৌলিক সংস্কার প্রস্তাবে বিএনপির সঙ্গে জামায়াত ও এনসিপির মতের অমিল কেন? ◈ পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে তাণ্ডব: ব্যাংক লুট, ভবন-থানায় আগুন, এডিসিকে হত্যা (ভিডিও) ◈ জীবিত ব্যক্তিকে জুলাই আন্দোলনে 'শহীদ' দেখিয়ে হত্যা মামলা!

প্রকাশিত : ৩০ মে, ২০২৫, ১০:১৯ দুপুর
আপডেট : ৩১ মে, ২০২৫, ১২:২৪ দুপুর

প্রতিবেদক : মহসিন কবির

রাজনৈতিক দলগুলো যে কারণে জুনের মধ্যে নির্বাচন করতে রাজি নয়

মহসীন কবির: রাজনৈতিক দলগুলো ডিসেম্বরে নির্বাচন চাচ্ছে। সরকার বলছে জুনের একদিন বেশি থাকবে। জুনের মধ্যে নির্বাচন দিবে। এ দোলাচলে নির্বাচন নিয়ে কথার বাহাস শোনা যাচ্ছে। 

রাজনৈতিক নেতারা বলছেন, ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে ভালো হয়। প্রাকৃতিক দিক দিয়ে আবহাওয়া ভালো থাকে। শিক্ষার্ক্ষীদের পরীক্ষা শেষ হয়। শীত শীত থাকে। এসময় সহজেই মুভ করা যায়। বিএনপির নেতারা ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে। 

লেখক ও বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, জুলাই গণ-অভ্যত্থানের মাধ্যমে গঠিত এ সরকার যদি কিছু সংস্কার করতে না পারে, তাহলে সরকারের মুখ রক্ষা হবে না। সেকারণে সরকার হয়তো প্রয়োজনীয় কিছু সংস্কারের জন্য সময় হাতে রেখে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলছে।

কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের বয়স সাড়ে নয় মাস পার হয়েছে। এ সময়ে সংস্কার কাজ কিছুই হয়নি বলেও অভিযোগ আছে। নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সময়ও সরকার বলেনি বা রোডম্যাপ দেয়নি।

এদিকে সরকার বলছে জুনের মধ্যে নির্বাচন দিবে। বিএনপি নেতারা বলছেন, মে-জুনে এমনিতেই বর্ষা কাল, এসময় সভা সমাবেশ করা যায় ননা। এছাড়া জুন মাসে ঈদুর আজহা থাকবে। জানুয়ারি মাসে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি চলে। ফেরুয়ারি-মার্চ মাসে রোজা। এ কারণে রাজিনিতক দলগুলো ডিসেম্বরে নির্বাচন চাচ্ছে। 

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ ‘নির্বাচনকে বিলম্বিত করার জন্য কিছু অসিলা তৈরি করা হচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘যেমন একটা অসিলা হলো (আওয়ামী লীগের) বিচার শেষ করতে হবে। আমরাও তো বিচার চাই। এই আওয়ামী লীগ স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট সরকারের অধীনে, তারা আমাদের নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার জন্য কী করেনি!...এরপরও কেন প্রশ্ন আসে, আমরা তাদের বিচার চাইব না।’

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা আগেও বলেছি নির্বাচনের জন্য ডিসেম্বর মাস উপযুক্ত সময়, এখনো সেই কথার ওপরই আছি।’ এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ডিসেম্বরের পর ফেব্রুয়ারিতে রোজা চলে আসবে। এরপর বর্ষা। এসএসসি ও এইচএসসির মতো বড় পাবলিক পরীক্ষাগুলো আছে। সে জন্য ওই সময়টা নির্বাচন আয়োজনের জন্য উপযুক্ত সময় নয়।

তাবে নির্বাচনের সময়ের ব্যাপারে চাপ বাড়ানোর কৌশল নিয়ে এগোতে গিয়ে রাজনীতিতে বিএনপি একা হয়ে পড়বে কিনা, এই প্রশ্নেও আলোচনা রয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। কারণ বিএনপির এই অবস্থানের সঙ্গে নেই বর্তমানে রাজনীতিতে প্রভাবশালী অন্য দলগুলো, অর্থাৎ জুলাই গণ-অভ্যত্থানের ছাত্র নেতৃত্বের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপি ও জামায়াতে ইসলামী।

নির্বাচন নিয়ে সরকারের অবস্থানের প্রতি এই দলগুলোর সমর্থন রয়েছে বলা যায়। তবে বিএনপিও অভিযোগ করছে যে, অন্তর্বর্তী সরকার বিএনপি এবং সেনাবাহিনীকে প্রতিপক্ষ বানানোর চেষ্টা করছে। যদিও সরকারের একাধিক উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বললে তারা এ ধরনের অভিযোগ মানতে রাজি নন।

রাজনীতিকদের অনেকে এবং বিশ্লেষকেরা বলছেন, আপাতত উত্তেজনা থেমেছে। কিন্তু এই সরকারের অংশীজনদের মধ্যে বড় দুই শক্তি বিএনপি ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে সরকারের দূরত্ব কমেনি; রয়ে গেছে অস্বস্তি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকে বলছেন, বিএনপি ইতোমধ্যেই ক্ষমতার দ্বারপ্রান্তে––এমন চিন্তা থেকে রাজধানী থেকে একেবারে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত দলটির নেতা-কর্মীদের অনেকে আধিপত্য বিস্তার, দখল, চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়েছেন।

বুধবার ঢাকায় বিএনপির আয়াজনে তারুণ্যের সমাবেশে বিএনপি নেতা তারেক রহমানও বলেছেন, "আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মনে হয় এরই ভেতরে টালবাহানা শুরু হয়েছে বা চলছে। কথিত অল্প সংস্কার আর বেশি সংস্কারের অভিনব শর্তের আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে আগামী জাতীয় নির্বাচনের ভবিষ্যত"।

তিনি এ-ও বলেন, "জনগণ বিশ্বাস করতে শুরু করেছে সংস্কার নিয়ে সময়ক্ষেপণের আড়ালে অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরে ও বাইরে কারও কারও মনে হয় ভিন্ন উদ্দেশ্য রয়েছে"।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়