এম. মোশাররফ হোসাইন: দেশে আবারও ৪২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। গত ১০ মে আমদানি ব্যয় হিসেবে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ২ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করায় রিজার্ভ কমে ৪১ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসছিল। এরপর থেকে সেটি আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, আকুসহ আরও কিছু অর্থ লেনদেনের ছয় কার্য দিবস পরে রিজার্ভে যুক্ত হয়েছে ২ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলার। এতে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৪২ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার।
রিজার্ভের উল্লেখিত পরিমাণ অর্থ দিয়ে বর্তমানে চলমান আমদানির ধারা অনুযায়ী ছয় মাসের ব্যয় মেটানো সম্ভব। এর আগে চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪৪ বিলিয়ন ডলার। আর দীর্ঘ সময় ঊর্ধ্বমুখী ধারা আব্যাহত থাকায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০২১ সালের আগস্টে ৪৮ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছিল।
এদিকে চলতি মে মাসের প্রথম ১২ দিনে দেশে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স এসেছে ৮৩ কোটি ৬১ লাখ ডলার। দৈনিক গড় প্রবাহ বিবেচনায় প্রবাসী আয়ের এ ধারা আগের মাস এপ্রিলের চেয়ে বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য বলছে, ১২ মে পর্যন্ত গড় হিসাবে দৈনিক রেমিটেন্স এসেছে ৬৯ দশমিক ৬৮ মিলিয়ন ডলার। গত এপ্রিলে দৈনিক গড় রেমিটেন্স প্রবাহ ছিল ৬৬ দশমিক ৯৮ মিলিয়ন ডলার।
এদিকে টাকার বিপরীতে ডলারের দামের ঊর্ধ্বমুখী ধারা এবং চাহিদার তুলনায় সরবরাহ সংকটের মধ্যে সবশেষ আকুর দায় পরিশোধের পর রিজার্ভ ৪১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে আসার দিনই টাকার মান ২৫ পয়সা কমানো হয়। এরপর গত সোমবার (১৬ মে) টাকার মান আরও ৮০ পয়সা কমিয়ে প্রতি ডলারের বিপরীতে আন্তঃব্যাংকে বিনিময় হার ৮৭ টাকা ৫০ পয়সায় নির্ধারণ করা হয়।
আন্ত:ব্যাংক লেনদেনে ডলারের দাম নির্ধারণ করা হলেও খোলাবাজারে ডলারের দামে নৈরাজ্য বিরাজ করছিল। এ অবস্থায় গত ১৭ মে ডলারের বিপরিতে টাকার দাম সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ১০২-এ গিয়ে ঠেকে। একইসঙ্গে বাজারে ডলারের সংকটও দেখা দেয়।
তবে বাংলাদেশের ব্যাংকের গঠিত ৪টি মনিটরিং টিমের কঠোর নজরদারির কারনে খোলাবাজারে ডলারের দাম কিছুটা কমেছে। বর্তমানে খোলাবাজারে ডলার ৯৭ থেকে ৯৮ টাকায় বিক্রি হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। তবে খোলাবাজারে এখনো বাংলাদেশ ব্যাংকের বেঁধে দেয়া দামের তুলনায় অনেক বেশি দামে ডলার কেনা-বেচা চলছে।
ডলারের দামের বিষয়ে রাজধানীর ন্যাশনাল এক্সচেঞ্জের কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন বলেন, ডলারের দাম কিছুটা কমেছে। দুদিন আগে প্রতি ডলারের দাম ১০১ টাকা হয়েছিলো। আজ আমরা ডলার ৯৬ টাকা থেকে ৯৬ টাকা ৫০ পয়সা করে কিনেছি। আর বিক্রি করেছি ৯৭ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৯৭ টাকা ৬০ পয়সা করে।