শিরোনাম
◈ জুলাই অভ্যুত্থানের সেই ঐক্য কোথায়? ◈ ব্রিটিশদের ‘নাকানিচুবানি’ দিতে ইরানের এক দশকের ‘ছায়া যুদ্ধ’: যেভাবে চলছে যুক্তরাজ্যের ভেতরে গোপন তৎপরতা ◈ চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার জাকির হোসেন বরখাস্ত, আরও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা ◈ এবার অঝোরে কাঁদলেন মিসাইল ম্যান কিম জং উন (ভিডিও) ◈ জুলাই নিয়ে ‘আপত্তিকর’ ফেসবুক পোস্ট: পুলিশের বিরুদ্ধে ছাত্রদের অবরোধ-বিক্ষোভ ◈ নতুন উচ্চতায় রেমিট্যান্স: ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসী আয়ের সর্বোচ্চ প্রবাহ ◈ ডলারের দরপতনে রেকর্ড, ১৯৭৩ সালের পর সবচেয়ে বড় পতনে বিশ্ববাজারে আস্থার সংকট ◈ “৭১-এর মুক্তিযোদ্ধাদের মতোই চব্বিশের যোদ্ধাদেরও জাতি ভুলবে না” — তারেক রহমান ◈ গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান খালেদা জিয়ার ◈ শ্রীলঙ্কার বিরু‌দ্ধে বুধবার  সি‌রি‌জের প্রথম ওয়ানডে ম‌্যা‌চে  মু‌খোমু‌খি  বাংলাদেশ

প্রকাশিত : ১৬ মে, ২০২২, ০৪:৩৯ দুপুর
আপডেট : ২৮ জুন, ২০২২, ১০:৫১ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ডলারের বিপরীতে টাকার বড়ধরনের পতন

টাকার বড়ধরনের পতন

এম. মোশাররফ হোসাইন: মা‌র্কিন ডলারের ব্যাপক চা‌হিদা বে‌ড়ে‌ছে। কিন্তু সেই হা‌রে বাজা‌রে সরবরাহ না বাড়ায় নিয়ন্ত্রণহীনভা‌বে বাড়ছে ডলারের দাম। বিক্রি করেও ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে পারছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এদিকে এক দিনেই ডলারের বিপরীতে টাকার মান ক‌মে গে‌ছে ৮০ পয়সা। আর গত ২০ দিনের ব্যবধা‌নে তিন দফায় ডলারের বিপরীতে টাকার দরপতন হলো এক টাকা ৩০ পয়সা।

সোমবার (১৬ মে) আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা। এক‌দিন আ‌গেও এক ডলা‌রে লেগেছিল ৮৬ টাকা ৭০ পয়সা। আর গত ১০ মে ছিল ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা এবং ২৭ এপ্রিল ছিল ৮৬ টাকা ২০ পয়সা।ব্যাংকগুলো নগদ ডলার বিক্রি করছে এর চেয়ে পাঁচ থেকে ৭ টাকা বেশি দরে। ব্যাংকের বাইরে খোলাবাজার বা কার্ব মার্কেটে ডলার কেনাবেচা হচ্ছে ৯২ থেকে ৯৭ টাকায়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে একদিকে ব্যাপক হারে আমদানির চাপ বেড়েছে। ফলে আমদানির দায় পরিশোধে বাড়তি ডলার লাগছে। কিন্তু সেই তুলনায় রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়েনি। ফলে ব্যাংক ব্যবস্থা ও খোলাবাজারে মার্কিন ডলারের ওপর চাপ বাড়ছে। এতে করে বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহে ঘাটতি দেখা দি‌য়ে‌ছে। যার কারণে টাকার বিপরীতে বাড়ছে ডলারের দাম। বাজার স্থিতিশীল রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকগুলোর চাহিদার বিপরীতে ডলার বিক্রি করছে। এতে কমছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। কিন্তু তারপরও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছে না ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের রপ্তানি আয়ের তুলনায় আমদানি বেশি, এ কারণে ডলারের উপর চাপ প‌ড়ে‌ছে। বাজার বিবেচনা করে ডলারের রেট ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, রপ্তানি বাড়ছে, ঈদের সময় রেমিট্যান্স ২০০ মিলিয়ন এসেছে। এর স‌ঙ্গে ব্যাংকগুলোর চাহিদা অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার সরবরাহ করছে। এখন পর্যন্ত ব্যাংকগু‌লোর চা‌হিদার বিপরী‌তে ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিক্রি করা হয়েছে। যখনই প্রয়োজন হচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার সরবরাহ করছে।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের (এমটিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, চাহিদা বাড়ায় ডলারের দাম বাড়ছে। অনেক বিদেশি ব্যাংক ডলার ৯৪/৯৫ টাকায় কিনছে। এতেই বোঝা যাচ্ছে বাজারের কী অবস্থা। এখন দর ঠিক রাখতে হলে বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া ভালো। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংক এক দাম বেঁধে দিচ্ছে। ব্যাংকগুলো আরেক দামে কেনাবেচা করছে। লাভ কী তাহলে? এতে যেকোনো সময় বাজার অস্থির হয়ে যেতে পারে। বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই ডলারের দাম বাজারের ওপর নির্ভয় করে। আমাদেরও ছেড়ে দেওয়া উচিত।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২০ সালের জুলাই থেকে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু এরপর থেকে বড় ধরনের আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে গিয়ে ডলার সংকট শুরু হয়। যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে। 

২০২১ সালের আগস্টের শুরুতেও আন্তঃব্যাংকে প্রতি ডলারের মূল্য একই ছিল। ৩ আগস্ট থেকে দু'এক পয়সা করে বাড়তে বাড়তে গত বছরের ২২ আগস্ট প্রথমবারের মতাে ৮৫ টাকা ছাড়ায়। চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি এটি বেড়ে ৮৬ টাকায় পৌঁছে। এরপর ২২ মার্চ পর্যন্ত এ দরেই স্থির ছিল। পরে গত ২৩ মার্চ আন্তঃব্যাংকে আরও ২০ পয়সা বেড়ে ৮৬ টাকা ২০ পয়সায় দাঁড়ায়। ২৭ এ‌প্রিল আ‌রও ২৫ পয়সা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা। ১০ মে বাড়ে আরও ২৫ পয়সা। আজ ১৬ মে বাড়‌লে ৮০ পয়সা। ফলে এখন আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম গিয়ে ঠেকেছে ৮৭ টাকা ৫০ পয়সায়। যা এ যাবতকালের সর্বোচ্চ। অর্থাৎ গত ৯ মাসের ব্যবধানে প্রতি ডলারে দর বেড়েছে দুই টাকা ৭০ পয়সা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে রপ্তানি বেড়েছে ৩২ দশমিক ৯২ শতাংশ। অন্যদিকে আমদানি বেড়েছে ৪৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আলোচিত ৯ মাসে রপ্তানি থেকে দেশ আয় করেছে তিন হাজার ৬৬২ কোটি ডলার। পণ্য আমদানির পেছনে ব্যয় হয়েছে ৬ হাজার ১৫২ কোটি ডলার। আমদানি ব্যয় থেকে রপ্তানি আয় বাদ দিলে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়ায় দুই হাজার ৪৯০ কোটি ডলার। ঢাকা পোস্ট

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়