অপূর্ব চৌধুরী: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ছাত্রলীগের হামলায় আহত হয়েছেন চারজন সাংবাদিক। ছাত্রলীগের মারামারির ভিডিও ধারণ করাকে কেন্দ্র করে সাংবাদিকদের উপর এই হামলা হয় বলে জানা গেছে। রবিবার (৪ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ও ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে দুই ধাপে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বেই হামলা হয়েছে বলে সাংবাদিকরা অভিযোগ করেন। তবে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতির দাবি মাথা ঠিক না থাকায় এমনটি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এদিন দুপুর ২ টা ৪০ মিনিটে বিএনপি নেতা ইশরাকের গাড়ি বহরে হামলা করে জবি ছাত্রলীগকর্মীরা। এসময় দৈনিক নয়া শতাব্দীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক তোহা ইসলাম ভিডিও করার সময় বিষয়টি দেখে তার মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায় ছাত্রলীগকর্মীরা।
পরবর্তীতে ক্যাম্পাসের অন্যান্য সাংবাদিকরা হামলাকারীকে চিহ্নিত করতে গেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি মো. ইব্রাহীম ফরাজী ও সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইনের নেতৃত্বে আবারো সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলা করে সভাপতি গ্রুপের কর্মী সুজন দাশ অর্ক এবং তুর্য ও চিঠি কমিটির কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সহ-সম্পাদক রায়হান কবির।
এসময় চারজন সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়। তারা হলেন দৈনিক নয়া শতাব্দীর তোহা ইসলাম, সমকালের ইমরান হুসাইন, ঢাকা পোস্টের মাহাতাব লিমন ও ভোরের কাগজের রকি আহমেদ। পরবর্তীতে তাদেরকে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।
হামলার স্বীকার নয়া শতাব্দীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক তোহা ইসলাম বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গেলে প্রথমে আমার উপর অর্তকিত হামলা করেছে ছাত্রলীগ। কেন আমি ছবি ও ভিডিও করতে গেছি তা নিয়ে জেরা করতে করতেই আমার উপর হামলা করেছে। ক্যাম্পাসে যদি আমরাই নিরাপদ না থাকি সাধারণ শিক্ষার্থীরা কিভাবে নিরাপদ থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে এ হামলার বিচার চাই।
হামলার শিকার সমকাল প্রতিবেদক ইমরান হুসাইন বলেন, দুই পক্ষের সংঘর্ষকালীন সময়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে ঘটনাস্থলে গেলে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আমাদের উপর হামলা চালান। কিল ঘুষি ও লাথি মারেন। মারার সময় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, সাংবাদিকরা সব বিএনপি জামায়তের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে এসেছে।
হামলার ঘটনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহসান জোবায়ের বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনা দুঃখজনক। আমাদের চারজন সাংবাদিক আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আমরা জানিয়েছি। খুব দ্রুতই জড়িতদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিবেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।
তবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি মো. ইব্রাহীম ফরাজী বলেন, ছাত্রদলের হামলার পর আমাদের দুই নেতাকর্মী আহত হয়। তাই মাথা ঠিক ছিল না।
প্রতিনিধি/এসএ
আপনার মতামত লিখুন :